প্রেমিকের শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করলেন সাবেক প্রেমিকা

চকরিয়া প্রতিনিধি :

দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক থাকার পরেও পরিবারের অভিভাবকদের মতো না থাকায় মুন্নি আকতারকে বিয়ে করে ঘরে আনতে পারেননি সাহাব উদ্দিন। পরে বাধ্য হয়ে সাহাব উদ্দিন ওই সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটিয়ে রুনা আক্তার নামে এক নারীকে বউ করে ঘরে আনেন।

কিন্তু বিয়ে ভেঙে গেলেও প্রতিশোধের আগুন নেভেনি মুন্নির। এ ঘটনার জের ধরে সাহাবের আড়াই বছরের ফুটফুটে কন্যা শিশুকে হত্যা করে বিচ্ছেদের বদলা নিলেন সাবেক প্রেমিকা মুন্নি।

এ ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার সবুজবাহ এলাকায়।

মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) সকালে চকরিয়ার মাতামুহুরী নদীর ব্রিজের নিচ থেকে পুলিশ আড়াই বছর বয়সী ফুটফুটে শিশু আল ওয়াসিয়ার মরদেহটি উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ সাহাবের প্রেমিকা মুন্নিকে আটক করেছে।

শিশুটির পরিবার জানায়, সোমবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে বাড়ির উঠানে খেলা করছিলো আল ওয়াসিয়া। এ সময় শিশুটিকে ফুসলিয়ে বোরকা পরা এক নারী নিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুজির পরও না পেয়ে সাহাব থানাকে বিষয়টি অবহিত করেন। পরে ঘটনার প্রায় ২০ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে চকরিয়ার মাতামুহুরী নদীর ব্রিজের নিচ থেকে ওয়াসিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, মুন্নির সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের শিকার ওয়াসিয়ার বাবা সাহাবের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। এমনকি বিয়ের পরেও তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিলো। এ ঘটনার জের ধরে মুন্নি শিশুটিকে হত্যা করে ব্রিজের নিচে ফেলে দেন। প্রাথমিকভাবে তদন্তে মনে হচ্ছে, অপহরণের পর শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ব্রিজের নিচে ফেলে দিয়েছেন মুন্নি।

ওসি জানান, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে শিশুটির মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেলে হত্যাকাণ্ডের সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

আটক মুন্নিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর কক্সবাজার জেলা পুলিশের চকরিয়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার কাজী মো. মতিউল ইসলাম বলেন, মুন্নির দাবি, সাহাবের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিলো। মুন্নি শুধুই বলছেন, কারো শিশুকে তিনি অপহরণ বা হত্যা করেনি। তবে সাহাবের কারণে তার জীবন তছনছ হয়ে গেছে বলে দাবি করে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে থাকেন।

স্থানীয়রা জানান, বান্দরবানের আলীকদমের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিলো খলিলুর রহমানের কন্যা মুন্নির। কিন্তু বিয়ের দু’বছরের মাথায় তাদের মধ্যে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়।

এদিকে শিশুটির মা রুনা আক্তার সন্তান হত্যার খবর শুনে বার বার মুর্ছা যাচ্ছিলেন। বর্তমানে তিনি শয্যাশায়ী।