ভাসানচরের উদ্দেশে চট্টগ্রামে পৌঁছেছেন ২২শত রোহিঙ্গা

মুহাম্মদ হানিফ আজাদ, উখিয়া •

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন শিবির থেকে পঞ্চম দফায় তিন হাজারের অধিক রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

২ মার্চ দুপুর ১টার দিকে তাদের মধ্যে ১ হাজার ৭৩ জন রোহিঙ্গা ও বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে আরও ২১টি বাস যোগে ১ হাজার ১ শত ২৭ জন রোহিঙ্গাসহ প্রায় ২২ শত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু উখিয়া থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছেছেন বলে কক্সবাজার শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত নিশ্চিত করেছেন।

মঙ্গলবার (২ মার্চ) দুপুর ১টা ও বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে এসব বাস উখিয়া ত্যাগ করেন। প্রশাসন ভাসানচরের যাওয়ার উদ্দেশে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ট্রানজিট পয়েন্ট ক্যাম্পে তাদের খাবার,পানি,ঔষধ দেন।

মঙ্গলবার ভোর থেকে ২০ টি মিনিবাসে করে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ট্রানজিট পয়েন্ট ক্যাম্পে নিয়ে আসেন সংশ্লিষ্টরা।তাদের মালামাল বহনকারী ১১ কার্গো সঙ্গে ছিলেন। এছাড়াও রোহিঙ্গা বহরের আগে পিছনে ছিলেন এম্বুলেন্স ও আইনশৃংখলা বাহিনীর গাড়ি।

কক্সবাজার অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, স্বেচ্ছায় যেতে এমন আগ্রহী প্রায় তিন হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা পঞ্চম দফায় ভাসানচর যাচ্ছেন।

এসব রোহিঙ্গাদের বুধবার (৩ মার্চ) চট্টগ্রাম থেকে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে তাদের ট্রলারে করে নোয়াখালীর ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে চতুর্থ দফায় কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবির থেকে ১০ হাজারের অধিক রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়।

ইতোমধ্যে ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জন, ২৯ ডিসেম্বর ১ হাজার ৮০৪ জন এবং চলতি বছরের ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় দফার ৩ হাজার ২৪২ জন ও চতুর্থ দফায় ৩ হাজার ১৫ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এছাড়া অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে গত মে মাসে ভাসানচরে নিয়ে যায় সরকার, তারাও সেখানে রয়েছেন।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট পর থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন সাড়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।

এছাড়া নতুন-পুরনো মিলে বর্তমানে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় শিবিরগুলোতে বসবাস করছেন। শরণার্থীদের চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।

সরকারের তথ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার সকালে শতাধিক রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছেড়ে পালানোর সময় আইনশৃংখলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে।পরে ২ টার দিকে ২ টি বাসে করে রোহিঙ্গাদের উখিয়া থানা থেকে ক্যাম্পে নিয়ে যায় বলে উখিয়া থানার ওসি আহম্মদ সনজুর মোরশেদ জানান।