পলাশ বড়ুয়া ◑
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা কারণে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষের মাঝে তুষের লাকড়ী বিতরণের নামে চলছে প্রতারণা। উপকারভোগীর নামে তালিকা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে কেউ লাকড়ী নিয়ে বাড়ি ফেরেনি। কারণ লাকড়ীবাহী কার্ভাড ভ্যান গুলো পুনরায় ফেরত নিয়ে গেছে বিতরণের জন্য নিয়ে আসা এইসব লাকড়ী। ফলে উপকারভোগীরা ৪/৫শ টাকা পেলেও অসাধু সিন্ডিকেট সদস্যরা হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
সরেজমিন, গত সোমবার উখিয়া কলেজ মাঠে স্থানীয়দের মাঝে বিতরণের উদ্দেশ্যে যে সব কার্ভাড ভ্যান করে আনা হয় তুষের লাকড়ী। দিন শেষে ঐ গাড়ীতে করেই পুনরায় ফেরত নিয়ে যায় লাকড়ী গুলো। একই চিত্র এর আগের দিন উখিয়া উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে। অথচ তীব্র রোদের অসংখ্য নারী-পুরুষ ছোট ছোট শিশুদের কোলে নিয়ে ঘন্টার ঘন্টার পর দাঁড়িয়ে থাকার পর ১১০০টাকা মূল্যের ১শ কেজি তুষের লাকড়ী দেয়া হয়। যা অনেকটা কাগজ-কলমে সীমাবদ্ধ ছিল।
কেননা, ৫শ টাকার বিনিময়ে স্বাক্ষর ও টিপসহি নিয়ে এনজিও কর্মীদের যোগসাজসে সিন্ডিকেট সদস্যদের হাতে তুলে দিচ্ছে এসব লাকড়ী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন উপকারভোগীরা জানিয়েছেন, আমরা এতসব বুঝিও না। লাকড়ীর জন্য আসতে বলেছে। দীর্ঘ সময় রোদে দাঁড়িয়ে থেকে ৫শ টাকা পেলাম। এমন হবে আগে জানলে আসতামও না। এভাবে কি স্থানীয়দের ক্ষতি পোষাবে ? সরকার বা এনজিও গুলো স্থায়ী উন্নয়নের জন্য কিছু ভালো হতো।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিতরণকাজে দায়িত্বরত ব্র্যাকের শাখা ব্যবস্থাপক গোপাল চন্দ্র বর্মণ জানান, রোহিঙ্গাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষের মাঝে এসব লাকড়ী বিতরণ করা হচ্ছে। রাজাপালং ইউনিয়নের ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে ৮১০জন উপকারভোগীকে আজকে লাকড়ী বিতরণ করা হয়েছে। ব্র্যাক ও মুক্তি যৌথ ভাবে এসব লাকড়ী বিতরণ করছে। তবে এদের মধ্যে স্থানীয় চেয়ারম্যানের তালিকাভুক্ত উপকারভোগী রয়েছে ৪৫০জন। শুধুমাত্র একবার লাকড়ী বিতরণ করা হবে। ঘন্টার পর ঘন্টা তীব্র রোদে দাঁড় করিয়ে রেখে সিন্ডিকেট সদস্যরা হাজার টাকার লাকড়ী ৫শ টাকায় ক্রয়ের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। এখানে কোন অফিসে কি হচ্ছে না এবং যে গাড়ীতে নিয়ে গেছে সে গাড়ী করে ফেরত নিয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।
ইউএনএইচসিআর এর অর্থায়নে লাকড়ী গুলো বিতরণ করছে ব্র্যাক ও মুক্তি। তবে কারা এসব সাপ্লাই করছে, কারা পুনরায় গাড়ীভর্তি করে নিয়ে যাচ্ছে না এসব বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি বিতরণে দায়িত্বরত জহিরুল ইসলাম।
এ প্রসঙ্গে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ইউএনসিআর উদ্যোগে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে লাকড়ী বিতরণের কথা ছিল। স্থানীয় কোন কোন এনজিও এসব কাজে দায়িত্বে রয়েছেন ? কোথায় বিতরণ করা হবে ? উপকারভোগী কারা সে বিষয়ে তিনি তাৎক্ষণিক জানাতে পারেননি। তবে লাকড়ী গুলো উপকারভোগীদের মাঝে দেয়ার নামে ফেরত নিয়ে আসার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-