পানির নিচেই সেন্টমার্টিনের মূল আকর্ষণ, অথচ সেটাই দেখে না মানুষ

জাগো নিউজ •

#সেন্টমার্টিনেও আছে স্কুবা ডাইভিংয়ের অপার সম্ভাবনা
#পানির নিচে যাওয়ার আগ্রহ নেই সমূদ্রবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদেরও
#১০ হাজার বছরেরও বেশি পুরোনো দ্বীপ আমরা প্রতিনিয়ত নষ্ট করছি

সেন্টমার্টিন দ্বীপে আমরা কেন যাই? সহজ উত্তর, বেড়াতে, দ্বীপটির সৌন্দর্য দেখতে। কিন্তু মজার বিষয় হলো, সেন্টমার্টিনের আসল সৌন্দর্যই হচ্ছে পানির নিচে। মূলত দ্বীপটি যে উপাদান দিয়ে গঠিত, সেই মূল উপাদান তথা পানির নিচের কোরাল না দেখেই আমরা চলে আসি।

দেশের একমাত্র কোরাল দ্বীপ হচ্ছে সেন্টমার্টিন। প্রতি বছর লক্ষাধিক পর্যটক সেখানে বেড়াতে যান। অথচ এদের কত শতাংশ মানুষ সেন্টমার্টিনের আসল সৌন্দর্য উপভোগ করেন? শুধু দ্বীপের সৈকতে হেঁটে বেড়ানো আর ছেঁড়া দ্বীপে কিছু ভাসমান পাথর দেখে চলে আসা ছাড়া কিছুই দেখা হয় না তাদের। অথচ সাগর তলের অপার রহস্য উন্মোচনের চিন্তাও তাদের মাথায় আসে না। কোরাল রিফের খাঁজে খাঁজে যে লুকানো সৌন্দর্য, সেসব হয়তো জানাও নেই অধিকাংশ পর্যটকের।

টেকনাফ সদর থেকে ৩৮ থেকে ৪০ কিলোমিটার সমুদ্রের গভীরে বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের স্থলভাগ হচ্ছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ। স্থানীয়ভাবে যার নাম নারিকেল জিঞ্জিরা। প্রতি বছর নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে শুরু করে মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজারের বেশি পর্যটক যান সেন্টমার্টিনে।

দেশের একমাত্র কোরাল দ্বীপ হওয়ায় স্থানীয় এবং বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে এই দ্বীপটি। কিন্তু এখানকার পানির নিচের জীববৈচিত্র্য যে নিরাপদ পর্যটনের একটা মাধ্যম হতে পারে, সে ভাবনাই কারো মধ্যে নেই।

পানির নিচের পর্যটনের দ্বার খুলে দেবে স্কুবা ডাইভিং। এ ক্ষেত্রে যেমন সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন, তেমনি বেসরকারি খাত থেকেও উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশের সমুদ্র পরিবেশ নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠন হচ্ছে সেভ আওয়ার সি। সংগঠনটির মহাসচিব মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক বলেন, ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপে মানুষ যায় কোরাল নষ্ট করতে, দেখতে কেউ যায় না। আমরা একটা জায়গায় কেন বেড়াতে যাই, সেখানকার যে বৈশিষ্ট্য, সেটা দেখার জন্যই তো। কিন্তু সেন্টমার্টিনের যে বৈশিষ্ট্য রয়েছে, সেটাই তো কেউ দেখতে চায় না।’

পরিবেশবাদী সংগঠনের এই নেতার মতে, সেন্টমার্টিনের কোরাল মানুষ না দেখে বরং নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। জাহাজ যখন এই দ্বীপে এসে নোঙর করে তখন এর পাখা ঘূর্ণনের ফলে পানি ঘোলা হয়, ফলে পলি এবং বালুগুলো কোরালের ওপর পড়ে। তাতে কোরাল মরে যায়।

তিনি বলেন, ‘সেন্টমার্টিনে মানুষ যায় সেখানকার স্বচ্ছ পানি দেখার জন্য। নির্মল পরিবেশে সময় কাটানোর জন্য। কিন্তু নানাভাবে সেখানকার পরিবেশ এবং পানি দূষিত হচ্ছে। জাহাজের পাখা ঘোরার ফলে যেভাবে পানি ঘোলা হয়, তাতে তার আশপাশে থাকা কোরালগুলোর ওপর একটা লেয়ার তৈরি হয় এবং তাতে কোরাল মরে যায়। আবার জাহাজের নোঙর ফেলার কারণেও কোরাল নষ্ট হয়।’

