কক্সবাজারে ত্রাণ নিয়ে দেবরের সঙ্গে উত্তেজনা, ভাবির মৃত্যু

টেকনাফ প্রতিনিধি •

লাশ- ফাইল ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফের দ্বীপ ইউনিয়ন সেন্টমার্টিনে ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে দেওয়া ত্রাণ নিয়ে উত্তেজনার জেরে সানজিদা বেগম (৪৫) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তিনি আগে থেকেই হার্টের রোগী ছিলেন বলে দাবি করেছে পরিবার।

রোববার (২১ মে) সকালের দিকে এ ঘটনা ঘটে। দেবরের সঙ্গে হাতাহাতিতে মাটিতে ঢলে পড়ে তিনি মারা যান বলে প্রচার পায়। কিন্তু উত্তেজনার কারণে হার্ট অ্যাটাকে তিনি মারা গিয়ে থাকতে পারেন বলে দাবি করেছেন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।

সানজিদা সেন্টমার্টিন দ্বীপের পশ্চিমপাড়া এলাকার প্রতিবন্ধী নজির আহমদের স্ত্রী।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় মোখায় সেন্টমার্টিন দ্বীপের দুই হাজারের বেশি বসতঘর ভেঙে গেছে। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শুরু করেছে। শনিবারও ত্রাণ দেওয়া হয়। সেই ত্রাণ নিয়ে একই ঘরের ভেতর থাকা সানজিদা, তার স্বামী ও দেবর নুরুল ইসলামের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সানজিদা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যান। প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে স্পিডবোটে সকাল ১০টার দিকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাসালি বিনতে ফয়েজ বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। পরে স্বজনরা তাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে গেছেন।

অপর একটি সূত্র জানায়, ত্রাণ নিয়ে উত্তেজনার এক পর্যায়ে দেবর নুরুল ইসলাম ভাবি সানজিদাকে ঘুষি মারেন। এতে সানজিদা জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে গেলে তাকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এ সময় চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তবে সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, এটি মোখায় সেন্টমার্টিনে দুইজন মারা যাওয়ার তথ্যের মতো। তারা সবাই একই ঘরে থাকে। শনিবারের দেওয়া ত্রাণ নিয়ে কোনো কারণে উত্তেজনা তৈরি হলে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সানজিদা মাটিতে লুটে পড়েন বলে জেনেছি। তাকে উদ্ধার করে টেকনাফ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সানজিদা দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন তার স্বামী।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম বলেন, ত্রাণ নিয়ে পাবারিবারিক কলোহের পর দেবর-ভাবির মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে বলে জেনেছি। এতে মাটিতে পড়ে যাওয়ার পর অসুস্থ সানজিদা আর উঠতে পারেননি। হৃদরোগে ভুগছিলেন বলেই সম্ভবত তার মৃত্যু হয়েছে। তবে তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পরিবার থেকেও কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।