কক্সবাজারের স্বাস্থ্যের ১৪ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব

ডেস্ক রিপোর্ট – স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা হোসেনের দুর্নীতির উৎস খুঁজতে এবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে ব্যবসা করা রুবিনার মালিকানাধীন রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের কাজ নিয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন বিভাগের সাবেক পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর আবদুর রশীদসহ ১৪ জনকে তলব করা হয়েছে।

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য সরঞ্জাম কেনা ও সরবরাহের নামে সিন্ডিকেট করে দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য তাদের তলব করা হয়। অভিযোগটি অনুসন্ধান করছেন দুদকের উপপরিচালক সামছুল আলম।

উপপরিচালক সামছুল আলম স্বাক্ষরিত চিঠি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পাঠিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দুদকে হাজির করতে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। তাদের আগামী ১ থেকে ৩ এপ্রিলের মধ্যে দুদকে হাজির হয়ে অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে।

অন্য যাদের তলব করা হয়েছে তারা হলেন: কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ সুবাস চন্দ্র সাহা, সাবেক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ রেজাউল করিম, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মায়েনু, মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ফরহাদ হোসেন, সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ নুরুল আলম, সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাখাওয়াত হোসেন ও শহিদুল হক, মাইক্রোবায়োলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল মাজেদ, হেপাটোলোজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুল বরকত মোহাম্মদ আদনান, এনাটমি বিভাগের প্রভাষক আশরাফুল ইসলাম, প্যাথলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কামরুল হাসান, স্টোর কিপার আবু জায়েদ ও হিসাবরক্ষক হুররমা আক্তার খুকী।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঁচটি মেডিকেল কলেজ স্থাপন প্রকল্পে স্টেনোগ্রাফার হিসেবে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে যোগ দেন রুবিনা খানম। দুই বছর পর ২০০০ সালে স্বেচ্ছায় অবসরে গিয়ে রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল গড়ে ব্যবসা শুরু করেন।

রুবিনার স্বামী আবজাল হোসেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেডিকেল এডুকেশন শাখার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা। ৩০ হাজার টাকা বেতনধারী আবজালের ঢাকার উত্তরায় বাড়ি আছে পাঁচটি। আরেকটি বাড়ি আছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে। রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় আছে অন্তত ২৪টি প্লট ও ফ্ল্যাট। দেশে-বিদেশে আছে বাড়ি-মার্কেটসহ অনেক সম্পদ। এসব সম্পদের বাজারমূল্য হাজার কোটি টাকারও বেশি। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এই দম্পতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমে গত বছরের ৬ জানুয়ারি আবজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) বরাবর চিঠি দেয় দুদক। তবে খবর পাওয়া গেছে, আবজাল দম্পতি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।

এর আগে ১০ জানুয়ারি আবজালকে দুদকে ডেকে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদকের অনুসন্ধান দল।

আর ২১ জানুয়ারি দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আবজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং ব্যাংক হিসাবগুলোর লেনদেন ফ্রিজ করার আদেশ দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত।