উখিয়ার সাড়ে তিন হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে প্রশাসন

ইমরান আল মাহমুদ:
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়া মোখা’র প্রভাবে কক্সবাজারের উপকূলে মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ১লাখ ৯১ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলার উপকূলীয় এলাকা হিসেবে উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত সাড়ে তিন হাজার মানুষকে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে আনা হয়েছে।

শনিবার(১৩ মে) সকাল থেকে উখিয়ার জালিয়াপালং উপকূলীয় এলাকা সোনারপাড়া, ডেইলপাড়া, চরপাড়া এলাকায় ঝুঁকিতে থাকা মানুষকে স্ব স্ব এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে নির্দেশ প্রদান করে প্রশাসন।

সরেজমিনে দেখা যায়, কেউ কেউ নিজ ইচ্ছায় নিরাপদ আশ্রয়ে ছুঁটছেন। আবার অনেকে বাড়ি ঘর ছেড়ে আসতে অপারগতা প্রকাশ করতে দেখা যায়। তবে ঝুকিপূর্ণ এলাকার সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে আনতে প্রশাসন,সিপিপি,পুলিশ, বনবিভাগ,স্কাউটস, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে দেখা যায়।

একইদিন সন্ধ্যায় সোনারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের দেখতে যান ইউএনও। এসময় তাদের নিরাপদে থাকতে ও সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি। এসময় উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ আলী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আল মামুন, একাডেমিক সুপারভাইজার মো. বদরুল আলম সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান হোসাইন সজীব বলেন,” উপজেলার জালিয়াপালংয়ের যেসব এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে সেসব এলাকা থেকে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক পরিবহনের মাধ্যমে আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হয়েছে। সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা, শুকনা খাবার,মহিলা পুরুষ আলাদা কক্ষে আশ্রয়,রান্না করা খাবার,মোমবাতি, টর্চলাইট সহ সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। বাকী যারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে তাদেরও সরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। উপজেলার ৪৬টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ৭টি উপজেলা টিম সার্বক্ষণিক মাঠ পর্যায়ে জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে কাজ করছে।”

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক( সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন,” জেলার প্রতিটি উপজেলায় কন্ট্রেল রুম চালু রাখা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় ৫ মেট্রিক টন করে ৪০ মেট্রিক টন চাল,৭টন শুকনা খাবার সহ দেড় লাখ টাকা করে ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হচ্ছে। পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।”