পর্যটকদের বিনোদনের খোরাক শিল্প ও বানিজ্য মেলা

সাইফুল ইসলাম, কক্সবাজার জার্নাল

পর্যটকদের বিনোদনের খোরাক হিসেবে সমুদ্র সৈকতসহ বিভিন পর্যটন স্পটগুলোর পাশাপাশি বাড়তি পেয়েছে শিল্প ও বানিজ্য মেলার বিভিন্ন প্রর্দশনী। দেশের পর্যটন রাজধানী নামে পরিচিত কক্সবাজার পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠেছে। একদিকে ভ্রমণ পিপাসুর অন্যতম স্থান সমুদ্র সৈকতসহ বিভিন্ন পর্যটক স্পট অন্যদিকে বাড়তি পেয়েছে শিল্প ও বানিজ্য মেলায় নানা ধরণের বিনোদন। দিনের বেলায় সৈকতের বালিয়াডিসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ঘুরাঘুরির পরে রাতের বেলায় বানিজ্য মেলায় বিনোদনে মগ্ন রয়েছে স্থানীয় ও পর্যটকেরা।

কক্সবাজার বানিজ্য মেলার ও সমুদ্র সৈকত, বিপণী কেন্দ্রসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকদের কোলাহলে হয়ে ওঠেছে। রাস্তা-ঘাটে সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক যানজট। ইতোমধ্যে সৈকতসহ বানিজ্য মেলায় বিভিন্ন প্রর্দশনী দেখার জন্য স্থানীয়দের সাথে সাথে পর্যটকের সমাগম ঘটেছে।

পাশাপাশি বানিজ্য মেলায় বিনোদনের বাড়তি উপভোগ করার জন্য রয়েছে শিশুদেরও বিনোদনের জন্য মেট্রো রেল, নৌকা দোলনা-সহ বিভিন্ন ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা। দেশি প্রতিষ্ঠানের স্টল ও প্যাভিলিয়ন মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৫০ প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে মেলায়। এছাড়াও নাগরদোলা, স্পীড বোট, রেল, পানিতে বল ভাসানো, দোলনা, নৌকা বাইচ ও যাদু প্রর্দশনী। এবারের মেলায় স্টল রয়েছে ১০০টি সাধারণ স্টল ও ২টি ফুড স্টল। মেলায় অংশ নেয়া প্যাভিলিয়ন ও সাধারণ স্টলে রেডিমেড গার্মেন্টস, হোমটেক্স, ফেব্রিকস পণ্য, হস্তশিল্পজাত, পাটজাত, গৃহস্থালি ও উপহারসামগ্রী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, তৈজসপত্র, সিরামিক, প্লাস্টক, পলিমার পণ্য, কসমেটিকস হারবাল ও প্রসাধনী সামগ্রী, খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, ইমিটেশন ও জুয়েলারি ও ফার্নিচার এসব স্টলও রয়েছে।

গতকাল দেখা গেছে, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের প্রায় ৫/৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মানুষ আর মানুষ। তারা বিভিন্নভাবে আনন্দ উল্লাসে দিন কাটাচ্ছে কেউ হাটঁছেন, কেউ চেয়ারে বসে আড্ডা দিচ্ছেন, কেউ গোসলে মত্ত, আবার কেউ বিচবাইক ও ওয়াটার বাইকে চড়ে উপভোগ করছেন। এই সৈকতটিতে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়। পাশাপাশি বানিজ্য মেলাতেও একই অবস্থা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, মহেশখালী আদিনাথ মন্দির, হিমছড়ি, ইনানী, দরিয়া নগর, সোনাদিয়া, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকাগুলো বিপুল পর্যটক সমাগমেন তুন প্রাণ ফিরে পায়। এছাড়াও কক্সবাজার শহরের বার্মিজ মার্কেট, রাখাইন পল¬ী, বৌদ্ধ মন্দির ও রামুর বৌদ্ধ মন্দিরে ও পর্যটক আনাগোনা প্রচুর।

শিল্প ও বাণিজ্য মেলা আয়োজক কমিটির কো-চেয়ারম্যান সাহেদ আলী সাহেদ বলেন, মেলায় আগত স্থানীয় ও পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রচুর পদক্ষেপ রয়েছে। নিরাপত্তার কোন ঘাটতি নেই। এ শিল্প ও বাণিজ্য মেলায় সার্বক্ষণিক নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পোশাকধারী পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে মেলাস্থলে সব ধরনের হকার ও ভিক্ষুক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফুডকোটে অনিয়ম রুখতে বাধ্যতামূলক মূল্য তালিকা রাখা হয়েছে। এছাড়া, ইভটিজিং রোধে মেলায় পুলিশের বিশেষ টিম দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া বাণিজ্যমেলায় দেশী ছাড়াও বেশি বেশি বিদেশি ক্রেতা ও পর্যটক অংশ নেয়ায় এটাই আমাদের প্রত্যাশা । এরজন্য যা কিছু করণীয় বাণিজ্য মেলা আয়োজক কমিটি সব করছে।

ঢাকা যাত্রাবাড়ি থেকে স্বস্ত্রীসহ বেড়াতে আসা মো. আবুল কালাম বলেন, গত বছর কক্সবাজারে আসা হয়নি। তাই এবার আসা হয়েছে। সমুদ্র সেকত ছাড়াও বাড়তি আনন্দের স্থান বানিজ্য মেলা পেয়ে খুব ভালো লাগছে। কানো অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার না হন সে জন্য সাদা পোশাক ধারীস পুলিশ ও বীচে ট্যুরিস্ট পুলিশ বেশ সক্রিয় রয়েছে বলে জানান প্রশাসন।

হোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, জাতীয় নির্বাচনের কারণে মৌসুমের শুরুতে পর্যটক কম আসলেও বর্তমানে হোটেল, গেস্ট হাউজ ও কটেজ পর্যটকে ভরে গেছে। আশাকরি এ অবস্থা কয়েক মাস বহাল থাকবে। এতোদিন ভ্রমণ পিপাসু লোকজন বের হতে পারেননি নির্বাচনসহ নানা কারণে। অনেকদিন ধরে হোটেল সহ বিভিন্ন ব্যবসা মন্দ ভাব দেখা দিলেও এখন মুটোমুটি আলোর প্রহর দেখছে।

নিরাপত্তার বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. খায়রজ্জামান বলেন, বাণিজ্য মেলাকে ঘিরে নিচ্ছিন্দ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুরো মেলা প্রাঙ্গনে রয়েছে সিসি ক্যামরা। এছাড়াও মেলায় ইভটিজিং সহ যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে থাকছেন পুলিশের বিশেষ টিম।