মাদক ও রোহিঙ্গা ঠেকাতে ৫ সংস্থা নিয়োজিত থাকার পরেও

টেকনাফে রাজস্ব আয়ের চেয়ে চোরাচালান আয় বেশি

মোঃ আশেক উল্লাহ ফারুকী :

মাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংস্থার চলমান অভিযান অব্যাহত থাকার পরও টেকনাফ সীমান্তে মাদক ঠেকানো একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। মাদক ও রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে গিয়ে প্রশাসন শেষ পর্যন্ত নাফ নদীতে জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ করে দিলেও এর ফাঁকে রহস্য জনকভাবে চলে আসছে মাদক ও রোহিঙ্গা নামক মরণ যন্ত্রনা।

আর এর জন্য খেশারত দিতে হচ্ছে সীমান্তের বসবাসরত জনগণের।

মাদকও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে টেকনাফের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অবনতিসহ নানা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। প্রশাসন এ সমস্যা টেকল দিতে গিয়ে প্রতিনিয়তই হিমশিম খাচ্ছে।

টেকনাফ সীমান্তে মাদক ঠেকাতে বিজিবি, র‌্যাব, কোষ্টগার্ড, পুলিশ ও মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর এ ৫টি সংস্থা সীমান্তে নিয়োজিত থাকার পরও ইয়াবা বা মাদক ও রোহিঙ্গা সীমান্তের জ্বাল ছিন্ন করে কিভাবে অনুপ্রবেশ এবং দেশের আভ্যন্তরে চলে আসে তা নিয়ে সীমান্তের সচেতন জনগণের মধ্যে নানা প্রশ্নের অবতারনা সৃষ্টি হচ্ছে।

এদিকে শুধু টেকনাফ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) গেল আগষ্ট মাসে স্থল ও নৌ-পথে পৃথক অভিযানে ২০ কোটি ৯২ লাখ ৪৭ হাজার ৩৫২ টাকার মাদকের শীর্ষ ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য ও চোরাইপণ্য জব্দ করেছে।

এ ঘটনায় ১২৯ মামলার বিপরীত ৩৮ জনকে আটক এবং ১ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে। বিজিবির সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

টেকনাফ ২ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক অতিরিক্ত পরিচালক মেজর শরীফুল ইসলাম জোমদ্দার জানান, চলতি বছর ১ আগষ্ট হতে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত বিজিবির অধীনস্থ ১১টি বিওপি ও ক্যাম্প সমূহ সীমান্তের বিভিন্ন চোরাই পয়েন্ট ও চেকপোষ্ট স্থল ও নৌপথের উপকূলে পৃথক চোরাচালান বিরোধী অভিযান চালিয়ে ৫০টি মামলার বিপরীত ৩৫জন ধৃত আসামী ও পলাতক ১ জনসহ ৫৭ হাজার ১১পিস এবং পরিত্যাক্ত ৫লক্ষ ৯৯ হাজার ৭৮ পিস ইয়াবা বড়ি জব্দ করা হয়।

এছাড়া বিয়ারের ৬টি মামলায় ১ হাজার ৯৫ ক্যান বিয়ারসহ ৩ জনকে আটক এবং মালিক বিহীন ৫১২ ক্যান বিয়ার, জব্দ করা হয়। মালিক বিহীন মামলায় ৩৪ বোতল বিদেশী মদ জব্দ করা হয়। চোলাইমদের ৩টি মামলায় ১ কোটি ১৮ লক্ষ ৭৭ হাজার ৯০২ টাকা মূল্যের অন্যান্য চোরাইপণ্য জব্দ করা হয়েছে।

যার সর্বমোট মূল্য ২০ কোটি ৯২ লক্ষ ৪৭ হাজার ৩৫২ টাকা।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ ২ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ আছাদুদ জামান চৌধুরী বলেন, দুর্গম সীমান্ত এবং নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও বিজিবি সীমান্ত সুরক্ষা ও চোরাচালান দমনে সদাসর্বদা সতর্কাবস্থায় অর্পিত দায়িত্ব সাদ্যমত পালন করে যাচ্ছে। চোরাচালান জাতীয় অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয় এবং এ লক্ষ্য সামনে রেখে বিজিবি সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

এদিকে টেকনাফ স্থল বন্দর (সীমান্ত বাণিজ্য) রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান টেকনাফ আগষ্ট/২০১৮ মাসে আমদানি খাতে রাজস্ব আয় করেছে ১৩ কোটি ৮৬ লাখ ১৯ হাজার টাকা। এতে টার্গেটের চেয়ে ২কোটি ৩৬ লাখ ১৯ হাজার অতিরিক্ত রাজস্ব আয় করেছে।

অপরদিকে রপ্তানীখানে আয় হয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। যাহা ৬০ লাখ ৩০ হাজার টাকা বেশি।