কক্সবাজারে মাদক পাচারকারীর পায়ুপথ দিয়ে বের হলো দেড় হাজার ইয়াবা

বিশেষ প্রতিনিধি •

কাপড় কিংবা বাজারের ব্যাগে নিয়ে ইয়াবা পাচার করলে তল্লাশিতে ধরা পড়ার ভয় থাকে। তাই অভিনব কায়দায় স্কচটেপে মোড়ানো পোঁটলা কলার ভেতর ঢুকিয়ে গিলে ফেলে গাড়িতে করে কক্সবাজার শহরে নিয়ে যাচ্ছিলেন রোহিঙ্গা আবদুর রশিদ (৪৫)। তবুও শেষ রক্ষা হলো না।

টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কাঞ্জরপাড়ায় পুলিশের বিশেষ তল্লাশি চৌকিতে অটোরিকশার যাত্রী আবদুর রশিদকে সন্দেহজনকভাবে আটক হন। তাকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

২০ মে রাতে আবদুর রশিদ ছটফটানি শুরু করলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এক্স-রে করে তার পেটে ইয়াবার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তখন আবদুর রশিদ পুলিশের কাছে স্বীকার করেন তার পেটে ইয়াবার কয়েকটি পোঁটলা রয়েছে।

পরে পায়ুপথ দিয়ে হাজারের বেশি ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় সোমবার (২২ মে) দুপুরে আবদুর রশিদকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়।

আবদুর রশিদ কক্সবাজারের টেকনাফের মুছনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম বলেন, এক্স-রে প্রতিবেদনের ভিত্তিতে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা রোববার বিকেলে রোহিঙ্গা রশিদের পেটে থাকা ইয়াবার কয়েকটি পোঁটলা পায়ুপথ দিয়ে বের করেন। স্কচটেপে মোড়ানো পোঁটলায় পাওয়া যায় এক হাজার ৩৫০টি ইয়াবা। সোমবার সকালে একই পদ্ধতিতে বের করা হয় আরও ২০০টি ইয়াবা। সব মিলিয়ে রশিদের পেট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক হাজার ৫৫০টি ইয়াবা।

পুলিশ জানায়, ইয়াবাগুলো রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য কক্সবাজার শহরের দিকে যাচ্ছিলেন রোহিঙ্গা আবদুর রশিদ। প্রথমে ইয়াবাগুলো পাকা কলার ভেতরে লুকানো হয়। তারপর কলা গিলে ফেলেন রশিদ। একই পদ্ধতিতে আরও কয়েকবার আবদুর রশিদ ইয়াবা পাচার করে সফল হন বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৩ এপ্রিল টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের রুহুল্যারডেপা এলাকায় পেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে পাচারের সময় মাসুদ রানা ওরফে ইদ্রিস পাটোয়ারী নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। পরদিন মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। ময়নাতদন্তের সময় মাসুদ রানার পেটে স্কচটেপ ও কনডম মোড়ানো অবস্থায় আট পোঁটলা ইয়াবা পাওয়া যায়। এর মধ্যে তিনটি পোঁটলার ইয়াবা গলে বিষক্রিয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে তখন জানিয়েছিলেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আশিকুর রহমান।

মাসুদ রানার বাড়ি রাজবাড়ীর আলীপুর ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামে।

গতবছরের ২৩ সেপ্টেম্বর ইয়াবার বিষক্রিয়ায় মারা যান টেকনাফ পৌরসভার বাজারপাড়ার শুকুর আলী। ময়নাতদন্তের সময় তার পেট থেকে উদ্ধার করা হয় দেড় হাজার ইয়াবা।