হিমছড়ি ঝর্ণায় দর্শনার্থীর প্রবেশ মূল্য ৪০ টাকা!

বিশেষ প্রতিবেদক :

 

কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের পাশে হিমছড়ি ঝর্ণাটি পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি স্থান। কক্সবাজার ভ্রমণে আসা পর্যটকদের পাশাপাশি এই স্পটটি স্থানীয়রা প্রতিনিয়ত ভ্রমণে যান।

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধিন হিমছড়ি ঝর্ণাটি প্রতি বছর নির্ধারিত শর্তে প্রদান করা হয় ইজারা। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু ইজারা পাওয়ার পর থেকে বন বিভাগের নামে রশিদ ছাপিয়ে হিমছড়ি ঝর্ণায় দর্শনার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ইজারাদার এনআর এন্টারপ্রাইজ।

বনবিভাগের দেয়া তথ্য মতে, ঝর্ণার প্রবেশ ফি ২০ টাকা নেয়ার কথা থাকলেও রশিদ ছাপিয়ে প্রকাশ্যে আদায় করা হচ্ছে ৪০ টাকা। এমনকি অপ্রাপ্ত বয়স্কদের কাছ থেকেও ১০ টাকার পরিবর্তে নেয়া হচ্ছে ৪০ টাকা। কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন হিমছড়ি ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রটি দরপত্রে অংশ নিয়ে কার্যাদেশ পেয়ে গত ১০ ফেব্রæয়ারী থেকে পরিচালনা শুরু করে ইজারাদার এনআর এন্টারপ্রাইজ।

সরেজমিন ঘুরে দেয়া যায়, রশিদ ছাপিয়ে প্রতিজন দর্শনার্থীর কাছ থেকে ৪০ টাকা হারে প্রবেশ ফি আদায় করা হচ্ছে।। এমনকি অপ্রাপ্ত বয়স্কদের কাছ থেকেও আদায় করেন ৪০ টাকা হারে।

রাজশাহী থেকে পারিবারিক ভ্রমণে আসা নজরুল ইসলাম জানান, ‘তাঁর পরিবারের ১৮ জন সদস্য নিয়ে গত শুক্রবার তিনি হিমছড়ি ঝর্ণা দেখতে যান। সেখানে জনপ্রতি ৪০ টাকা হারে প্রবেশ ফি আদায় করা হয়। কিন্তু তাঁর পরিবারে ৪/৫ জন শিশু থাকায় প্রবেশ ফি কমিয়ে রাখার অনুরোধ করলেও দায়িত্বরত লোকজন তা শুনেননি।’

অথচ বন বিভাগের ইজারা প্রদানের চুক্তিতে, প্রবেশ ফি সংক্রান্ত ছাপানো রশিদ বই বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অনুমোদন নেয়া, দর্শনার্থীদের সাপ্তাহিক পরিসংখ্যান রেঞ্জ কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ, কেন্দ্রের অভ্যন্তরে দোকানপাঠ, স্থায়ী-অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ, ভ্রাম্যমাণ দোকান পরিচালনা, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হতে পারে এমন কর্মকান্ড, দর্শনার্থীদের সাথে দূর্ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয় সহ ৫৯টি শর্ত উল্লেখ রয়েছে।

যা ইজারাদার মানছেন না বলে অভিযোগ করেছেন বন বিভাগের পক্ষ থেকে হিমছড়ি ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র তদারক কর্মকর্তা ও কক্সবাজার সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা সমীর রঞ্জন সাহা। তিনি বলেন, ইজারাদারকে বুঝিয়ে দেয়ার ২ দিন পরই তারা অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়টি জানতে পারি। তাদের অতিরিক্ত টাকা নেয়া বন্ধের নির্দেশ দেয়া হলেও তারা হয়তো তা শুনেননি। এখনো তারা দর্শনার্থীদের সাপ্তাহিক পরিসংখ্যান প্রতিবেদন জমা দেননি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইজারাদার এনআর এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী নুরুল আমিন সিকদার বলেন, ‘১০ ফেব্রæয়ারি থেকে হিমছড়ি ঝর্ণা আমরা পরিচালনা করছি। প্রতিজন ৪০ টাকা হারে প্রবেশ ফি নেয়ার জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে অনুমোদন রয়েছে।’

আর কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সরওয়ার আলম বলেন, ‘ প্রবেশ মূল্য ২০ টাকার বেশি নেয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি জানার পর পরই অতিরিক্ত টাকা নেয়া বন্ধে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করলে ইজারা বাতিল করা হবে।’