ফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আসছে অনুমোদনহীন বিদেশি এনজিও ‘একটিভ জোগেন’

আজিম নিহাদ :
আবারও অপতৎপরতা চালাতে রোহিঙ্গা শিবিরে আসছে ‘একটিভ জোগেন’ নামে একটি কথিত বিদেশি এনজিও। আজ শুক্রবার ও শনিবার তারা রোহিঙ্গা শিবিরে কাজ করবে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, মিয়ানমারে নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়ে ২০১৭ সালের আগষ্টের পর থেকে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। বাংলাদেশের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে সারাবিশে^র বিভিন্ন দেশের সাহায্যকারী সংস্থা গুলো। কিন্তু মানবিক বিপর্যয়ে সাহায্যের নামে অনেক ভূঁইফোড় বিদেশি এনজিও অসৎ উদ্দেশ্যে হাসিলের জন্য সরকারের অনুমতি ছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আসে। ক্যাম্পে অবস্থান করে নানা অপতৎপরতা চালায় কথিত এনজিও গুলো। রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে কাজ করার জন্য সরকারের অনুমোদন না থাকলেও দেশের কতিপয় অসাধু চক্র অবৈধভাবে কাজ করতে প্রত্যক্ষভাবে তাদেরকে সহযোগিতা করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোহিঙ্গা সংকটের পর বাংলাদেশে আসে তুরস্ক ভিত্তিক কথিত এনজিও ‘একটিভ জোগেন’। বাংলাদেশ সরকারের কোন ধরণের অনুমতি না নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবৈধভাবে কর্মকান্ড পরিচালনা করে। ওই সময় ভূইফোঁড় কথিত এই এনজিও’র অপতৎপরতা নিয়ে বেসরকারী টেলিভিশন এটিএন নিউজে একটি প্রতিবেদনও প্রচারিত হয়। টেলিভিশনে সংবাদ প্রচারের পর গোপনে চম্পট দেয় কথিত ওই এনজিও’র কর্তারা।
দীর্ঘদিন পর ফের বাংলাদেশে আসছে কথিত ওই এনজিও ‘একটিভ জোগেন’। অবৈধভাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাহায্যের নামে অপতৎপরতায় নেতৃত্ব দেবেন মোহাম্মদ আলী বাকসি ও মুসাহিত বিলজিগ নামে তুরস্কের দুই নাগরিক। ৩১ জানুয়ারী রাতে বাংলাদেশে পৌছানোর কথা রয়েছে তাদের। এরপর ১ জানুয়ারী শুক্রবার ও শনিবার তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মকান্ড চালাবে। এরপর কি করবেন সেটি জানা যায়নি।
মোহাম্মদ আলী বাকসি ও মুসাহিত বিলগিজ তাদের ফেসবুক একাউন্টে বাংলাদেশে আসার ঘোষণাটি দেয় গত ২৮ জানুয়ারী।
বাংলাদেশে তাদেরকে রোহিঙ্গা শিবিরে কাজ করতে সহযোগিতা করে সাইদুল ইসলাম রিজভী নামে এক যুবক। রিজভী তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে রোহিঙ্গা শিবিরে ‘একটিভ জোগেনের’ সমস্ত কাজ বাস্তবায়ন করে। অথচ সংস্থাটি সম্পূর্ণ অবৈধ ও সরকারের অনুমতিহীন।
প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ‘একটিভ জোগেন’ নামে বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদনপ্রাপ্ত কোন বিদেশি এনজিও নেই। এই নামে কোন এনজিও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মকান্ড চালালে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার। বিষয়টি সতর্ক রয়েছে প্রশাসন।
একটি সূত্রে জানা গেছে, কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও যথেষ্ট ডকুমেন্ট না থাকার কারণে ভূইফোঁড় এনজিও সংস্থা গুলোকে বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা শিবিরে কাজ করার অনুমতি দেয় না। এছাড়াও অনেকে নাম স্বর্বস্ব এনজিও’র নাম দিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। কিন্তু সরকার সতর্ক থাকায় ভূইফোঁড় এসব এনজিও অনুমোদন পায় না। এসব কতিপয় এনজিও গুলোকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে রোহিঙ্গা শিবিরে কাজ করার সুযোগ করে দেয় দেশের কিছু অসাধু ব্যক্তি। এরমধ্যে একজন সাইদুল ইসলাম রিজভী। রিজভীর মত অসাধু ব্যক্তিদেরকে খোঁজে আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে প্রশাসন।