আসছে কোরবানীর ঈদ

জেলায় হুন্ডি ব্যবসায়ীরা তৎপর, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

 


সাইফুল ইসলাম, কক্সবাজার জার্নাল
আসছে পবিত্র ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানীর ঈদ। এই ঈদকে সামনে রেখে কক্সবাজার জেলায় হুন্ডি ব্যবসায়ীরা তৎপর বলে জানান সংশিষ্টরা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে দেদারসে চালাচ্ছে এ হুন্ডি ব্যবসা। এর কারণে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে বলে দাবী সচেতন মহলের।

জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শত শত হুন্ডির গডফাদার প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে বিদেশ থেকে পাঠানো কোটি কোটি টাকার লেনদেন করে যাচ্ছে প্রকাশ্যে। যার ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ার আশংকা রয়েছে বলে জানান সচেতন মহল।

বিশেষ করে জেলার বিভিন্ন উপজেলার মধ্যে ভারুয়াখালী ইউনিয়ন, পিএমখালী ইউনিয়ন, খুরুশকুল ইউনিয়ন, রশিদ নগর ইউনিয়ন, ইসলামাবাদ ও জালাবাদ ইউনিয়ন, পোকখালী ইউনিয়ন, চৌফলদন্ডী ইউনিয়ন উখিয়া রতœা পালং ইউনিয়ন, রামু দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়ন, নাইক্ষ্যংছড়ি ও টেকনাফ-সহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে হুন্ডির মাধ্যমে দুবাই, সৌদি আরব, ও মধ্যপ্রাচ্যে থেকে আসা কোটি কোটি টাকা বিলি করে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এসব হুন্ডি ব্যবসায়িরা কালো টাকার কামানোর জন্য রাত দিন উপজেলার বিভিন্ন বসত বাড়ীতে টাকা পৌঁছে দিয়ে তাদের কমিশন নিয়ে ইতিমধ্যেই কোটিপতি হয়ে গেছে। যা সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন বিষয়টি তদন্ত করলে হুন্ডি ব্যবসার আসল রহস্য ও সন্ধান মিলবে বলে জানান স্থানীয়রা।

এক সময় যারা অত্যন্ত গরীব প্রকৃতির লোক ছিলো তারা আজ হুন্ডি ব্যবসা মাধ্যমে রাতারাতি কিভাবে কোটিপতি হয়েছে কিংবা তাদের এই অবৈধ টাকার আয়ের উৎস কি। তা অনুসন্ধানে সরকারি কোন নজরদারী না থাকায় এলাকার হুন্ডি গডফাদাররা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠে।

এছাড়া যারা এ হুন্ডি ব্যবসায়ীর সাতে জড়িত তারা গলাকাটা ভিসার ব্যবসা ও আদম পাচারের সাথে জড়িত রয়েছে বলে জানা যায়। বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের মধ্যে স্থানীয় জনসাধারণকে বিদেশে পাঠানোর নামে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জানা গেছে।

এমনকি তাদের হুন্ডিতে দেয়া টাকা নিতে আসা অনেকেই ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে সবকিছু হারাচ্ছে। এছাঁড়া তাদের অবৈধ কালো টাকা দিয়ে অনেকেই এলাকায় প্রভাব দেখিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এ অবৈধ টাকা দিয়ে অনেকেই করে আসছে বহুতল ঘরবাড়ি ও ভবণ নিমার্ণ। এ ব্যাপারে কয়েকটি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য জানান।

এ অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা ও আদম পাচারকারীদের বিরুদ্ধে একাধিকবার সংবাদ প্রচার হওয়ার পরেও তারা রহস্য জনক ভুমিকা পালন করায় উক্ত হুন্ডি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটরা আরও বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে এলাকায়। তারা এতই শক্তিশালী যে তারা প্রশাসনের ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় এসব ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

জেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে তাদের রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এছাড়াও বিভিন্ন হুন্ডির মাধ্যমে আসা টাকা নিয়ে আসার সময়ে ছিনতাইকারী ও পকেট মারের কবলে সবকিছু হারায়।

এভাবে কয়েকটি ইউনিয়নে সৌদি আরব, দুবাই, পাকিস্তান, কুয়েত, কাতার, মালেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীদের টাক শতাধিক হুন্ডি ব্যবসায়ীদের এজেন্টের দায়িত্বে নিয়োজিত রেখে নিজে ও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকদের টাকায় ভাড়া করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কতিপয় কিছু লোকদের উৎকোচের মাধ্যমে আতাঁত করে এই ব্যবসা চালিয়ে যেতে সহযোগীতার করছে বলে বিভিন্ন উপজেলার সচেতন মহল জানা যায়।

দুবাই, সৌদি আরব থেকে এই হুন্ডি গডফাদার প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা হুন্ডির মাধমে লেনদেন করে থাকে। যার ফলে অবৈধ পথে প্রবাসীদের টাকা চলে আসায় সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাতে হচ্ছে। বর্তমানে ঐ হুন্ডি ব্যবসায়ীরা বিলাস বহুল মার্কেট ও বাড়ী নির্মাণ করে আসছে বিভিন্ন ইউনিয়নে

জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কয়েকজন হুন্ডি ব্যবসায়ী আড়ালে এ ব্যবসা বহাল তবিয়তে চালিয়ে গেলেও প্রশাসনের ভুমিকা রহস্য জনক হওয়ায় বার বার তারা রয়েছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়ে যায়।
এসব হুন্ডি ব্যবসায়িদের গ্রেপ্তার করা না হলে তারা দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে। সময়মত তাদের লাগাম টেনে আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা প্রতি জোর দাবী জানিয়েছে বিভিন্ন ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দারা।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনর্চাজ মো. ফরিদ উদ্দীন খন্দকার জানান, হুন্ডি ব্যবসায়ীকে ধরার জন্য প্রশাসন সার্বক্ষনিক তৎপর। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ ফেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।