তাহলে কীভাবে মানুষ সেখানে গিয়ে পর্যটন করবে? এমন প্রশ্নের জবাবে সেভ আওয়ার সি’র মহাসচিব বলেন, ‘অন্যসব দেশের কোরাল দ্বীপগুলোতে আমরা দেখি জাহাজগুলো নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে নোঙর ফেলে। সেখান থেকে ছোট নৌকায় মানুষ দ্বীপে আসে। সেখানে পর্যটন করে এরপর চলে যায়। এতে কোরালের কোনো ক্ষতি হয় না। নিরাপদ পর্যটনও হয়। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকে।’

বাংলাদেশের অন্যতম স্কুবা ডাইভার, সমুদ্র বিশেষজ্ঞ এবং সেন্টমার্টিন নিয়ে প্রায় ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন এসএম আতিকুর রহমান। সেভ আওয়ার সি’র অন্যতম পরিচালকও তিনি। জাগো নিউজকে তিনি জানিয়েছেন, সেন্টমার্টিনের দৃশ্যমান ভূমি থেকে দ্বীপের চতুর্দিকে ৩০০ থেকে ৫০০ মিটার ব্যাসার্ধজুড়ে কোরালের ব্যাপ্তি। পশ্চিম, উত্তর এবং দক্ষিণ পাশে এর ব্যাপ্তি বেশি। পূর্ব পাশে জেটি এলাকায় ব্যাপ্তি কম।

সাধারণত যেসব জাহাজ জেটি এলাকায় নোঙর করে সেখানে কোরাল নেই। কিন্তু বড় বড় জাহাজের পাখা ঘূর্ণনের ফলে পানি যেভাবে ঘোলা হয়, তাতে আশপাশের কোরালের ওপর গিয়ে সেই ঘোলাপানির লেয়ার জমা হয়। এছাড়া জাহাজের বর্জ্য ও তেল ফেলা হয় সমুদ্রের পানিতে। যেটার কারণে কোরাল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নানা উপায়ে কোরাল নষ্ট হচ্ছে সেন্টমার্টিন দ্বীপে। এসএম আতিকুর রহমান বলেন, ‘সেন্টমার্টিনে কোরাল এরিয়ায় অবাধে মাছ ধরা হয়। মাছ ধরা জালের কারণে ব্যাপকহারে কোরাল নষ্ট হচ্ছে। জেটি এলাকা ছাড়াও অন্য জায়গায় জাহাজ নোঙর করে। ছেঁড়া দ্বীপে নোঙর করে- এসব কারণে কোরাল নষ্ট হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ব্যাপকহারে মানুষ যাওয়ায় প্রচুর বর্জ্য তৈরি হয় এবং এগুলো ফেলা হয় সমুদ্রের পানিতে। যেগুলো গিয়ে ঢেকে দেয় কোরালকে। ফলে কোরালের মৃত্যু ঘটে।’

এছাড়া জাহাজগুলো থেকে নানা কেমিক্যাল, তৈলাক্ত বর্জ্য ফেলা হয় পানিতে, যেগুলোর কারণে কোরাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমনকি ভাটার সময় পানি কমে গেলে বা শুকিয়ে গেলে কিছু কোরাল দেখা যায়। সেখানে পর্যটকরা হাঁটাহাঁটি করলে, হই-হুল্লোড় করলে সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়।

এসএম আতিকুর রহমানের মতে, সেন্টমার্টিনে গিয়ে এই কোরালই দেখে না মানুষ। তার স্কুবা ডাইভিংয়ের অভিজ্ঞতা থেকে জানান, প্রতি মাসে বড়জোর ১০ থেকে ১৫ জন মানুষ স্কুবা ডাইভিং করেন সেন্টমার্টিনে।

স্কুবা ডাইভিংয়ের পরিমাণ এত কম হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে আতিকুর রহমান বলেন, ‘প্রথম কারণ হচ্ছে, অধিকাংশ মানুষই সেন্টমার্টিন যায় সকালে, ফেরে বিকেলে। এত কম সময়ে স্কুবা ডাইভিং সম্ভব নয়। যারা থাকে, তারাও খরচের কথা চিন্তা করে ডাইভিং করতে চায় না। অনেকেরই স্কুবা করার মতো স্কিল নেই। কারণ, তারা যা করতে চায়, তা খুব কম সময়ের মধ্যে। এছাড়া স্কুবা ডাইভিং সম্পর্কে ব্যাপকভাবে না জানার কারণেই মূলত মানুষ এই ট্যুরিজম সম্পর্কে আগ্রহী হয় না। অথচ পানির নিচের রঙিন মাছ, ঝিনুক, শামুক, কোরাল, সি-উইড এসব সম্পর্কে মানুষ জানলে আগ্রহী হয়ে উঠতো।’

