লকডাউনে মানবেতর জীবনযাপন করছে কক্সবাজারের শ্রমজীবীরা

ওমর ফারুক হিরো •

চলমান লকডাউনে মানবেতর দিন কাটছে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমজীবী লোকজনের। কর্মহীন হয়ে পড়া এসব মানুষ পরিবারের আহার যোগাতে না পেরে অসহায় হয়ে পড়েছে। কাজের আশায় তারা এই লকডাউনের মাঝেও ঘর থেকে বের হয়ে পড়ছেন।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, কক্সবাজার শহরের এই ব্যস্থতম এলাকা ঘুনগাছতলা ও কালুর দোকানে প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত বসে শ্রমের হাট। শহরের নানা স্থান থেকে শ্রমিকরা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজের আশায় এখানে ভিড় করেন। আর লোকজন তাদের দৈনিক কাজের জন্য নিয়ে যায়। কিন্তু লকডাউনের কারণে দিন মজুররা ওখানে আসতে পারছেনা। লোকজনও তাদের আর কাজে নিচ্ছেনা।

এদিকে লকডাউনে কাজ পাওয়া মুশকিল জেনেও তারা বেরিয়ে পড়ছেন পরিবারের মুখে আহার যোগানোর আশায়। তাদের কাটছে কর্মহীন অলস সময়। তাদের মধ্যে কয়েকজন কাজ পেয়ে হাসিমুখে ঘরে ফিরলেও বেশিরভাগই ফেরেন একরাশ দুঃখ নিয়ে। চলমান কঠোর লকডাউনে চরম মানবেতর দিন কাটছে এই দরিদ্র মানুষগুলোর।

শহরের বৈদ্যঘোনার কাদের নামে এক শ্রমিক জানান, লকডাউনে কাজ না থাকায় তার পরিবার ঠিকমত খেতে পারছেনা। তাই বাধ্য হয়ে লকডাউনের মাঝেও কাজের জন্য রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছে।

শহরের নুনিয়াছড়ার শাহজাহান মিয়া নামে আরেক দিন মজুর জানান, তারা লকডাউন মানতে রাজি। কিন্তু খাবার না খেয়ে’ত মারা যেতে পারবেনা। তাই কাজের সন্ধানে এসেছে।

শহরের বাহারছড়ার আহম্মদ শফি নামে আরেক শ্রমিক জানান, তিনি শুনেছেন জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেই ত্রাণ কোথায় দিচ্ছে কিভাবে নিতে হয় তা জানেননা। এই অবস্থায় তাদের খুব কষ্টে দিন কাটছে। এদিকে কক্সবাজারে লকডাউনে কর্মহীন মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।

ব্যাপারে আগের দিন ত্রাণ বিতরণ কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ ইকবাল বলেন, লকডাউনে কর্মহীন মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। পর্যায়ক্রমে দিনমজুর, রিকশা চালক, সেলুন কর্মচারী, মুচি, পর্যটন কর্মী সহ কর্মহীন মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এই কার্যক্রম সদর সহ ৮ উপজেলায় অব্যাহত রয়েছে। সচেতন মহল বলছেন, এই কঠিন পরিস্থিতিতে গরীব, অসহায়, দুস্থদের মাঝে ত্রাণ তৎপরতা বাড়ানোর পাশাপাশি সুষম বন্টনের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থরাই যেন এ ত্রাণ পায়।