কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা দিতে গড়ে উঠেছে সিন্ডিকেট

ডেস্ক রিপোর্ট – কক্সবাজারে বিভিন্ন চিকিৎসকের চেম্বারে রোহিঙ্গা রোগীর ভীড় ক্রমশঃ বেড়েই চলেছে। একটি সিন্ডিকেট চুক্তি ভিত্তিতে কক্সবাজার এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। এতে চিকিৎসা সেবায় প্রাধান্য পাচ্ছে রোহিঙ্গা রোগীরা। একই ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছে সরকারি হাসপাতালে।
রোহিঙ্গা রোগীদের নিয়ে ব্যবসায় মেতে উঠেছে একটি চক্র। এতে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে কর্মরত চিকিৎসকের চেম্বারের সহকারিও জড়িত রয়েছে। কক্সবাজারে স্থানীয় চিকিৎসা সেবা ক্রমশঃ জটিল হয়ে উঠেছে। রোহিঙ্গারাই পাচ্ছেন চিকিৎসা ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ প্রাধান্য। গত দুইদিন কক্সবাজারের কয়েকটি ক্লিনিকে কর্মরত চিকিৎসকদের চেম্বারের বাইরে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। তবে এটি চিকিৎসকের অগোচরেই হচ্ছে বলে জানান কয়েকজন রোগী।

সম্প্রতি শহরের পান বাজার সড়কে একটি বেসরকারি প্যাথলজী সেন্টারে গিয়ে দেখা যায় রাত ১২টা পর্যন্ত রোগীর দীর্ঘ লাইন। ঢাকা থেকে আগত একজন লিভার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিতে এসেছেন সবাই। লাইনে দাড়ানো রামুর গর্জনিয়া থেকে আগত আবু নাছের জানান, একদিন আগে নাম লিপিবদ্ধ করার পরও এখনো ডাক্তার দেখাতে পারেনি। যারা ডাক্তার দেখানোর সুযোগ পাচ্ছেন এদের প্রায় সবাই রোহিঙ্গা । ডাক্তারের চেম্বার সহকারি কৌশলে তাদের আগে ডাক্তার দেখানোর ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। এক সাথে ৭/৮ জন রোহিঙ্গা চেম্বারে প্রবেশ করার পর আরেক দলকে ডেকে নিয়ে আসে। এতে স্থানীয়রা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনেকেই ধৈর্যচ্যুত হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

পাশ্ববর্তী আরো একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় ডাক্তারের চেম্বারের সামনে রোগীর দীর্ঘ লাইন। তিনিও ঢাকা থেকে এসেছেন। তিনি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। ওখানেও একই অবস্থা। চিকিৎসা নিতে যাওয়া শহরের গাড়ির মাঠের আবুল হোসেন জানিয়েছেন, এখানে বলার কিছু নাই। এখানে সিন্ডিকেট করে রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে সিন্ডিকেট সদস্যরা মোটা অংকের টাকা নিয়ে তা ডাক্তারের চেম্বার সহকারি ও সিন্ডিকেট সদস্যরা ভাগ করে। যার ফলে স্থানীয়রা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা য়ায়, নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের জন্য একটি আর্ন্তজাতিক সংস্থার অধীনে চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে। এতেও ওই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চিকিৎসা নেয় রোহিঙ্গারা। জরুরী বিভাগে কর্মরত একজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, কিছু বললে আমাদের সমস্যা আছে তাই বলি না। জরুরী বিভাগে প্রতিদিন অন্তত ৫০/৬০ জন রোহিঙ্গা গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছে।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডাঃ আবদুল মতিন জানিয়েছেন, এমন কোন তথ্য আমাদের হাতে নেই। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগও করেনি। তবে বিষয়টি অতীব গুরুত্বপুর্ণ। এ ব্যাপারে দ্রুত খোঁজ খবর নেওয়া হবে।

/দৈনিক কক্সবাজার