কক্সবাজারে ৩ ঘণ্টার বৈঠক: মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন রোহিঙ্গারা

টেকনাফ অফিস •

সম্ভাব্য প্রত্যাবাসনকে সামনে রেখে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে তিন ঘণ্টা বৈঠক করেছে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল। তবে দলটির সদস্যদের দেওয়া আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন রোহিঙ্গারা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে টেকনাফের জাদিমুড়া শালবাগান ক্যাম্পে দুইশর বেশি রোহিঙ্গার সঙ্গে বৈঠকটি হয়। পরে পৌরসভা জালিয়াপাড়ায় টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট জেটি দিয়ে ট্রলারে ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি ফিরে যায়।

এর আগে সকাল ৯টার দিকে বাংলাদেশে আসে দলটি। অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) সামছুদ্দৌজাসহ সরকারি কর্মকর্তারা তাঁদের শুভেচ্ছা জানান। মিয়ানমারের দলটির নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির মিনিস্ট্রি অব সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্সের মংডুর আঞ্চলিক পরিচালক অং মাইউ। এ ছাড়া ঢাকায় মিয়ানমার অ্যাম্বাসেডরের দুই সদস্যও বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (মিয়ানমার) মোহাম্মদ মইনুল কবির বলেন, আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন। কারণ, এটিই একমাত্র স্থায়ী সমাধান। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে পাঠাতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় মিয়ানমারের দলটি এসেছে। তাঁদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

তিনি জানান, মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের প্রধান তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন, রোহিঙ্গাদের দাবিগুলো এই মুহূর্তেই সব পূরণ করা না গেলেও ভবিষ্যতে পূরণ করা হবে। স্বেচ্ছায় যেসব রোহিঙ্গা মিয়ানমারে যেতে রাজি হবেন তাদের এ আলোচনা শেষে দ্রুত প্রত্যাবাসন করা হবে।

তবে রোহিঙ্গারা প্রতিনিধি দলের আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন। বৈঠকে অংশ নেওয়া কয়েকজন জানান, তাঁরা ফিরে যেতে নিজ দেশ মিয়ানমারের নাগরিকত্ব, ভিটেমাটি ফেরতসহ দেশটির অন্য জনগোষ্ঠীদের মতো চলাচলের স্বাধীনতা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। জাদিমুড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মোহাম্মদ সেলিম বলেন, সম্প্রতি আমাদের রাখাইন পরিদর্শনের সময় যেসব কথা বলা হয়েছিল এখানে এসেও একই কথা বলেছে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল। তাঁরা (মিয়ানমার দল) আমাদের এনবিসি কার্ড দিয়ে সে দেশে ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া কথা বলছেন। কিন্তু এভাবে আমরা যেতে রাজি না।

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা নেতা খিন মং বলেন, ক্যাম্পে মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা এসেছিলেন। অনেক রোহিঙ্গা দাবি তুলেছেন নিরাপদ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনের জন্য। আমরা চাই, সেটি যেন নিশ্চিত করা হয়।