আলমগীর মাহমুদ
জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরীর ছোট ভাই কফিল উদ্দিন চৌধুরী গতকাল দুপুর একটায় ইন্তেকাল করেন। আজ জানাজা।
যদি খবরটা এমন হতো শাহ আমিনের চাচার/জ্যেঠার ইন্তেকাল তাও লোকজন চিনতো।
যদি খবর হতো উখিয়া কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শাহ আলমের মামার ইন্তেকাল তাও একই।
এই পরিবারের ডালপালা, শাখা, প্রশাখা সবই জননন্দিত।কারন চাষাগুনে। কর্ষিত ভূমিতে মই নিড়ানীতে বীজ বপন করে গেছেন নিজ প্রজ্ঞায় তাঁদের কারনে ডালপালা থেকে শিকড়ের রসও বনেছে ঔষধি আজ।
শাখাপ্রশাখার পরিচয়ে যদি হয় কফিল উদ্দিন চৌধুরীর বিদায় সবটুকুন পাওনার কিছু অপূর্ণাঙ্গ রয়ে যায় যায়,
মনের অনমনীয় মনোবেদনায় কলম হাতে নেয়া।
**জালিয়া পালং
উখিয়া উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের একটি এই জালিয়াপালং।নৈসর্গিক সৌন্দর্যের নিসর্গ। ইনানী পাথুরে বীচ,কানা রাজার গুহা,সোনার পাড়া, পাটুয়ারটেক নান্দনিক বীচ, পান, পানের বরজ,সুপারি নারিকেলের বাগান, পাঁচতারকা মানের রয়েল টিউলিপ হোটেল, রেজুর মোহনা।
উত্তর দক্ষিণ লম্বালম্বি পশ্চিমে সাগর,চর,ক্ষেত, পৃর্বে পাহাড়ের প্রাচীরে প্রাচীরে দক্ষিনে টেকনাফ বাহারছড়ার সীমানা। পূর্বে রাজাপালং, রত্নাপালং, হলদিয়াপালং ইউনিয়নের সীমানা পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর এই চৌহদ্দির স্থিত স্থানটি জলিয়াপালং ইউনিয়ন।
মেরিন ড্রাইভ রোড, / এল, জি,ই,ডি র রোড তার বুক চিরে বয়ে গেছে টেকনাফ। এই বিন্যস্ত ইউনিয়নটির এই বিন্যাসের আংশীদারীত্বের কারুশিল্পীরাই মরহুম কফিলউদ্দিন চৌধুরীর পূর্বপুরুষ রশীদমিয়া,জমির মিয়া,হাবিবুর রহমান,তাঁদের পিতা আবদুল নবী মাতব্বর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ চৌধুরী থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী পর্যন্ত বিস্তৃত।
**রশীদ মিয়া
পূর্বে জালিয়াপালং, রত্নাপালং,হলদিয়া পালং তিন ইউনিয়ন মিলে ছিল জালিয়া পালং ইউনিয়ন। ১৯৫৪ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর জালিয়া পালং এর প্রেসিডেন্ট ও চ্যায়ারম্যান।স্কুল,মাদ্রাসা,রাস্তা,মসজিদ প্রতিষ্ঠাতা।জালিয়াপালং সংস্কারক।
**জমির মিয়া (মরহুমের পিতা)
১/দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ গ্রহনকারী এককালের কোয়াটার মাষ্টার ব্যাটেলিয়ন হাবিলদার মেজর জমির আহমদ চৌধুরী।
২/১৯৪১ সালে চকরিয়া হাইস্কুল থেকে মেট্রিক পাশ করেন।
৩/জাতীয়তাবাদীদল উখিয়া উপজেলা প্রতিষ্ঠা সভাপতি। মৃত্যুরদিনেও ছিলেন সভাপতি।
৪/যোগাযোগ ব্যবস্থায় প্রভূত উন্নয়ন। উন্নয়নে আন্দোলন সংগ্রাম, স্কুল,মাদ্রাসা মসজিদ প্রতিষ্ঠা।
পর্যটকবান্ধব জালিয়া পালং এর সিংহভাগেরই রূপায়নে অবদান।
উখিয়া উপজেলার প্রথম বসতি এই জালিয়াপালং থেকে শুরু বলে অনেকেই মত রেখেছেন যেহেতু নদী, পানি পথেই ছিল যাতায়তের মাধ্যম।
আরাকানে যাবার হাঁটা পথটি ছিল এই চরে চরে।মহাকবি আলাওল, তাঁর বাবা এই পথ মাড়িয়েছেন।বঙ্গবন্ধু মুজিবের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় দু:খের দিন কাটিয়েছেন এই ইউনিয়নের মাটিতে।
মরহুম কপিল উদ্দিন চৌধুরীর পূর্বপুরুষ থেকে আজ অবদি জালিয়াপালং গড়ার অংশীদার।
দাদা, বড়বাপ,বাপ,ভাইয়ের সাথে সাথে উনার শ্রমও ঘামের ফোঁটা হয়ে মিশে আছে জালিয়াপালং এর সবুজে। নারিকেল, সুপারি গাছের চূঁড়ায় চূঁড়ায়…আপনার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ..ভালবাসা…!
লেখক :- আলমগীর মাহমুদ
বিভাগীয় প্রধান (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ) উখিয়া কলেজ, কক্সবাজার।
ইমেইল- [email protected]
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-