ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন

ব্যবসার জন্য রোহিঙ্গা ও রাখাইন সংকট উপেক্ষা করছেন সু চি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক – রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর গণহত্যা, নির্যাতন, আন্তর্জাতিক উদ্বেগ কিংবা সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে রাজ্যে শুরু হওয়া সহিংসতাসহ কোনো কিছুই যেন দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছে না। দিনের পর দিন অবলিলায় এসব উপেক্ষা করে চলেছেন তিনি। রাখাইন পরিস্থিতি ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রতিশ্রুতি ভুলে সম্প্রতি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে মন দিয়েছেন তিনি। তাই এ নিয়ে তার কড়া সমালোচনা করেছে লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

গত সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সু চির সমালোচনা করে বলা হয়, ব্যবসার জন্যই রাখাইন সংকট উপেক্ষা করছেন তিনি।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, নেপিদোতে স্থানীয় ও বিদেশি ব্যবসায়ীদের এক সম্মেলনে সু চি বলেন, তার সরকার মিয়ানমারকে আঞ্চলিক ব্যবসা ও বিনিয়োগের অন্যতম গন্তব্যে পরিণত করতে চায়। অথচ পুরো বক্তব্যে সু চি একবারও রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ও সহিংসতার কথা উল্লেখ করেননি। বরং সু চি অর্থনৈতিকভাবে উদীয়মান এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে তার দেশ যে অন্যতম তার একটি ছবি ব্যবসায়ীদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। আর তিনি এটি করছেন বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকেই অভিযোগ ছিল তাদের ব্যবসার সুযোগ করে দিতে।সু চি তার বক্তব্যে বলেন, তার দেশকে যারা ভালো করে চেনে, তারা জানে এখানে উদ্ভাবনী বিনিয়োগকারীদের আয়ের অফুরন্ত সম্ভাবনা আছে। ২০১৬ সালে তার সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকেই দেশের অর্থনীতি ইতিবাচক শক্তি হয়ে উঠেছে বলেও দাবি করেন তিনি। এ সময় সু চি মিয়ানমারে ব্যবসায়ীদের জন্য কী কী সুযোগ সুবিধা রয়েছে সেসব তুলে ধরেন। অথচ একবারও তিনি ২০১৭ সালে সেনাবাহিনী রাখাইনে যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে এবং এর কারণে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়ে শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে তা উল্লেখ করেননি। এসব ঘটনায় নিস্পৃহ ভূমিকা পালন করায় এরই মধ্যে সু চির আন্তর্জাতিকভাবে ইমেজ নষ্ট হয়েছে।

জাতিসংঘ গণহত্যার অভিযোগে দেশটির সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের কথা বলেছে। এরই মধ্যে গত মাস থেকে রাখাইনে নতুন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৌদ্ধ বিদ্রোহীদের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। এসব রক্তক্ষয়ী ঘটনা দেশটির ব্যবসায়িক পরিবেশে মারাত্মক প্রভাব ফেললেও স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কেউ এ নিয়ে মুখ খোলেননি।