ঝিলংজার খাইম্যার ঘোনায় সিরাজ-তাজদ্দীনের নেতৃত্বে চলছে পাহাড় কাটার মহোৎসব

সাইফুল ইসলাম,কক্সবাজার জার্নাল

কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের খাইম্যার ঘোনায় এলাকায় প্রকাশ্যে দিন-রাত পাহাড় কাটা চলছে। প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঠিক নজরধারির অভাবে কোনো মতেই বন্ধ হচ্ছে না পাহাড় কাটা। কয়েক মাস ধরে গভীর রাত থেকে শুরু করে দিন-দুপুরেও জনসম্মুখে ৬টি স্পটে শ্রমিক দিয়ে মিনি ট্রাক (ডাম্পার), ঠেলা গাড়িসহ নানা পরিবহনের মাধ্যমে পাহাড় কাটা অব্যাহত রেখেছে ভুমিদস্যুরা ও পাহাড় খেকোরা।

সম্প্রতি ঝিলংজা খাইম্যার ঘোনা এলাকার সিরাজুল ইসলাম ও মুন্সি তাজউদ্দীনের নেতৃত্বে দুইশ ফুট উঁচু পাহাড় কেটে সাবাড় করে ভবণ ও বসতবাড়ি নিমার্ণ করা হচ্ছে। সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটা বিষয়ে মামলা হলেও থেমে নেইও তার নেতৃত্বে পাহাড় কাটা। এমনকি সিরাজুল ইসলাম পাহাড় কেটে পানের বরজও নিমার্ণ করেছে দীর্ঘদিন ধরে। এছাড়া তার বাড়িতে প্রতিনিয়তেই ইয়াবার হাটও বসে। সে একজন প্রকৃত ইয়াবা ব্যবসায়ী।

এছাড়া একই এলাকায় রশিদা বেগম, গিয়াস উদ্দীন পাহাড় কাটা জড়িত রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানতে পারি। তবে অভিযোগ ওঠেছে বন বিভাগের কিছু অসাধু ব্যক্তির কারণে পর্যটন এলাকার দেদারছে পাহাড় কাটা বন্ধ করা যাচ্ছে না।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঝিলংজা ইউনিয়নের খাইম্যার ঘোনায় ৬ টি স্পটে পাহাড় কাটছে পাহাড় খেকো ও ভুমিদস্যুরা। এছাড়াও গরুর হালদা, বিডিআর ক্যাম্পের পিছনে, বাসটার্মিনাল, ফাওয়ার হাউজের দক্ষিণ পাশে, শহরের সিটি কলেজ এলাকা, আর্দশগ্রাম, চন্দিমা এলাকা, বড়ছরা, বাদশাঘোনা, পাহাড়তলী, কলাতলীর জেল গেইট এলাকাসহ পর্যটন এলাকার বিভিন্ন স্থানে দেদারছে চলছে পাহাড় কাটার মহোৎসব।

জানা যায়, সম্প্রতি জমির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ভুমিদস্যু ও পাহাড় খেকোদের বিচরণ ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। রাতারাতি পাহাড়ি জমি দখল করে শত শত শ্রমিক দিয়ে সমতল বানিয়ে বিক্রি করে আসছে। বর্তমানে এ পাহাড় খেকো ও ভুমিদস্যুদের কবলে পড়ে সরকারী উচু পাহাড় সাবাড় করা হচ্ছে। যে পাহাড়গুলো কয়েক দিন পূর্বেও চারদিকে সবুজ আবরণ ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ছিল বর্তমানে পাহাড় কাটার কারণে সেই সৌর্ন্দয বিলীন হয়ে গেছে।

ঝিলংজা খাইম্যার ঘোনা এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন জানান, শুধু পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করার জন্য এই এলাকায় সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটর অন্যতম হচ্ছে সিরাজ ও তাজউদ্দীন সিন্ডিকেটটি। তারা বিভিন্ন লোকজনকে প্রলোভনে ফেলে এ সব পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করার কৌশল সৃষ্টি করেছে।

পাহাড় কাটায় অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলামের কাছে জানতে চাই তিনি বলেন, পাহাড় কাটলে কি হয়। সব জায়গায় তো পাহাড় কাটা আছে বলে ফোন কেটে দেন।

মুন্সি তাজউদ্দীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমি পাহাড় কাটেনি বলে ফোন কেটে দেন।

এবিষয়ে রামু তুলাবাগান রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে প্রশাসন শক্ত অবস্থানে রয়েছে। ঝিলংজার এলাকার বিভিন্ন স্পটে পাহাড় কাটার খবর পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. কামরুল হাসান বলেন, পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে প্রতিনিয়তেই অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ঝিলংজায় যারা পাহাড় কাটায় জড়িত আছে তদন্তর্পূবক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় হবে।