র‍্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করবে প্রায় সাড়ে তিনশ চরমপন্থী ও সর্বহারা সদস্য

মনিরুল ইসলাম:

র‍্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে প্রায় সাড়ে তিনশ চরমপন্থী ও সর্বহারা সদস্য। এরা রাজশাহী ও যশোর অঞ্চলের এমএল লাল পতাকা, জনযুদ্ধ ও সর্বহারা পার্টির সদস্য। চরমপন্থীদের স্বাভাবিক জীবনে এনে পুনর্বাসন আর আইনগত সহায়তাও দেবে এলিট ফোর্স র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‍্যাব।

শনিবার (২১ মে) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন তারা।

এর আগে, এ বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুসকে জনসম্মুখে গুলি করে খুন করে দুর্বৃত্তরা। তদন্তে জানা যায়, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির চরমপন্থী সদস্যরা এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত। দেড় মাস পর জড়িত ৮ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এক সময় চরমপন্থী বা সর্বহারা সন্ত্রাসীদের ভয়ে কাঁপতো দেশের উত্তর ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল। সময়ের সাথে এখন এতোটা খারাপ পরিস্থিতি না থাকলেও থেমে নেই চরমপন্থিদের তৎপরতা। মাঝে কয়েক বছর বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বহু চরমপন্থী সদস্য আত্মসমপর্ণ করলেও এখনও সক্রিয় এসব পার্টির সদস্যরা। অপরাধ জগতের সাথে যুক্ত থাকায় এদের পরিবার অনেক জায়গায়ই একঘরে। এখন মামলা তুলে নেয়া আর স্বাভাবিক জীবনে ফেরার শর্তে আত্মসমর্পণ করতে চায় কয়েকজন চরমপন্থীরা।

যারা আত্মসমর্পন করতে চায় তাদের ডাকেই এবার সাড়া দিচ্ছে র‍্যাব। কয়েক মাস ধরে পরিকল্পনা করে, চরমপন্থীদের পরিবারের সাথে যোগাযোগের পর পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া শুরু করে সংস্থাটি। জানা গেছে, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ এবং যশোর, খুলনা অঞ্চলের এককালের ত্রাস এলএম লাল পতাকার ২৯৪ জন, জনযুদ্ধের আট জন এবং সর্বহারা পার্টির ২১, মোট ৩২৩ জন চরমপন্থী ২শ অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘উদয়ের পথে’ নামের একটি কর্মশালা আমরা করেছি। এখানে তাদের পরিবারের সদস্যদের হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে, কারিগরি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। আশা দেয়ার যে বিষয়টি থাকে, যেমন ধরুন- পুর্নবাসন করা বা পরবর্তীতে তাদেরকে আইনি সহায়তা দেয়া ইত্যাদি। এসবের কারণেই তারা অপরাধ থেকে দূরে এসে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে।

প্রসঙ্গত, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হিসাব অনুযায়ী, নব্বই দশক থেকে এ পর্যন্ত দেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষ খুন হয়েছেন চরমপন্থীদের হাতে। নির্বাচনের আগে চরমপন্থিদের আত্মসমর্পণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেই প্রত্যাশা র‍্যাবের।