ফুসফুসে পানি জমলে আপনার করণীয়

ডেস্ক রিপোর্ট : ফুসফুস ঢেকে থাকে এক ধরনের পাতলা আবরণী বা প্লুরায়ে। এতেই পানি জমে। এ রোগের নাম প্লুরাল ইফিউশন। পানি জমার রয়েছে বিভিন্ন কারণ। এসবের মধ্যে রয়েছে ফুসফুসের কিছু নিজস্ব এবং ফুসফুসের সঙ্গে সম্পর্কহীন কারণ। সাধারণত ফুসফুসের টিবি, নিউমোনিয়া, ক্যানসার, ইনফার্কশন এ জাতীয় রোগে প্লুরায় পানি জমতে পারে।

ফুসফুসের রোগের বাইরে হার্ট ফেইলিউর, লিভার সিরোসিস, নেফ্রোটিক সিন্ড্রম, কিডনি ফেইলিউর, ম্যালনিউট্রিশন, পেরিকার্ডাইটিস, লিভার অ্যাবসেসÑ এসব রোগেও ফুসফুসের প্লুরায় পানি জমতে পারে। প্লুরাল ইফিউশন হলে রোগীর শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, বুকব্যথা করে, কাশির সঙ্গে হালকা কফ অথবা জ্বর থাকতে পারে। বুকের একটি এক্স-রে করালে প্লুরাল ইফিউশন সম্পর্কে ধারণা করা যায়। তবে পানির মাত্রা খুব কম হলে আল্ট্রাসনোগ্রাম বা সিটিস্ক্যান করার প্রয়োজন হয়। এর সঙ্গে সুই দিয়ে পানি বের করে এনে বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হয় পানি জমার কারণ বা ধরন। অনেক সময় এ রোগে প্লুরার বায়োপসি করারও প্রয়োজন হতে পারে।

পরীক্ষার ফলের ওপর ভিত্তি করেই চিকিৎসা শুরু করা হয়। যেমনÑ টিবি হওয়ার কারণে এমনটি হলে রোগীকে টিবির ওষুধ দিতে হয়। ক্যানসারের কারণে হলে সে অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করতে হয়।

ফুসফুসের বাইরের কোনো কারণে সমস্যা হলে সে অনুযায়ী চিকিৎসা করে প্লুরাল ইফিউশন ভালো করা সম্ভব। অনেক সময় পানি বেশি জমলে সুই দিয়ে ফুটো করে বিশেষ পদ্ধতিতে পানি বের করে নেওয়া হয়। এতে ব্যর্থ হলে ছোট্ট অপারেশনের মাধ্যমে প্লুরায় একটি টিউব ঢুকিয়ে পানি বের করে দেওয়া হয়।

দীর্ঘদিন ধরে প্লুুরায় পানি থাকার পরও যদি চিকিৎসা শুরু করা না হয়, তা হলে প্লুরায় শক্ত আবরণ পড়ে গিয়ে তা ফুসফুসে স্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে বড় অপারেশনের মাধ্যমে তা সরিয়ে ফেলতে হয়। তাই কারো এ ধরনের সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।

লেখক : চেস্ট এবং মেডিসিন বিশেষজ্ঞ,

সহকারী অধ্যাপক, চেস্ট মেডিসিন বিভাগ
জাতীয় অ্যাজমা সেন্টার, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা