দ্বিতীয় বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হলেন আলমগীর চৌধুরী

চকরিয়ায় নির্বাচিত হয়েছেন যারা!

এ কে এম ইকবাল ফারুক,চকরিয়া •


কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার বহুল প্রতিক্ষিত নির্বাচন সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) বড় ধরণের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। করোনার কারনে দু’দফা নির্বাচন পেছানোর পর এই প্রথম বারের মতো ইভিএম পদ্ধতিতেই সোমবার এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

ভোটের দিন সকাল থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি শুরু হলেও ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল অন্যান্য যে কোন সময়ের চেয়ে লক্ষনীয়।

নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলমগীর চৌধূরী বিপুল ভোটের ব্যবধানে টানা দ্বিতীয় বারের মতো (বেসরকারীভাবে) মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ২১হাজার ৪৯০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী নাগরিক কমিটির ব্যানারে নারিকেল গাছ প্রতীকের সতন্ত্র প্রার্থী, স্থানীয় সাংসদ জাফর আলমের ভাতিজা জিয়াবুল হক পেয়েছেন ৯ হাজার ৭৬২ ভোট।

এছাড়া  ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে এম নুরুস শফি, ২ নম্বর ওয়ার্ডে সাইফুল ইসলাম, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মোহাম্মদ হানিফ, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে জাফর আলম কালু, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ফেরকানুল ইসলাম তিতু, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে আবদুচ ছালাম, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে মো. নুরুল আমিন, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে মো. মুজিবুল হক, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বেলাল উদ্দিন বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

এছাড়া ১,২,৩ নম্বর ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর পদে রাশেদা বেগম, ৪,৫,৬ নম্বর ওয়ার্ডে ফারহানা ইয়াছমিন ফোরকান, ও ৭,৮,৯ নম্বর ওয়ার্ডে আনজুমান আরা বেগম বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। সোমবার সকাল ৮টা থেকে একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত পৌর নির্বাচনের ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। বিকালে রিটার্ণীং কর্মকর্তার দপ্তরে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষনা করেন পৌর নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্ণীং কর্মকর্তা ও চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ। এ সময় সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার সকাল ৮টা থেকে পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের ১৮টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহন শুরু হয়।  সকাল ৮টার দিকে ভোট কেন্দ্র গুলোতে বিপুল সংখ্যক নারী ভোটারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও তেমন দেখা যায়নি পুরুষ ভোটারদের। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে পুরুষ ভোটারের উপস্থিতিও লক্ষ্যনীয় ছিল।

ভোটারদের উপস্থিতির কারণে ভোট কেন্দ্রে দায়িত্বরত প্রিজাইডিং, পোলিং ও সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের এজেন্টরা কাটিয়েছেন ব্যস্ততম সময়। এদিকে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সকাল ১০টার দিকে ২ নম্বর ওয়ার্ডের হালকাকারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থী রেজাউল করিম ও সাইফুল সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটলেও পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। পরে ওই কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহন সম্পন্ন হয়। এছাড়া অন্যান্য ভোট কেন্দ্র গুলোতেও ভোটারদের উপস্থিতি ছিল অন্যান্য যে কোন সময়ের চেয়ে লক্ষ্যনীয়।

উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেন, চকরিয়া পৌর এলাকার ভোট কেন্দ্র গুলোতে ভোটররা নির্ভয়ে ও স্বতৎস্ফূর্তভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। নির্বাচনের দিন ৯টি ওয়ার্ডের ১৮টি ভোট কেন্দ্রের  সবগুলোই ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করে বিপুল সংখ্যক র‍্যাব, বিজিবি ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এছাড়া ১২জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালন করেন। বিপুল সংখ্যক আহনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকায় কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলেও দাবী করেন তিনি।

প্রসঙ্গত: চকরিয়া পৌর সভায় ৯টি ওয়ার্ডের ১৮টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৪৮ হাজার ৭২৪জন। তাদের মধ্যে ২৫ হাজার ৮৯৯ জন পুরুষ ও ২২ হাজার ৮২৫ জন নারী ভোটার ছিল। সোমবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মেয়র পদে ৪জনসহ সংরক্ষিত নারী ও পুরষ কাউন্সিলর পদে ৬৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করেন।