মিয়ানমার থেকে

১মাসে ২১ হাজার ৫৬০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানির পরেও দামের উর্ধ্বগতি!

গিয়াস উদ্দিন ভূলু, কক্সবাজার জার্নাল   ◑
টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে আসা পেঁয়াজ আমদানি আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও রোধ করা সম্ভব হচ্ছেনা দামের উর্ধ্বগতি।

এ বন্দর দিয়ে আগের চেয়ে গত অক্টোবর মাসের তুলনায় নভেম্বর মাসে ৭১৭ মেট্রিকটন পেঁয়াজ বেশি আমদানি হয়েছে। তবে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি বাড়লেও পেঁয়াজের বাজারে এখনো মুল্যের উর্ধ্বগতি লেগে আছে।

স্থলবন্দর শুল্ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মিয়ানমার থেকে টেকনাফ বন্দরে গত নভেম্বর মাসে মিয়ানমার থেকে ২১ হাজার ৫৬০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এর আগে অক্টোবর মাসে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল ২০ হাজার ৫৪৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এছাড়া সেপ্টেম্বর ও আগস্ট মাসে যথাক্রমে ৩ হাজার ৫৭৩ মেট্রিক টন ও ৮৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল।
টেকনাফ স্থলবন্দর শুল্ক কর্মকর্তা আবছার উদ্দীন জানান, মিয়ানমার থেকে নভেম্বর মাসে পেঁয়াজ আমদানি স্বাভাবিক ছিল। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ব্যবসায়ীরা মুলত অক্টোবর মাস থেকে লাগাতার মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করে বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

গত দুই মাসে ৪২ হাজার ৪০৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়। তবে দেশে পেঁয়াজের চাহিদা থাকায় আগামীতে আমদানি আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন।

পেঁয়াজ আমদানিকারকরা বলেন, মিয়ানমার থেকে আগের তুলনায় নভেম্বর মাসে ব্যবসায়ীরা বেশি পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানির চেষ্টা করেছে। এদেশে পেঁয়াজের সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে মিয়ানমারের ব্যবসায়ীরাও পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়িয়ে দেওয়ায় এবং অন্যদিকে চাহিদার তুলনায় পণ্য উদ্ধৃত না থাকায় পেঁয়াজের দাম কমছেনা বলে মনে করি। তবে আমরা সব আমদানিকারক নিজেদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্ছ চেষ্টা করছি পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রাখারর জন্য।

অভিযোগ উঠেছে, মিয়ানমার থেকে গত দুই মাসে রেকর্ড পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করার পরও দেশের বিভিন্ন এলাকার সাথে পাল্লা দিয়ে স্থানীয় বাজার গুলোতে পেঁয়াজের মুল্যের উর্ধ্বগতি বেড়েই চলছে। কিছুতেই রোধ করা সম্ভব হচ্ছেনা পেঁয়াজের মুল্য। এদিকে প্রতিনিয়ত মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থ’লবন্দর বেশি পরিমান পেঁয়াজ আমদানি হলেও বন্দরের তিন কিলোমিটার দূরত্বে থাকা বাজার গুলোতে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা করে। এছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলাতে পেঁয়াজের দাম আরো চড়া বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

তথ্য সুত্রে জানা যায়, মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ গুলো টেকনাফ স্থলবন্দরে খালাস হওয়ার পর ট্রাক বোঝাই করে সেগুলো চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের বিভিন্ন আড়তে নিয়ে যায় ব্যবসায়ীরা। সেখান থেকে একাধিক হাত বদল হয়ে পেঁয়াজ গুলো সরবরাহ হয় দেশের বিভিন্ন এলাকায়। আড়তদার,পাইকারী,খুচরা ব্যবসায়ীদের মধ্যে হাত বদল করার সময় পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি করা হয় বলে জানা যায়।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সাইফ বলেন, স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রাখতে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি রোধ করার চেষ্টা করার পাশাপাশি আরো বেশি পরিমাণ পেঁয়াজ আমাদানি করার জন্য ব্যবসায়ীদের উদ্ধুদ্ব করা হচ্ছে।

সাধারন ক্রেতাদের অভিযোগ, মিয়ানমার থেকে কম দামে প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি হলেও স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুতেই কমে আসছেনা। মিয়ানমার থেকে যে পরিমান পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে তাতে পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা অতিক্রম করার কথা নয়।

অথচ সে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ২০০ টাকার চেয়ে আরো অধিক দামে। এছাড়া কোন কোন খুচরা দোকানে পেঁয়াজের দেখা মিলছেনা।
টেকনাফ স্থলবন্দর ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট এর ব্যবস্থাপক মোঃ জসিম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ গুলো দ্রুত খালাস করার জন্য আমরা রাতদিন কাজ করে যাচ্ছি।

কম সময়ের মধ্যে পেঁয়াজ খালাস করার জন্য পর্যাপ্ত শ্রমিকও রয়েছে। আমদানিকারকরা পেঁয়াজ গুলো খুব সহজেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় রপ্তানী করতে সক্ষম হবে।