আকাশে মেঘ দেখলেই বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়!

শাহীন মাহমুদ রাসেল :

আকাশে কালো মেঘ হলেই বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আর সামান্য ঝড়-বৃষ্টি হলে তো কোনো কথাই নেই। এছাড়া আর একটু ঝড়-বৃষ্টি হলে দু-একদিনেও বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না। তখন এই বিদ্যুতের তাঁর ছিড়ে নয়তো লাইনের উপর গাছগাছালি পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। নতুবা ত্রুটি দেখা দেয় ৩৩ কেভি লাইনে। এই হলো কক্সবাজার জেরার পল্লীবিদ্যুতের নিত্যদিনের চিত্র। 

বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকেই জেলাবাসী এমনই দুর্ভোগে ভুগছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই পল্লীবিদ্যুতের এই লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ছেন গ্রাহকরা।

লোডশেডিংয়ের ফলে যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন সেচের চাষীরা, তেমনি ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ গ্রাহক ও শিক্ষার্থীরা পড়েছেন বিপাকে। দিনে অন্তত ৮ থেকে ১০ বার পল্লীবিদ্যুতের এই লোডশেডিং চলছে।  বৈশাখের ঝড়বৃষ্টির দাপট শুরুর আগেই বিদ্যুতেই এই আসা যাওয়া যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মিজান ভুট্টু নামে পল্লীবিদ্যুতের এক গ্রাহক বলেন, পল্লীবিদ্যুৎ অপরিকল্পিত ভাবে তাদের সঞ্চালন লাইন টেনেছে। যার মাসুল এখন গ্রাহকদের দিতে হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী করলে এই লোডশেডিং হত না। 

গ্রাহকদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের তাঁরের টেম্পার নেই। বেশির ভাগ খুঁটিও দুর্বল। হালকা বাতাস এলেই তাঁর ছিড়ে অথবা খুঁটি পড়ে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় জোড়াতালি দিয়েই কোনো মতে চালানো হচ্ছে কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সরবরাহর কার্যক্রম। আকাশে সামান্য মেঘ জমলেই এবং মাঝারি বেগে হাওয়া ও টিপটিপ বৃষ্টি শুরু হলেই জেলার পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকরা আতঙ্কে ভূগেন- এই বুঝি বিদ্যুৎ উধাও হয়ে গেল। আর একবার গেলে ঘন্ট থেকে দুই ঘন্টার মধ্যে ফিরে আসে না। এমনকি মসজিদে আজান শুরুর মধ্যেই হঠাৎ করে চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। 

বিদ্যুতের এই আসা যাওয়ার ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। কক্সবাজার সদর উপজেলা পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম জানান, একটু দমকা বাতাস বইলে বিদ্যুৎ থাকে না। সঙ্গে প্রতিদিনের দীর্ঘ লোডশেডিংতো আছেই। তাছাড়া নানা অজুহাতে প্রায় সময় বিদ্যুৎ থাকে না। ঠিকমতো ব্যবসা বাণিজ্যও করা যাচ্ছে না। চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থীদেরও পড়ালেখায় নানা ব্যাঘাত ঘটছে। 

এ বিষয়ে কক্সবাজার পল্লীবিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার নুর মোহাম্মদ আজম মজুমদার বলেন, ঝড়ো বাতাসের কারণে মানুষের জানমাল ও ট্রান্সফরমার ত্রুটি ঠেকাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা হয়। এর পরও কালবৈশাখী ঝড়ে গাছ-পালার ডাল ভেঙ্গে পড়ে ক্যাবল ছিঁড়ে যাচ্ছে। আর ট্রান্সফরমারে ত্রুটি ও ইনস্যুলেটর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এছাড়া ডিসের অবৈধ ক্যাবল বাতাসে ছিঁড়ে বিদ্যুতের ক্যাবলে পড়ায় জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিচ্ছে। তবে এ জন্য ওজোপাডিকোর পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে।

তিনি আরোও বলেন, বিদ্যুতের বেশি ক্ষতি করছে গাছপালার ডাল। কালবৈশাখী ঝড়ে দু’দফায় গাছের ডাল কর্তন হয়েছে। এই এরিয়ায় বিদ্যুতের চাহিদার কোনো ধরণের ঘাটতি নাই।