মহেশখালীতে বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডারদের হামলায় ১৩ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী আহত


এম.হারুনুর রশিদ, মহেশখালী :
মহেশখালীর হোয়ানকে বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডার ও মাদক ব্যবসায়ীদের হামলায় ছাত্রলীগের ১৩ নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।

ঘটনাটি ঘটেছে ১লা জানুয়ারী রাত সাড়ে ৯টার সময় হরিয়ার ছড়া বাজারের পূর্বদিকে হামলাকারী মো:কাশেমের বাড়ীর সামনের রাস্তার উপর। হামলাকারীরা বিএনপি ও জামায়াতের সক্রীয় সদস্য এবং মাদক ব্যবসায়ী বলে জানান আহত সাকলাইন। হামলাকারী মো: কাশেম গংদের মাদক ব্যবসার কারণে এলাকার উঠতি বয়সের যুবক শ্রেণীর ছেলেরা মাদক সেবন কররে বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ায় এলাকার লোকজন তাদের এধরনের অন্যায় কার্যকলাপে বাঁধা দিতে বিষয়টি সাকলাইন ইসলাম নিরু তার দলীয় অন্যান্য কর্মীদের সাথে আলাপ আলোচনা করে; যৌথ ভাবে মাদক ব্যবসায়ীদেরকে বাঁধা দিয়ে আসে।

সদ্য সম্পন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে হোয়ানক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়ক সাকলাইন ইসলাম নিরু সহ তার দলীয় লোকজনদের সাথে আবু সামার ছেলে মো: কাশেমের সাথে তর্ক বির্তক ও মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। উক্ত বিষয় নিয়ে হামলাকারীরা সংঘবদ্ধ ভাবে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে উঠে এবং সাকলাইন ও তার দলীয় ছেলেদেরকে ক্ষতিসাধন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে হামলাকারীরা। যাহা সাকলাইন ইসলাম নিরু এবং তার দলীয় ছেলেরা অবগত ছিল না। গেল ৩০ শে ডিসেম্বর ১৮ইং তারিখ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষে সাকলাইন ও তার দলীয় কর্মীরা অবসর হওয়ায় চলতি জানুয়ারী মাসের ১ তারিখ সন্ধ্যার পরে সাকলাইন ইসলাম নিরু ব্যাডমিন্টন খেলার জন্য হোয়ানকস্থ ছনখোলা পাড়ায় যায়। খেলা শেষে রাতের বেলায় বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে পূর্ব শত্রুতার জেরে পূর্ব পরিকল্পনায় রাত অনুমান সাড়ে ৯ টাকার সময় হোয়ানক হরিয়ারছড়া বাজারে পৌঁছলে হামলাকারীরা তাদের দলীয় আরো ১০/১৫জন অজ্ঞাত নামা লোকজনসহ দা, কিরিচ, লোহার রড়, লাঠি অস্ত্র সস্ত্র সহকারে বে-আইনী জনতায় দলবদ্ধ হয়ে সাকলাইন ইসলাম নিরু সহ তার দলীয় ছেলেদের আক্রমন করে।

উক্ত ঘটনার খবর পেয়ে মহেশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহাম্মদ বাবু সহ কয়েকজন বিষয়টি আপোষ মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য হরিয়ারছড়া বাজারে পৌছলে সাকলাইন ইসলাম নিরু ও তার সঙ্গীয়রা তাহাদের সহিত একত্রিত হয়। তখন জামাত বিএনপির ক্যাডাররা গুজব ছড়াইয়া সংঘবদ্ধ ভাবে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরকে আক্রমণ করবে তা বুঝতে পেরে সাকলাইন ইসলাম নিরু ও আগত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আত্মরক্ষার্থে হরিয়ারছড়া বাজারের পূর্ব দিকের রাস্তা দিয়া দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় মো: কাশেম এর বাড়ীর সামনে পৌঁছলে ; কাশেম ও তার দলীয় লোকজনেরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ঘিরে ফেলে এবং খুন করার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি কোপাইয়া ও মারপিট করিতে থাকে। একপর্যায়ে মো: কাশেমের হাতে থাকা কোটা দা দিয়া সাকলাইন ইসলাম নিরু সঙ্গী মিজান কে খুন করার উদ্দেশ্যে মাথার উপর জোরে কোপ মারতে দেখে সে আত্মরক্ষার্থে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও কোপ মাথায় লেগে গুরুত্বর রক্তাক্ত মাথার খুলি কাটা জখম হয়। হামলায় জখম প্রাপ্ত হয়ে মিজান মাটিতে পড়ে যায়। তখন আবু নেছার, সরওয়ার আজম,আব্দুল মতিন,সালা উদ্দীন , মোস্তাক মিয়া , আছাদ উল্লাহ হেলালী ,সাহেব মিয়া,নুরুল আলম,শফিউল আলম ও মো: ঈসমাইলদের হাতে থাকা লোহার রড় দিয়া মিজান কে মাটিতে পড়া অবস্থায় এলোপাতাড়ী আঘাত করে পিঠে, হাতে, পায়ে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বর হাড় ভাঙ্গা জখম করে। যা দেখে মিজানের ছোট ভাই এমরান এগিয়ে গেলে, সাহেব মিয়া,নুরুল আলম, শফিউল আলম এমরানকে আক্রমন করে লোহার রড় দিয়া মাথায়, পিঠে, হাতে, বুকে, পায়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বর জখম করে। যা দেখে আরিফ, সজিব, রিফাত, ফরিদ, রাজীব, মুজাহিদ, পারভেজ আহাম্মদ বাবু, মিজু, মহাব্বত আলী, আক্কাস বাঙালী ও সাকলাইন ইসলাম নিরু এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা সহ অজ্ঞাত নামা আরো ১০/১৫ জনের সঙ্গবদ্ধ চক্র তাদেরকে চারিপার্শ্বে ঘিরে নির্মম ভাবে এলোপাতাড়ী মারপিট করিয়া গুরুত্বর জখম করে এবং এক এক জনকে এক একদিকে হত্যা করিয়া গুম করার উদ্দেশ্যে ধরে নিয়ে যায়।

