শনিবার টেকনাফে ইয়াবা কারবারীদের আত্মসমর্পণ অনুষ্টান

উখিয়ার ইয়াবাকারবারীরা আত্মসমর্পণে অনিচ্ছুক

বিশেষ প্রতিবেদক :

ফাইল ছবি

অনেক জল্পনা কল্পনার অবসানের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ দিনের আলোচিত ও প্রতিক্ষিত উখিয়া- টেকনাফ সীমান্তের ইয়াবা গডফাদারদের আত্মসমর্পণ অনুষ্টান ১৬ ফেব্রুয়ারী শনিবার টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে।

কিন্তু উখিয়ার ইয়াবাকারবারীরা আত্মসমর্পণের সুযোগ না নিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ইতিমধ্যে অনেকেই আতœগোপন করেছে। উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ বললেন, মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্ছার সুশিল সমাজ ও কমিউনিটি পুলিশের সদস্যদের নিয়ে তিনি ওই অনুষ্টানে যোগদান করবেন। যাতে অনুষ্টান সফল ও স্বার্থক হয়।       সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আসছে দীর্ঘ দিন থেকে। বর্তমানে এ ইয়াবা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। মরণ নেশা ইয়াবার আগ্রাসন বন্ধ করতে এ অনুষ্টানের আয়োজন করা হয়েছে বলে কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবি এম মাসুদ হোসাইন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ইতিমধ্যে দেড়শতাধিক তালিকাভুক্ত ও চিহ্নিত ইয়াবা চোরাকারবারী আত্মসমর্পণের জন্য একটি বিশেষ স্থানে নিরাপদ হেফাজতে জড়ো হয়েছে। আরো অনেকেই পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আত্মসমর্পণের সুযোগ গ্রহন করার তদবির করছে। তিনি আরো বলেন, আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা পাচারকারীরা স্বাভাবিক জীবনে ফেরার এই একমাত্র সুযোগ। তবে কি কি শর্তে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ দেওয়া হবে তা কৌশলগত কারনে তিনি এড়িয়ে গেছেন।           

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এর আগে বলেছিলেন, ইয়াবাকারবারীরা স্বাভাবিক জীবনে না এলে মামলা চলবে। আর স্বাভাবিক জীবনে এলে এদের বিরুদ্ধে আনিত মামলা বা বর্তমান মামলা হবে কিনা তা আমরা দেখব। ইয়াবা পাচার করে বিপুল অর্থের মালিক হওয়া ব্যক্তিরা আত্মসমর্পণ করলে তাদের অবৈধ সম্পদ বৈধতা পাবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সরাসরি উত্তর না দিয়ে তিনি বলেছিলেন, সম্পদের বিষয় দুদক বা এনডি আর দেখবে। বাংলাদেশে বর্তমানে মাদকের মধ্য ইয়াবার কথা সবার আগে আসে। এ ইয়াবা আসে মূলত মিয়ানমার থেকে। ইয়াবা পাচার বন্ধে মিয়ানমার সরকারের সহায়তা চেয়েও পাওয়া যায়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন। নতুন বছরের শুরুতেই ইয়াবা পাচার বন্ধের একটি অন্যতম পদক্ষেপ আতœসর্ম্পনের সুযোগ সম্পর্কে সরকারের উচ্চ পর্যায়েও ব্যাপক আলোচনা হয়।

এরই মধ্যে টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ১৫ জানুয়ারী ফেসবুকে ঘোষনা দিয়ে প্রশাসনের কাছে আত্মসমর্পণের অনুরোধ জানালে বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় আসে।  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরসূচি তুলে ধরে কক্সবাজার পুলিশ সুপার মাসুদ বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারী সকালে বিমান যোগে কক্সবাজার পৌছবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ওই দিন বিকালে কক্সবাজার জেলার উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

পর দিন সকালে তিনি টেকনাফে আতœসর্ম্পন অনুষ্টানে যোগ দেবেন। আতœসর্ম্পন অনুষ্টান এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আগমনের সার্বিক প্রস্তুতির তদারকিতে পুলিশের মহা পরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীও উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

গত বছরের শেষ দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের করা সর্বশেষ তালিকায় ইয়াবা পাচারকারী হিসাবে চিহ্নিত ১০১৫১ জন কক্সবাজারে। তাদের মধ্যে শীর্ষ ইয়াবা পাচারকারী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে ৭৩ জনকে।  ইতিমধ্যে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের বালুখালী পানবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে কুখ্যাত ইয়াবাকারবারী জাহাঙ্গীর ও থাইংখালীর জয়নাল মেম্বারকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরন করে।

এঘটনায় অন্যান্য ছোটখাট ইয়াবা ব্যবসায়ীরা টেকনাফে আত্মসমর্পণ অনুষ্টানের আগেই গা ঢাকা দিয়েছে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন।