মার্চে ঝড়-ঝঞ্ঝা-বন্যার পূর্বাভাস

অনলাইন ডেস্ক – ষড়ঋতুর দেশ বাংলার প্রকৃতিতে সবচেয়ে দুর্যোগপূর্ণ মাস মার্চ, এপ্রিল, মে ও জুন। এ কয়েক মাসেই সচরাচর বজ্রবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, কালবৈশাখী আঘাত হানে। তবে এবার সেই দুর্যোগের ঘনঘটা শুরু হয়েছে ফেব্রুয়ারি থেকেই। বজ্রবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, কালবৈশাখীর আঘাতের সঙ্গে মার্চে আকস্মিক বন্যার পূর্বাভাসও দিচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাস দিতে বিশেষজ্ঞ কমিটির নিয়মিত সভায় আবহাওয়ার বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে মার্চ মাসের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার আগারগাঁওয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  
 
সভা শেষে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ জানান, মার্চে সামগ্রিকভাবে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে।
 
‘এ মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে ১-২ দিন শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি বা তীব্র কালবৈশাখী বা বজ্রঝড় ও দেশের অন্যত্র ৩-৪ দিন শিলাবৃষ্টিসহ হালকা বা মাঝারি কালবৈশাখী বা বজ্রঝড় হতে পারে।’
 
তিনি জানান, এ মাসে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক (৩৪-৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) অপেক্ষা সামান্য বেশি থাকার সম্ভাবনা আছে ও মাসের শেষ দিকে দেশের পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের উপর দিয়ে একটি মৃদু (৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি (৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
 
এছাড়াও দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতজনিত কারণে আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে।
 
আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বাংলানিউজকে বলেন, সোমবার (৪ মার্চ) থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হবে। পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে পূবালি বাতাসের সংমিশ্রণের ফলে বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। আগামী কয়েকদিনে একই কারণে বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি হবে।  
 
সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু’এক অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে।
 
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থায় বলা হয়, বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টির প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
 
আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয়বাষ্প উঠে আসায় পশ্চিমা লঘুচাপের সংশিশ্রণ ঘটছে। এ কারণে এবার জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি থেকেই বৃষ্টিপাতের ঘনত্ব ও স্থায়িত্ব বাড়ে। সাধারণত মার্চ থেকে মে পর্যন্ত দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকে। তবে এবার জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি থেকেই বিরূপ আবহাওয়া বিরাজ করছে।
 
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে স্বাভাবিক অপেক্ষা ১৬২ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঢাকাতেই স্বাভাবিক ৩১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের স্থলে হয়েছে ২৩১ মিলিমিটার। পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে পূবালি বাতাসের সংমিশ্রণের ফলে বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে।