সদাচরণ- গালি পরিহার করা

তোফায়েল আহমেদ •

সচ্চরিত্র অমূল্য সম্পদ।আসুন সকলে সচ্চরিত্র লাভে প্রতিযোগিতা শুরু করি।সচ্চরিত্র অর্জনে কতিপয় বাধা দৃশ্যমান।এ-র মধ্যে অন্যতম হলো গালি বা কটুক্তি করা।

রাসূল সাঃ গালি দেওয়াকে নিজ পিতা মাতাকে লানত করার শামিল বলেছেন।তাই রাসূল সাঃ এ-র উম্মাত বা অনুসারী হিসেবে আসুন সকলে গালি দেওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখি।যারা বিশ্বনবী ও মানবতার মহান মুক্তি দূত হযরত মুহম্মদ সাঃ কে আদর্শ বিবেচনা করেন তাদের অবশ্যই গালি পরিহার করতে হবে।

শব্দগত ভাবে শতকরা ৯০% গালি অশ্লীল,ডাহা মিথ্যা কথা, আভিধানিকঅর্থে বিশ্রী ও নোংরা শব্দ।গালি যেহেতু মিথ্যা শব্দ তাই গালি পরিহার করুন কারন মিথ্যা সকল পাপের জননী।

গালি কখন দেওয়া হয়

গালি সাধারণত মানুষ যখন কোন পরিবেশ, পরিস্থিতিগত কারনে রাগের বশবর্তী হয়ে দিয়ে থাকে তাই আগে রাগ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরী।গালি দিলে শয়তান খুশি হয়।পরষ্পরের সুসম্পর্ক বিনষ্ট হয়।
আজকাল স্বাভাবিক সময়েও একে অপরকে গালি দিয়ে সম্বোধন করা হয় যা পুরোপুরি ইসলামী শরীআতসম্মত নয় মোটেও।
দুঃখজনক হলেও সত্য অনেকে হাসি আনন্দে থাকা অবস্থায়,ঠাট্টা মশকরা, মজা করার ছলেও একে অপরকে গালি দেয়।একেমন শিক্ষা যা আপনাকে গালি বা কটুক্তি করতে উৎসাহিত, অনুপ্রাণিত করে।

অর্থহীন গালি বা কটুক্তি
কাউকে গালি দিলে এতে উক্ত কাজের, মানুষের মোটেও কোন পরিবর্তন সূচিত হয় না। তাই আসুন গালি পরিহার করে কোন মানুষ ভুল করলে তার ভুল ধরিয়ে দিয়ে সংশোধন করে দেওয়া অতি উত্তম পন্থা।

চলতিপথে আপনি কোথায় যাচ্ছেন, কোন কারনে বড়গাড়ি ঝুঁকিপূর্নভাবে ছোট গাড়িকে অতিক্রম করলে ছোট গাড়ির চালক বড় গাড়ির চালককে শূন্যে গালি ছুঁড়ে দেয় যা অর্থহীন যা তার আচরণ, কাজে কোন পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ।সেদিন আমিও ছিলাম ছোট গাড়িতে, চালককে বুঝালাম, আপনার গালিতে কি উপকার হলো বরং আপনার আমলনামায় গোনাহ লেখা হলো কিরা মান কাতিবের মাধ্যমে।

কর্মস্থলে
আপনার কোন কাজ যুতসই, সঠিক নাহলে সিনিয়র জুনিয়রকে,সহকর্মীকে গালি দেয়, জুনিয়র, সিনিয়রের কাজ বা আদেশ পছন্দ নাহলে গালি দেয় তাতে কারো আচরণ বা কাজে কোন পরিবর্তন আসে না বরং দূরত্ব সৃষ্টি হয়। আসুন কর্মস্থলে গালি পরিহার করে পারষ্পরিক আলোচনায় কাজ শিখি ও উত্তম কর্মপরিবেশ গড়ে তুলি।

খেলার মাঠ, আড্ডাস্থলে

প্রথমে আপনারা কোথায়, কেন, কি কারনে গালি দেন তা শনাক্ত করুন। খেলার মাঠে সবাইকে বলুন অনুশীলন,ও পূর্ন মনোযোগ থাকার পরও ভুল হতে পারে কারন আমরা রক্ত মাংসের মানুষ তাই গালি দেওয়া যাবে না।একসাথে মিলেমিশে আড্ডা হবে, খেলাধুলা হবে কিন্তুু গালি দেওয়া যাবে না।
যে বা যারা কথায় কথায় গালি দেয় তাদের এড়িয়ে চলুন, তাদের সাথে মিশবেন না।

লেনদেন ও ব্যবসা কাজের ক্ষেত্রে

কারো সাথে আর্থিক বা পন্যদ্রব্য লেনদেন, বিনিময় করলে আপনি চুক্তিবদ্ধ ওয়াদা রক্ষা করুন।কোন কারনে ওয়াদা বা চুক্তি অনুযায়ী সময়ে লেনদেন, পাওনা পরিশোধ করতে না পারলে বুঝিয়ে বলুন। গালি দিবেন না, এতে সমস্যার সমাধান হবে না মোটেও।
ব্যবসায় কেনা বেচায় সৎ থাকুন,হালাল রুটি রুজিরোজগার চিন্তা করুন, হালাল ও বৈধ রুজি গ্রহন করুন।

পরিবারে ও সমাজে
পরিবারে ও সমাজে গালি দেওয়া নিষিদ্ধ করুন।যে বা যারা গালি দিবে তাদেরকে এড়িয়ে চলুন।গালির ক্ষতিকর দিক আলোচনা করুন।পরিবারে ও সমাজে গালি বা কটুক্তি দেওয়া ব্যক্তিতে একঘরে করে রাখুন। সদাচারের শিক্ষা দিন।