শুধু সাধারণ মানুষ কেন, দেশে প্রায় প্রতিটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগ। এছাড়া আরও ৯টি বেসরকারি সমুদ্রবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট রয়েছে। যেগুলোর শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক সমুদ্রের নিচের জ্ঞান আহরণ করা জরুরি। কিন্তু এ বিষয়েও কোনো আগ্রহ নেই সমুদ্র বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের।

এসএম আতিকুর রহমান বলেন, ‘সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা গবেষণা করতে চায় না। তাদের আগ্রহই নেই এ বিষয়ে। সমুদ্রবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হিসেবে প্র্যাকটিক্যালি পানির নিচে নেমে যেভাবে তাদের কাজ করার কথা, সেটা তারা করছে না। অধিকাংশই পানির উপরে থেকে জানতে চায়। আগের ধারাবাহিকতাই ধরে রাখছে তারা। কারণ তাদের অগ্রজরাও এভাবে সমুদ্রের উপরে থেকে নিচের জ্ঞান আহরণ করেছে শুধু বই পড়ে। প্র্যাকটিক্যাল জ্ঞান তাদের অধিকাংশেরই নেই। অথচ বিদেশে সমুদ্রবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক পানির নিচে প্র্যাকটিক্যাল জ্ঞান আহরণ করতে হয়। তাদের পানির নিচে যাওয়ার ট্রেনিং দেয়া হয়। সে জন্য আলাদা ইনস্টিটিউটও আছে। অথচ বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের এক্ষেত্রে আগ্রহ পর্যন্ত নেই।’

বাংলাদেশের অনেক মানুষ আছেন যারা টাকা খরচ করে বিদেশে যান স্কুবা ডাইভিং করতে। অথচ সেন্টমার্টিনের মতো একটি দ্বীপ থাকার পরও কেন এখানে স্কুবা ডাইভিং করছেন না, এমন প্রশ্নের জবাবে এসএম আতিকুর রহমান বলেন, ‘থাইল্যান্ড, মালদ্বীপের মতো দেশগুলোতে স্কুবা ডাইভিংয়ের বেশ ভালো সুযোগ-সুবিধা আছে। সেখানে কোরাল সংরক্ষণ করা হয়। স্কুবা ডাইভ করতে যারা যায়, তাদের অর্জনটাও বেশি। সেসব দেশে কোরাল সংরক্ষণ করা হয়, রিস্টোরেশন করা হয়, নার্সারি করা হয়, সি-উইড কালচার করা হয়।

এ কাজগুলো তো সেন্টমার্টিনে করা হয় না। এখানে কোরাল নষ্টই হচ্ছে শুধু। কিন্তু সংরক্ষণের কোনো পদক্ষেপ নেই। অন্য দেশে পর্যটনের কারণে কিছু কোরাল নষ্ট হয় না যে তেমন নয়। কিন্তু তারা রিস্টোরেশনের মাধ্যমে সেগুলো রিকভার করে। অথচ আমাদের দেশে, সে ধরনের চিন্তা পর্যন্ত নেই। আবার দেখেন, অন্য দেশে স্কুবা ডাইভিংয়ের জন্য পুরোনো জাহাজ ডুবিয়ে রেখে কিংবা সে ধরনের কাঠামো তৈরি করে কোরাল নার্সারি তৈরি করা হয়।

যেখানে মাছের অভয়ারণ্য তৈরি হয়। স্কুবা ডাইভারদের তো পানির নিচে গিয়ে কিছু দেখতে হবে! সেন্টমার্টিনে মৃত কোরাল দেখা ছাড়া কোনো উপায় নেই। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। স্কুবা ডাইভিংয়ের মতো সম্ভাবনাময় পর্যটনের জনপ্রিয়তা বাড়াতে হলে কৃত্রিমভাবে কোরাল নার্সারি করতে হবে, মাছের অভয়ারণ্য তৈরি করতে হবে। তাহলে যেমন জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধি পাবে, তেমনি মানুষের মধ্যে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের মানসিকতাও তৈরি হবে।’

বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং পর্যটন বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের লেখক মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘১০ হাজার বছরেরও বেশি পুরোনো আমাদের এই সেন্টমার্টিন দ্বীপ। আমরা প্রতিনিয়ত দ্বীপটি যেভাবে নষ্ট করছি, তাতে কি আরেকটা দ্বীপ তৈরি করতে পারবো? অথচ এই দ্বীপ ঘিরে জলতলের (আন্ডারওয়াটার) পর্যটনের ব্যাপক সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু এ বিষয়টা নিয়ে আমাদের এখানে কোথাও কোনো কাজ হয়নি। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু মানুষ ব্যক্তিগত উদ্যোগে কাজ করছে। কিন্তু এগুলো চোখে পড়ার মতো নয়।’

এই পর্যটন ব্যক্তিত্বের মতে, বাংলাদেশে শুধু সেন্টমার্টিন দ্বীপ নয়, পুরো কোস্টাল এরিয়াজুড়ে এবং বেশকিছু নদ-নদীসহ প্রায় ৩০০ জায়গায় স্কুবা ডাইভ করা সম্ভব। কিন্তু আমরা জানিই না, এই বিষয়টা কী। এগুলো নিয়ে মানুষের মধ্যে আগ্রহই তৈরি করা হয়নি কখনো।

মোখলেসুর রহমানের মতে সেন্টমার্টিনে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক যাচ্ছে শুধু হুজুগেরবশে। তারা আসল সেন্টমার্টিনটাই দেখে না। তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘সেন্টমার্টিনের সৌন্দর্য কী মাটির ওপর থেকে দেখা সম্ভব? কোরাল রিফ তো আর উপর থেকে দেখা সম্ভব নয়। দেখতে হবে পানিতে। এ জন্য স্কুবা টেকনোলজি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। আমি সেন্টমার্টিন গিয়ে যদি কোরাল’ই না দেখি, তাহলে কী দেখে ফিরে আসলাম?’

বাংলাদেশে নিরাপদ পর্যটন নিয়ে কাজ করা এই মানুষটির লেখা বই বোর্ড সিলেবাসভুক্ত। তার পর্যটনবিষয়ক লেখা বই পড়ানো হয় দেশ-বিদেশের বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে পর্যটনবিষয়ক গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন মোখলেসুর রহমান।

তার মতে, সাধারণ মানুষ পর্যটন সেভাবে বোঝে না। সেন্টমার্টিনের প্রবালও বোঝে না। এটা তাদের দায়িত্বও নয়। এটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। রাষ্ট্রের কোথায় কী সম্পদ আছে, সেটা রাষ্ট্র জানে। এগুলোর আইনসম্মত ব্যবহার করবে রাষ্ট্র। সেই আইনসম্মত ব্যবহারের অর্থ হলো, ওই সম্পদগুলো ব্যবহার কীভাবে করতে হবে তা মানুষকে জানানো, শেখানো এবং বোঝানো।

তিনি বলেন, মানুষকে জানানো এবং শেখানোর পর জলতল পর্যটনের ব্যবস্থা যদি করতো তাহলে সেভাবেই মানুষ সেন্টমার্টিন যেত। পানির নিচে গিয়ে কোরাল রিফটা দেখতো। কোরাল এবং রিফ সম্পর্কে ধারণা পেত, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ হতো। অথচ তা না করার কারণে, কোরালের যে মহিমা পর্যটকরা তা দেখতে পাচ্ছে না। তার যে জীববৈচিত্র্য, সেখানে কী ধরনের মাছ থাকে, জলজপ্রাণী থাকে, কচ্ছপজাতীয় প্রাণী থাকে, শেওলা থাকে, কাঁকড়া থাকে- সেগুলো দেখতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, সরকার সেসব না করে সেন্টমার্টিনকে অবারিত করে দিয়েছে। সেখানে এতগুলো হোটেল তৈরি করা হলো, এতগুলো জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয়া হলো- এগুলো কীভাবে হয়? এখন বলা হচ্ছে, দিনে ১২০০’র বেশি মানুষকে যেতে দেয়া হবে না। তাহলে এই যে এত হোটেল-মোটেল, স্থাপনা, জাহাজ এগুলোর অনুমোদন দেয়া হলো, এগুলোর পেছনে কোটে কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হলো, ব্যাংক লোন নেয়া হলো- তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না? এগুলোর দায়ভার কে নেবে? অপরিকল্পিতভাবে সব চলতে দেয়া হলো কীভাবে?

সময় থাকতে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ওই সময় কি প্রশাসন ছিল না? মন্ত্রণালয় ছিল না? তখন তারা কি করেছে? এটা আমাদের জাতিগত ব্যর্থতা। এজন্য অবশ্যই দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।