মহেশখালীতে পুলিশের নাকের ডগায় জুয়ার আসর!

মোহাম্মদ আবু তাহের মহেশখালী ::

মহেশখালী পৌরসভাস্থ ০৩ নং ওয়ার্ড দাসীমাঝি পাড়ায় পুলিশের নাকের ডগায় চলছে জমজমাট জুয়ার আসর। আসরে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের নেশাদ্রব্য।

প্রতিদিন মোটা অংকের টাকা নিয়ে পুলিশ তা না দেখার ভান করে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের ।

মহেশখালী পৌরসভাস্থ ০৩ নং ওয়ার্ডের দাসিমাঝি পাড়ায় বাধাহীন ভাবে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে জুয়ার আসর। এসব জুয়ার আসরে শুধু এলাকার লোকজন নয় পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে আসে বিভিন্ন ধরনের অপরাধীরাও। আর জুয়ার আসরের জন্য প্রতিদিন পকেট খালি করে পথে বসছে অনেকে। এরা পূণরায় জুয়ার টাকা জোগাড়ে কোনো না কোনো অপরাধে জড়াচ্ছে। ফলে শঙ্কিত হচ্ছে এলাকার সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মহেশখালী পৌরসভাস্থ ০৩ নং ওয়ার্ডের দাসিমাঝি পাড়ায় চা ও ছোট ছোট মুদির দোকানে চলছে তাস ও কেরাম,খোলা জায়গায় চলছে গুডুম খেলানামে জুয়ার রমরমা আসর।

দাসিমাঝি পাড়ায় ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে ওঠা অধিকাংশ দোকান মালিকরা অসৎ পথে অর্থ উপার্জন করার জন্য তারা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তাস,গুডুম খেলা ও কেরাম বোর্ডের আসর বসায়। জুয়াড়ীরা যাতে তাদের আসর ঠিকঠাক ভাবে চালিয়ে যেতে পারে তার জন্য ঐসব দোকান মালিকরা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে অতিরিক্ত জায়গা বরাদ্দ নিয়ে ছোট-ছোট টোল ঘর বেঁধে দিয়েছে। প্রতিদিন এই জুয়ার আসরে এলাকার উঠতি বয়সী বেকার যুবক যবতী ছাড়াও বহিরাগত অচেনা অনেক দাগী সন্ত্রাসীরা অংশ গ্রহণ করে থাকে।

শুধু উঠতি বয়সী যুবক ও বহিরাগতরা নয় জুয়ার এই আসরে স্কুল-কলেজ গামী শিক্ষার্থীরাও অংশ গ্রহণ করে থাকে।

বহিরাগতদের সংস্পর্শে এসে এলাকার অধিকাংশ উঠতি বয়সী যুবক ও শিক্ষার্থীরা এ পথে ধাপিত হচ্ছে। সময় মত জুয়ার টাকা যোগাড় করতে এরা বাবার পকেট কাটা থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। তেমনি এলাকার যুব সমাজ, বিপদগামী হচ্ছে স্কুল-কলেজ গামী ছাত্র সমাজ,এই কর্মকান্ডের কারণে নিরাপত্তহীনতায় রয়েছে এলাকার সাধারণ মানুষ। এলাকায় বেড়েছে চুরি, ছিনতাই সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড।

জানা গেছে, জুয়াড়ীরা সাধারণত ৪ জন করে তাস ও কেরাম গেম খেলে থাকেন। আবার অনেক সময় ৪ জনের পরিবর্তে ২ জন করে খেলে থাকেন। তাসের প্রতি গেম শেষে ৩য় ও ৪র্থ খেলোয়াড়কে জরিমানা গুনতে হয়। কেরামবোর্ড মূলত বাজিতে হয়ে থাকে। দোকান্দারের কাছে নির্ধারিত বাজির অগ্রীম টাকা জমা রেখে খেলা শুরু করতে হয় জুয়াড়ীদেরকে,গুডুম খেলায় যে কেউ অংশ গ্রহণ করতে পারে খেলা শেষে কেউ পকেট খালি করে আবার কেউ পকেট ভর্তি টাকা নিয়ে বাড়ী ফেরে। তবে প্রত্যেক গেমে দোকান্দারকে নির্দিষ্ট পরিমান টাকার একটি অংশ ভাগ দিতে হয় বলে সূত্রে জানা গেছে।

জুয়ার আসর পরিচালনার ক্ষেত্রে ঐ সব দোকান মালিকদেরকে ক্ষমতাসীন দলের এক শ্রেণীর নেতারা সহযোগীতা করে থাকেন বলে অপর একটি সূত্রে জানা গেছে।

স্থানীয় পৌর কাউনন্সিলার আব্দু শুক্কুর জানান, জুয়ার বোর্ড ও নেশার বিষয়টি নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। এসব বন্ধের জন্য তিনি উচ্চ পর্যায়ে নালিশও করেছেন। অবিলম্বে জুয়ার বোর্ড বন্ধ না হলে এলাকার অবস্থা খারাব হবে বলেও তিনি দাবি করেন।

উক্ত বিষয়ে মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর এ কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,এসব বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। যদি এ জাতীয় কোনো ঘটনা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধ করা হবে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।