উক্ত ঘটনার বিষয়টি মহেশখালী থানার পুলিশ ও নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা বিজিবি সদস্যরা সংবাদ পেয়ে এলাকায় টহলরত অবস্থা হতে দ্রুত হরিয়ারছড়া এলাকায় পৌঁছলে ; হামলাকারীরা সাকলাইন ইসলাম নিরু সহ অন্যান্য জখমীদেরকে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দিয়ে চলে যায়। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার সময় যায়, এই বিষয়ে মামলা মোকদ্দমা করলে, বিচার প্রার্থী হলে কিংবা কাউকে জানালে, সাকলাইন ইসলাম নিরু ও তাঁর পরিবারের লোকজনদেরকে খুন, জখম ও এলাকায় থাকতে দিবে না, মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন মামলায় জড়িত করবে মর্মে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলে যায়।

স্থানীয় লোকজনদের দেওয়া তথ্য মতে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা বিভিন্ন স্থান হইতে সাকলাইন ইসলাম নিরু সহ জখমীদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মহেশখালী হাসপাতালে নিয়ে আসে। মহেশখালী হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার জখমী মিজান,এমরান, আরিফ, সজিব, রিফাত, মুজাহিদ, পারভেজ আহাম্মদ বাবু, মোহাব্বত আলী, আক্কাছ বাঙালী ও সাকলাইন ইসলাম নিরুকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করলে সেখানে দলীয় লোকজনদের সহায়তায় সাকলাইন সহ অন্যান্যদেরকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।

এব্যাপারে সাকলাইন ইসলাম নিরুর পিতা নজরুল ইসলাম জানান আমার ছেলে কে নির্মম ভাবে আহত করেছে সন্ত্রাসীরা, তাই আমি বাদী হয়ে মো: কাশেমকে প্রধান করে ১১জনের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার জমা দিয়েছি।

ঘটনার বিষয়ে মহেশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমদ বাবু বলেন- হরিয়ারছড়া এলাকায় একটি মাদক চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ অপকর্ম চালিয়ে আসছে। স্থানীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাকলাইন ইসলাম নিরু মাদক কারবারীদের অবৈধ কাজে বাঁধা দেয় ,ক্ষিপ্ত হয়ে মাদক বিকিনিকি কারীরা সাকলাইনকে ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করে। আমি বিষয়টি খবর পেয়ে আপোষ করে দিতে ঘটনাস্থলে পৌছি। সেখানে আগে থেকে উৎপেতে থাকা জামাত বিএনপির দোসর সন্ত্রাসীরা পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক আমিও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর র্বরোচিত হামলা চালায়। ওই হামলায় আমিসহ ছাত্রলীগের ১৩জন নেতাকর্মী গুরুতর জখম প্রাপ্ত হয়। প্রশাসনের কাছে সুষ্টু তদন্ত পূর্বক ন্যায় বিচার প্রার্থনা করিতেছি।

এব্যাপারে মহেশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হালিমুর রশিদ এ প্রতিবেদককে জানান- ছাত্রলীগ কোন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়ে না। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কোনস্থানে আক্রান্ত হলে বা দলীয় নেতাকর্মীদের দূরদিনে সেখানে ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল নেতা ঘটনার বিষয়ে আপোষরপা বা দলীয় সিদ্ধান্ত নিতে যেতে পারে। ঘটনাস্থলে যাওয়ার সাথে সাথে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর বরবর্রর হামমলা হবে তা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি দায়িত্বশীল হিসেবে উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে বিনয়ের সহিত আবেদন জানাচ্ছি যে, হরিয়ারছড়ায় ছাত্রলীগ এবং বিএনপি-জামাতের লোকজনের সাথে কিছু স্বার্থানেষী মহল যোগ হয়ে ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করতে চাচ্ছে। আমরা সুষ্টু তদন্তপূর্বক ন্যায় বিচার প্রার্থনা করিতেছি। না হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মহেশখালী শাখা কঠুর আন্দোলন সংগ্রামের ডাক দিবে বলে জানান ছাত্রলীগের নীতিনিধারকরা।