উখিয়ায় প্রাথমিক শিক্ষার বিস্তৃতি ঘটলেও, বাড়েনি শিক্ষার মান

বিশেষ প্রতিবেদক :

বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতি তরান্বিত করে ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা শূন্যের কোটায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষার ব্যাপক বি¯তৃতি ঘটালেও তৃনমূল পর্যায়ে বাড়েনি শিক্ষার মান। শিক্ষক সংকট, বিদ্যালয়ের অবস্থা সংকটাপন্ন, নেই চাহিদামত অবকাঠামো, যা আছে তাও জরাজীর্ণ। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষাবিদরা বলছেন সরকার সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করার শতভাগ সফলতা এনেছে। কিন্তু শিক্ষক সংকটসহ নানাবিদ সমস্যার কারনে তা সামনে এগোতে পারছে না। এরই মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসন মনিটরিং এর নামে দূর্নীনি ও শিক্ষক হয়রানিতে ব্যস্ত থাকে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা বলছে শিক্ষা প্রশাসনকে সঠিক পর্যায়ে দাড় করাতে না পারলে প্রাথমিক শিক্ষার গুনগত মান বাড়ানো কঠিন হয়ে পড়বে বলে মত দিয়েছেন এলাকার শিক্ষা অনুরাগী, অভিভাবক ও সু-শীল সমাজের লোকজন।
বিশ্ব ব্যাংকের সাম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশের শিশুরা এগার বছর বয়সে ক্লাসে যা শেখে অন্যান্য দেশে ছয় বছরে শিশুরা তা শিখছে। সরকারের শিক্ষা ব্যবস্থায় সামগ্রীক ব্যায় কম ও স্কুল ব্যবস্থাপনায় মান অতি দূর্বলের কারনে প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে সফলাতা আসছে না। সাম্প্রতি ইউনোস্কোর এশিয়া প্যাসেসিক রিজুওনাল ব্যুরো ফর এডুকেশন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষার মান নিয়ে এক প্রতিবেদন পেশ করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষকের অভাবে প্রাথমিক শিক্ষার গুনগত মান নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য মতে দেশে ২৪ ধরনের প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক রয়েছে প্রায় পাচঁ লক্ষেরও বেশি। তৎমধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৩ হাজারেরও অধিক । এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় সোয়া তিন লক্ষ শিক্ষক আছে। যাদের ৬৪ শতাংশ নারী। এ বিশাল সংখ্যক বিদ্যালয়ে যেমন শিক্ষার কাঙ্খিত মান ও ব্যবস্থাপনা নেই, তেমনি নেই চাকুররত শিক্ষকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষনের সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা। তাছাড়া উপজেলা পর্যায়ে বেশ কিছু স্কুল যুক্তিপূর্ন অবস্থায় বিরাজমান। এমন স্কুল রয়েছে যেখানে ছাত্র-ছাত্র সংখ্যা অনুপাতে অবকাঠামো নেই। নেই কোন সুপীয় পানির ব্যবস্থা। শৌচাগার থাকলেও ব্যবহার অনুপযোগী। উপজেলা শিক্ষা অফিসারের তথ্য মতে প্রায় ৫/৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (সাইক্লোন সেন্টার) কে উপজেলা প্রশাসন যুক্তিপূর্ণ ঘোষনা করে এসব বিদ্যালয়ে পড়া লেখা না করার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষকদের বাধ্য হয়ে ঐসব যক্তিপূর্ণ ভবনে ক্লাস নিতে হচ্ছে। উপজেলার বেশ কয়েকটি স্কুল ঘুরে দেখা যায় ছাত্র ছাত্রী সংখ্যা অনুপাতে শিক্ষকের মারাত্বক সংকট। এ প্রসঙ্গে হাঙ্গরঘোনা অরবিন্দু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোজাম্মেল হক জানান তার স্কুলটিতে শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১জন শিক্ষক দিয়ে প্রায় ২ শতাধিক শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিতে হচ্ছে। এভাবে বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বাবু শুভ্রত কুমার ধর জানান যে সমস্ত স্কুলে শিক্ষক সংকট রয়েছে সেখানে ডেপুটেশনে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া যুক্তিপূর্ণ স্কুলগুলো নতুন করে নির্মান উদ্যোগ নেয়া হলেও উপজেলা প্রশাসনের ব্যস্ততার কারনে তা করা সম্ভব হচ্ছে না। কক্সবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: শফিউল আলম জানায় শিক্ষক সংকট, আসবাবপত্রে স্বল্পতা ও ঝুকিপূর্ণ ভবন গুলো ভেঙ্গে নতুন করে নির্মানের ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।