আশ্রয়দাতাদের জীবন দূর্দশায়: ৩৪ ক্যাম্পে ১৫ হাজারের মত রোহিঙ্গা চাকুরীজীবি!

রফিকুল ইসলাম,উখিয়া •


(১)জাতিসংঘ ও বিদেশী বিভিন্ন এনজিওর অর্থায়নে ওদের নীতি আদর্শ বাস্তবায়ন করছে স্হানীয় বাংলাদেশী এনজিওগুলো। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা আশ্রয় ক্যাম্পে এনজিওগুলো চাকরির নামে রোহিঙ্গাদের আর্থিক ভাবে শক্তিশালী করে স্হানীয় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের সাথে মুখোমুখী করে তুলছে।

(২)দেশ ও স্হানীয় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের স্বার্থ বিরোধী যে কোন কাজ করতেও স্হানীয় ও বিদেশী এনজিওগুলো দ্বিধাবোধ করছে না। এসব এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে সরকার ও রাস্ট্র বিরোধী বিভিন্ন কর্মকান্ড চালানোর অভিযোগ শুরু থেকেই। মাঝেমধ্যে নানা বির্তকিত কর্মকান্ডের অভিযোগে কয়েক দফায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ৪১ টির মত এনজিওর কার্যক্রম প্রত্যাহার করে নেয়ার কথাও শুনা যায়।

(৩)একদিকে সবকিছু ফ্রি পেয়েও মোটা টাকার বেতনে চাকরি করছে অন্তত ১৫ হাজার রোহিঙ্গা। পক্ষান্তরে স্থানীয়দের দৈনন্দিন জীবন জীবিকা চলছে চরম দূর্বিসহের মধ্য দিয়ে। উদ্বাস্তু আইনানুযায়ী আশ্রিতা রোহিঙ্গারা ও কথিত সেবা সংস্থা গুলো এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রচলিত ও আন্তর্জাতিক কোন রীতি নীতির তোয়াক্কা করছে না বলে অভিযোগ উঠছে। এতে ক্রমান্বয়ে স্হানীয় লোকজনের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা দানা বাঁধছে বলে প্রকাশ পাচ্ছে।

(৪)সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও সংলগ্ন এলাকার অনুসন্ধানে এমনি কিছু তথ্য ফুটে উঠেছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দেখা গেছে, স্হানীয় এনজিও গুলোর পাশাপাশি জাতিসংঘের দুটো সংস্থা ও বিদেশী এনজিও গুলোতে আইন লংঘন করে শত শত সুবিধা ভোগী রোহিঙ্গা বিভিন্ন পদে মাসিক হারে উল্লেখযোগ্য বেতনের চাকরি করে যাচ্ছে। খোদ সরকারের নিয়ন্ত্রনাধীন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মিয়ানমার রিফুউজি রিলিফ অপারেশন বা এমআরআরও এবং পপুলেশন মেনেজম্যান্ট অপারেশন বা পিএমও প্রকল্পে নিয়মিত মাসিক বেতনে নিয়োজিত আছে হাজারের মত রোহিঙ্গা। যাদের মাসিক বেতন ৯ হাজার থেকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা।

৩৫-৬০ হাজর টাকা বেতনে রোহিঙ্গারা চাকরি করছে জাতিসংঘের সম্মিলিত সাইড ম্যানেজমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্ট- এসএমইপি প্রকল্পে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা, আন্তজার্তিক অভিবাসন সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য সংস্থা, শিশু তহবিলে সমম্বিত ভাবে দুই হাজারের মত রোহিঙ্গা ভলান্টিয়ার সহ নানা পদে চাকরি করছে। টিম লিডার সহ উচ্চ বেতনে চাকরি করাচ্ছে বিদেশী এনজিও এমএসএফ (হল্যান্ড),এমএসএফ (ফ্রান্স), এসিডিটি, এসিএফ, তুরস্কের একাধিক সংস্থা, ড্যানিশ রিফিউজি কাউন্সিল বা ডিআরসি, কারিতাস,কেয়ার, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল, সলিডারিটিজ ইন্টারন্যাশনাল, রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল, এডিআরএ, আইআরসি, টিএআই,আরটিএম,ইপসা,রিক,ব্রাক, কোডেক, কোস্ট ট্রাস্ট, মুক্তি সহ প্রায় সব দেশী, বিদেশী এনজিওতে অন্তত ১৫ হাজারের মত রোহিঙ্গা অবৈধভাবে চাকরি করছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।

(৫) তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,২০১৬ ও ২০১৭ সালে আসা রোহিঙ্গাদের অধিকাংশ বিভিন্ন দেশী এনজিওতে ৭-২০ হাজার টাকার মধ্যে চাকরি করে। তবে ব্যতিক্রমও রয়েছে। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও বিদেশী এনজিও গুলোতে ২৫- ৫৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরিরতদের অধিকাংশ উখিয়ার কুতুপালং, টেকনাফের নয়াপাড়া পুরাতন নিবন্ধিত ক্যাম্পের বা বিভিন্ন স্হানে ছড়িয়ে থাকা পুরনো রোহিঙ্গা বলে খবর পাওয়া গেছে। এসব রোহিঙ্গাদের মাসিক বেতনের একটি অংশ নিয়োগে মধ্যস্হতাকারী বসদের ও অপর একটি অংশ রোহিঙ্গাদের কয়েকটি সংগঠনকে মাসিক হারে নিয়মিত চাঁদা দিতে হয় বলে রোহিঙ্গা সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।