উখিয়ায় ব্যতিক্রমী আয়োজনে তারুণ্য সোসাইটির ঈদ বস্ত্র বিতরণ

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি- গত বছরের ন্যায় অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে ঈদের অনাবিল আনন্দ ও খুশী বিলিয়ে দিতে কক্সবাজারের উখিয়ার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তারুণ্য সোসাইটির উদ্যোগে  ৯ম প্রোগ্রামে বিভিন্ন বয়সী মানুষের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে।

অসহায় মানুষের একটু খানি হাসি অনেক খানি দামি” এই স্লোগানকে সামনে রেখে আজ ২১ই আগষ্ট মঙ্গলবার সকালে উখিয়া উপজেলার কোটবাজারে এন.আলম শপিং কমপ্লেক্স এর দ্বিতীয় তলায় তারুণ্য সোসাইটি অর্ধ শতাধিক অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত বিভিন্ন বয়সের মানুষের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ আয়োজন করে। ধনী গরীব সকল ভেদাভেদ ভুলে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনায় অসহায় মানুষ গুলার মাঝে নতুন কাপড় পাওয়ার আনন্দে ব্যস্থতা ছিল দেখার মতো। সবার হাতে সমান তালে বস্ত্রের প্যাকেট দেয় তারুণ্য সোসাইটির সদস্যরা। প্রতিবন্ধি শিশু পাশাপাশি বৃদ্ধরাও ছিল খুব খুশি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তারুণ্য সোসাইটির উপদেষ্টা বাবু মিলন বড়ুয়া,সংগঠনের পরিচালক শরিফ মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবরার সাওন রোস্তমের পরিচালনায় ঈদ বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে কোরআন তেলওয়াত করেন অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ রুবেল। ঈদ বস্ত্র বিতরন এর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল তারুণ্য সোসাইটির একঝাঁক তরুণ-তরুণী।
অনুষ্ঠানটি সফল করতে সহযোগিতা করেন সংগঠনের সভাপতি সাংগঠনিক সম্পাদক শামস আলম মানিক, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক বাবু মিশুক বড়ুয়া,তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক জসিম খান,সদস্য মহিউদ্দিন সুমন, আবিদ বিন ইসলাম,আবদুল্লাহ আল ফারুক,মোঃ রহিম,মোঃ আরিফুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানটি সফল করতে সহযোগিতা করেন বিদেশে অধ্যায়নরত সংগঠনের পরিচালনা কমিঠির নুরুল আমিন,আবু রাশেল,হাসান মাহমুদ হানিফ প্রমুখ।

এমসময় সংগঠনের উপদেষ্টা বাবু মিলন বড়ুয়া বলেন,আমাদের সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে আজ আপনাদের মাঝে ঈদের খুশী ভাগাভাগি করে নিতে এই ঈদের পোশাক আপনাদেরকে দেয়া হচ্ছে। আপনাদের মাঝে এসে ভালো লাগছে। ঈদে আমরা ও আমাদের পরিবার নতুন কাপড় পড়বো আর আপনারা পড়তে পারবেন না , সে কথা চিন্তা করে আমরা আমাদের ছেলেরা তাদের বেতনের টাকা দিয়ে আপনাদের জন্য নতুন কাপড় কিনেছে। যাতে করে আপনারাও নতুন কাপড় পড়ে ঈদ উদযাপন করতে পারেন। মানুষ যদি মানুষের পাশে না দাঁড়ায় সে মানুষ না। আমার সন্তান ও পরিবার ঈদে নতুন কাপড় পড়বে আর এসব অসহায় মানুষ ঈদে নতুন কাপড় পড়বে না এটা হবে না। আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত।

এসময় তারুণ্য সোসাইটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল আজিজ বলেন, এই সমাজটা আমাদের। এই সমাজ পরিবর্তনে তরুণ্য এগিয়ে আসতে হবে। আমরা মানুষের মাঝে কোন ভেদাভেদ চাই না। সকলেই সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামোর অব্যাবস্থাপনার কারনে অসহায় ছিন্নমূল মানুষের উদ্ভব। আমরা আশা করি তরুণ সমাজ এগিয়ে এসে ব্যস্থতার মাঝে থেকেও তাঁদের জন্য কিছু করার মানসিক অবস্থা তৈরি করতে পেরেছে। আর ধনী গরিব সকলের জন্যই ঈদ সমান। সুবিধা বঞ্চিত মানুষের ঈদ আরও রঙ্গিন করতে তারুণ্য সোসাইটি এই আয়োজন করে থাকে। এছাড়াও বিদেশের তারুণ্য সোসাইটির পরিচালনা কমিঠির সদস্যরা সহযোগিতা করেছেন। সকলকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে সমাজের সকল বিত্তবানদের এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা আহবান জানান তিনি।

সহ-সভাপতি রুমানা ইসলাম পুতুল বলেন, ঈদের খুশী সকলের মাঝে বিলিয়ে দিতে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।

এছাড়া অত্র সংগঠণের সাধারণ সম্পাদক আবরার শাওন রোস্তম বলেন,হয়তো অদূর ভবিষ্যতে কোন একদিন এই তারুণ্যের হাত ধরেই বদলে যাবে এই সমাজ কাঠামো। তারুণ্য সোসাইটি উদ্যোগে হত দরিদ্র পরিবারে পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। আজ সকল অসহায়দের নিয়ে কাজ করতে পেরে ভাল লাগছে। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যৎ সকলের সহযোগীতায় এধরনের কাজ অব্যাহত থাকবে।

সংগঠনের নতুন সদস্য আবিদ বিন ইসলাম ও আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, সকল মানুষের মধ্যে মানবতার শক্তি জাগ্রত করার মধ্য দিয়ে একটি সমতাভিত্তিক পৃথিবী সৃষ্টি করা সম্ভব, যেখানে মানুষ পরস্পর উৎসবের আনন্দ ও ব্যক্তি জীবনের সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করার পরিবেশ, ক্ষেত্র ও সুযোগ তৈরি করতে পারে।

সমাপনী বক্তব্যে সংগঠনের পরিচালক শরিফ মাহমুদ বলেন, গরীব পথশিশুদের নিয়ে কাজ করে যাবে এই সংগঠন। তাদের ভবিষ্যৎ যাতে সুন্দর ও সাবলীল হয় এই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন। বক্তারা আরো বলেন টাকা পয়সার অভাবে যে সব ছাত্র-ছাত্রীরা পড়ালেখা চালিয়ে যেতে অক্ষম তাদের ও দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেন। শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে সবাইকে সুশিক্ষিত হয়ে দেশ পরিচালনা করতে হবে। আর যুবসমাজকে মাদকদ্রব্য থেকে দূরে রাখার জন্য মানবতার জয়গান প্রসারিত করাই তারুণ্য সোসাইটির মূল লক্ষ্য।