বৃষ্টিতে রোহিঙ্গাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ

 

আবদুল্লাহ আল আজিজ :  

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’র প্রভাবে গত তিন দিন ধরে কক্সবাজারের উখিয়ায় বৃষ্টিপাত বেড়েছে। এতে উখিয়ায় আশ্রিত রোহিঙ্গা শিবিরে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।

কুতুপালং ও বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের অনেকেই ঝুঁকির মুখে পড়েছেন।

কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদফতরের কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে কক্সবাজারের কিছু এলাকায় প্রভাব পড়েছে। তবে ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর সংকট দেওয়া হয়েছে।’

সরেজমিনে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার (১২ অক্টোবর) সকালের ভারী বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রিতদের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ক্যাম্পের ভেতরে জমেছে কাঁদা-পানি। পিচ্ছিল পথে হাঁটাই দায়।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বি ব্লকের অবস্থানকারী মিয়ানমারের বলী বাজার গ্রামের বাসিন্দা হাসমত উল্লাহর সাথে কথা হয়। তিনি জানান, বৃষ্টি হলে কষ্টের পরিমাণ বেড়ে যায়। এই শিবিরে পানি জমে ঘরের ভেতর পর্যন্ত ঢুকে পড়ে। আমরা যে জায়গায় আশ্রয় নিয়েছি সেটি পাহাড়ের পাদদেশ সংলগ্ন। ক্যাম্পে বিশুদ্ধ পানির সংকট থাকায় অনেকেই ডায়রিয়ার আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া রয়েছে ঠাণ্ডা জ্বর, কাশি। ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগও।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বুচিডং থেকে আসা সুলতান আহমদ জানান, তার পরিবারে তিন শিশু। বৃষ্টি বাড়লে কষ্ট বাড়ে, সঙ্গে বাড়ে প্রাণহানির শঙ্কাও, বাতাসে নড়াচড়া করে ঝুপড়ি ঘর। বৃষ্টিতে পানি আটকানো যায় না, ওপর থেকে নিচের দিকে পানি নামলে ঘর স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যায়। তাই রাতে না ঘুমিয়ে বসে থাকতে হয়।

রাখাইনের বুচিডংয়ের আইনচং এলাকার কালাচান বিবি জানায়, এখানে রোদ হলেও সমস্যা আবার বৃষ্টি হলেও সমস্যা। একটু ঝড়-বৃষ্টি হলেই ঝুপড়িগুলোর ছাউনি দেয়া ত্রিপল উড়ে গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছেন। আবার একটু রোদ হলে গরমে ছোট ছোট বাচ্চাদের ত্রাহি অবস্থা।

বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরের এইচ-১১ব্লকের মাঝি মোঃ লালু বলেন, ‘রোহিঙ্গা শিবিরে অধিকাংশ ঘর পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে, যা ঝুঁকিপূর্ণ। ভারী বৃষ্টিতে ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। এতে রোহিঙ্গাদের কষ্টের শেষ নেই।

এ ব্যাপরে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জনাব নিজারুজ্জান চৌধুরী বলেন, ‘বৃষ্টিতে যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।’