সবাই অফিস থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। আমি তো বের হতে পারছি না। পঙ্গু আমি, উপায় না পেয়ে চেয়ারে বসে আছি। আমার জন্য দোয়া করিস। তোরা ভালো থাকিস। ছোটো ভাই মেহফুজ জুবায়ের পলাশের সঙ্গে এসব কথা বলছিলেন বনানীর এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারানো মঞ্জুর হাসান। তার বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার বোয়ালিয়া পূর্বপাড়া গ্রামে। তিনি মুনছুর রহমানের ছেলে।
বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন লাগার পর বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে ছোটো ভাইয়ের সঙ্গে শেষ কথা হয় মঞ্জুরের।
নিহতের ভাতিজা নাহিদ বলেন, মঞ্জুর হাসান ছাত্রজীবন থেকে ঢাকায় থাকতেন। ছাত্রজীবন শেষে চাকরি শুরু করেন। এরপর সংসার। পরিবার নিয়ে ঢাকার ইব্রাহিমপুরে বসবাস করতেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। কাশেম গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছিলেন। ঘটনার দিন মঞ্জুর হাসান ভবনের ২১ তলায় কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে অবস্থায় করছিলেন। আগুন থেকে বাঁচতে সবাই যখন ছোটাছুটি করছিলেন তিনি কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে অফিসের চেয়ারে বসেছিলেন। আর জীবনের শেষ সময়টুকু স্বজনদের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন। কিন্তু এক সময় ফোনে কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। বার বার রিং হলেও অপর প্রান্ত থেকে আর কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
নিহতের ছোট ভাই শিমুল বলেন, চাকরিরত অবস্থায় ২০০০ সালে অফিসের সামনের রাস্তায় ভাই এক সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে যান। এরপর থেকে ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারতেন না। একপ্রকার পঙ্গু জীবন যাপন করতেন। কিন্তু তারপরও কোম্পানি ভাইকে চাকরি থেকে বাদ দেয়নি। অফিসে যখন আগুন লাগে সবাই বাঁচার জন্য ছোটাছুটি করছিল। কিন্তু ভাই পঙ্গু হওয়ায় কিছু করার উপায় ছিল না। অফিসে বসেই ফোনে আমাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-