পেকুয়ায় ইটভাটায় শিশুশ্রম, নির্বিকার প্রশাসন

পেকুয়া প্রতিনিধি :

কক্সবাজারের পেকুয়ার এবিএম নামের অননুমোদিত একটি ইটভাটায় অবাধে চলছে অবৈধ শিশুশ্রম। শিশুদের দিয়ে ইট তৈরির মত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করানো হলেও এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে হুমকিতে পড়েছে ইটভাটায় কর্মরত প্রায় ৫০টি শিশুর স্বাস্থ্য ও তাদের ভবিষ্যৎ।

সোমবার (৭জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার টইটং ইউনিয়নের নাপিতখালী এলাকায় অবস্থিত এ ইটভাটায় তৈরিকৃত ইট থরে থরে সাজাচ্ছে শিশুরা। কিছু শিশু ট্রলিতে ভরে পরিহবন করছে ইট। কেউবা আবার কাজ করছে ইট পোড়ানোর চুল্লিতে। যাদের বয়স ৭ থেকে ১২বছর।

স্থানীয়ররা জানান, এ ইটভাটায় ৫০ জনেরও অধিক শিশুকে কম দামের শ্রমিক হিসেবে কাজ দিয়েছে ইটভাটার মালিক আহমদ নবী। ইটভাটায় শিশুদের দিয়ে কঠোর পরিশ্রম করালেও স্থানীয় প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে।

ইটভাটায় কর্মরত কয়েকজন শ্রমিকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইটভাটায় কাজ করা শিশুদের অনেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছে। আবার অনেকে বিদ্যালয়ে যায়না। কেউ নিজে থেকেই, আবার কেউ মা বাবার সঙ্গে ইটভাটায় কাজ করতে এসেছে। কাঁচা ইট রোদে শুকানো, ইট তৈরি, ট্রলিতে করে কাঁচা ইট টেনে ভাটাস্থলে পৌঁছানো, মাটি পরিবহন করাসহ ইটভাটার সব ধরণের কাজেই নিয়োজিত রয়েছে শিশুরা।

ইটভাটায় কর্মরত শিশু শ্রমিকদের সাথে কথা বলতে চাইলে, তারা মালিক ও তাদের সর্দারের ভয়ে মুখ খুলেনি। তবে তারা চলতি মৌসুমের জন্য নির্দিষ্ট বেতনে ইটভাটায় শ্রম দিতে এসেছে বলে জানায়।

টইটং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম বলেন, দুই বছর আগে এই ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে ২৫ শিশু শ্রমিককে উদ্ধার করেছিল উপজেলা প্রশাসন। শিশুশ্রম বন্ধ করতে ইটভাটা মালিক আহমদ নবীকে কঠোরভাবে নির্দেশনা দিয়ে ইটভাটায় কর্মরত শিশুদের নিকটবর্তী বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেয়া হয়েছিল সেসময়।

এব্যাপারে এবিএম ইটভাটার মালিক আহমদ নবী বলেন, আমার ইটভাটাতে শিশুদের শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় না। শ্রমিক মা বাবার সাথে শিশুরা আমার ইটভাটায় এসে থাকে।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল করিম বলেন, শিশু শ্রমের বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে। ইটভাটা মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, শিশুশ্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কোন ইটভাটায় শিশু শ্রম ব্যবহার করা হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।