১৩৭তম বাংলাদেশ

নাগরিকদের প্রত্যাশিত কল্যাণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, জীবন, সম্ভাবনা এবং বিশ্ব ভ্রমণের সুযোগের বিবেচনায় বিশ্বে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ফ্রান্স। কোয়ালিটি অব ন্যাশনালিটি ইনডেস্কে এ বছর ৮৩.৫ শতাংশ পয়েন্ট অর্জন করে টানা অষ্টমবারের মতো শীর্ষ স্থানে ধরে রাখল ইউরোপের এই দেশটি। আর এই তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৭তম, যা আগের বছর ছিল ১৩৯তম। একটি দেশের জাতীয় গুণাবলী যেমন, অর্থনীতি, শান্তি, স্থিতিশীলতা, নাগরিকদের উন্নয়নের সুযোগ, ভিসা-মুক্ত ভ্রমণের সুবিধা, বসবাসে স্বাচ্ছন্দ্য এবং বিদেশে কাজ করার ও বসবাসের সুযোগ ইত্যাদি বিবেচনা করে কলিন এবং কোচেনভ-এর বিশ্বব্যাপী জাতীয়তার মানের সূচক ‘কোয়ালিটি অব ন্যাশনালিটি ইনডেক্স’ (কিউএনআই) নির্ণয় করা হয়।

 

সূচকে ফ্রান্সের পরেই ৮২.৮ শতাংশ নিয়ে যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস। জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে বিশ্বে শীর্ষ দশ দেশের তালিকায় ৮১.৭ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ডেনমার্ক। সূচকে ৮১.৫ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে যৌথভাবে চতুর্থ স্থানে রয়েছে নরওয়ে ও সুইডেন। পঞ্চম স্থানে আইসল্যান্ড (৮১.৪ শতাংশ), ষষ্ঠ স্থানে ফিনল্যান্ড (৮১.২ শতাংশ), সপ্তম স্থানে ইতালি (৮০.৭শতাংশ), অষ্টম স্থানে যুক্তরাজ্য (৮০.৩ শতাংশ), নবম স্থানে আয়ারল্যান্ড (৮০.২ শতাংশ) এবং দশম স্থানে রয়েছে স্পেন (৮০.০ শতাংশ)।

 

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ (৯৩তম), এরপরেই রয়েছে ভারত (৯৫তম)। ১৩৭তম অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের স্কোর ২৩.৬ শতাংশ। বাংলাদেশের আগে রয়েছে ভুটান (১১৭তম)। আর পরে রয়েছে নেপাল (১৪০) ও পাকিস্তান (১৫০)।

 

নেদারল্যান্ডসের আইন বিষয়ক অধ্যাপক ও গবেষক প্রফেসর ডক্টর দিমিত্রি কোচেনভ এবং সুইডেনের আইনজীবী ডক্টর ক্রিশ্চিয়ান এইচ ক্যালিনের সংকলিত গবেষণা অনুসারে, ‘খুবই শক্তভাবে ব্রেক্সিট’ অনুসরণ করায় যুক্তরাজ্যকে আগের অবস্থান হারাতে বসেছে। অধ্যাপক কোচেনভ বলেন, ‘যুক্তরাজ্য কোনো সংঘাতের মধ্যে না গিয়েই তার জাতীয়তার মানকে গভীরভাবেক্ষুণ করার ক্ষেত্রে বিশ্ব রেকর্ড তৈরি করতে চলেছে।’
সূচকে গতবছরের চেয়ে চার ধাপ এগিয়ে চীনের অবস্থান ৫৬তম। দুই ধাপ এগিয়ে রাশিয়ার অবস্থান ৬২তম স্থানে রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত ৪২তম স্থান অর্জন করে তাদের সর্বোচ্চ র‌্যাঙ্ক অর্জন করেছে। এ বছরের কিউএনআই-এর নিচে তিনটি দেশ হলো দক্ষিণ সুদান (১৫.৯ স্কোর নিয়ে ১৫৭তম) আফগানিস্তান (১৫.৪ স্কোর নিয়ে ১৫৮ তম) এবং সোমালিয়া (১৩.৮ স্কোর নিয়ে ১৫৯ তম)।
নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয়টি ফ্রান্সে খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। দেশটিতে কোনো দম্পতি তিন সন্তানের বাবা-মা হলে যে কোনো জিনিসপত্র কেনাকাটার উপরে ডিসকাউন্ট দেয়া হয়। ১৬ সপ্তাহ ধরে ১০০ শতাংশ পেইড মাতৃত্বকালীন ছুটি উপভোগ করতে পারেন বেসরকারি খাতের কর্মীরাও।

 

কারণ ফ্রান্সে ৮১ শতাংশ নারীই স্বনির্ভর। কর্মজীবনে অত্যধিক ব্যস্ত থাকায় পরিবারতন্ত্রের উপর খুব বেশি জোর দেন না তারা। গৃহবধু এবং মায়েদের জন্য বিশেষ পেনশনের ব্যবস্থাও রয়েছে সে দেশে। সূত্র : ডেইলি মেইল।