উখিয়ায় কাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও

শফিক আজাদ, উখিয়া :

উখিয়া উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতরের আওতাধীন গ্রামীণ সড়ক উন্নয়নের নামে গত ১ বছর আগে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও সড়কের পুরাতন ইট খুলে নিয়ে ঠিকাদার উধাও হয়ে যাওয়ার কারণে অসহনীয় জনদুর্ভোগে পড়েছে রাজাপালং ইউনিয়নের বৃহত্তর পূর্বাঞ্চলীয় জনপদের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। তবে এ নিয়ে উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতরের কর্মকর্তার খামখেয়ালিপনাকে দায়ী করেছেন এলাকাবাসি। কারণ দীর্ঘদিন যাবৎ সড়কটি বেওয়ারিশের মতো পড়ে থাকলেও এলজিইডি অফিসের কর্তা-ব্যক্তিদের কোন মাথা ব্যাথা নেই।

সরজমিন দেখাগেছে, উপজেলার পূর্বাঞ্চলীয় জনপদ ডেইলপাড়া, পূর্বডিগলিয়া, করইবনিয়া, চাকবৈঠাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। গত ১ বছর পূর্বে ঠিকাদার সড়কটি খোঁড়াখুঁড়ি করে ফেলে গেলেও তা নিয়ে কোন রাজনৈতিক ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি অথবা এলজিইডি অফিসের মাথা ব্যাথা নেই। তাই আগামী বর্ষা মৌসুমে এ সড়ক দিয়ে পুরো যানচলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়বে বলে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ।

রাজাপালং ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মীর সাহেদুল ইসলাম চৌধুরী রোমান জানান, উপজেলার কাঁচা তরি-তরকারি উৎপাদনের একমাত্র এলাকা হচ্ছে পূর্বাঞ্চলীয় এই জনপদ। এই এলাকার কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে বাজারে আসতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এছাড়াও আগামী বর্ষা মৌসুমে পূর্বে সড়কের কাজ সম্পন্ন করা না হলে একে বারে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে, এতে কোন সন্দেহ নেই। তাই এলাকাবাসির দাবীর প্রেক্ষিতে তিনি বিষয়টি উপজেলা এলজিইডি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দে ২টি প্যাকেজে পশ্চিম ডিগলিয়াপালং রাস্তার মাথা থেকে অলি বকসুর বাড়ী পর্যন্ত সড়ক কার্পেটিং এবং সেখান থেকে ডেইলপাড়া নতুন মসজিদ পর্যন্ত সড়কে কার্পেটিং কাজ উন্নতিকরণের লক্ষ্যে প্রায় দেড় বছর আগে প্রকাশ্যে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে সর্বনিম্ন দরদাতা ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। ১বছর আগে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এসব সড়কের ভাঙাচোরা ইটগুলো তুলে নিয়ে যায় এবং সড়ক থেকে ২ ফুট গর্ত করে মাটি খুঁড়ে ফেলে ঠিকাদার উধাও হয়ে যায়।

এসব সড়কের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার, মোহাম্মদ আলম ও (অবঃ) উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী আশরাফ আলীর মুঠোফোনে জানান, রাস্তার কিছু অংশের কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আর বাকী অংশের কাজও দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু করবে বলে জানিয়েছেন ঠিকাদার মোহাম্মদ আলম। তবে তাদের কথায় আর কাছে কোন মিল নেই বলে অভিযোগ স্থানীয় গ্রামবাসি ও পথচারীদের। তারা জানান, ইতিপূর্বে আরো একাধিক বার এই ধরনের ওয়াদা দিয়েছিল এই ঠিকাদারেরা, কিন্তু কি কারনে তারা এ গুলো ভুলে তা বুঝে আসছেনা। এ নিয়ে এলজিইডি কর্মকর্তাকে দায়ী করেছেন তারা।

এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, আমি চেষ্টা করতেছি অন্তত বর্ষার আগে রাস্তাটি মেকাডম করার। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের অবহেলার কারনে কাজ শুরু করা যাচ্ছেনা। কিন্তু এলজিইডি অফিস থেকে তাদেরকে বার বার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।