দায়সারা ভাবে চলছে উখিয়া উপজেলা যুবলীগ, রয়েছে নানা অভিযোগ

শরীফ আজাদ ◑

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের শীর্ষ নেতারা ক্যাসিনো বির্তকে জড়ানো পর থেকে যুবলীগের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নানা সমীকরণ। যুবলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির মধ্যদিয়ে তার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের নীতিনির্ধরকরা। যার কারণে কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত বৈইছে পরিবর্তনের হাওয়া। চলছে নানা আলোচানা-সমালোচনা। এর ধারাবাহিকতায় কক্সবাজারের উখিয়ায়ও চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।

উখিয়া উপজেলা যুবলীগের গঠিত ৭১ সদস্যের কমিটি মেয়াদোত্তর্ণী হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। এরপরও সম্মেলনের প্রস্তুতি সংক্রান্ত কোন কার্যক্রম পরিলক্ষিত না হওয়ায়, তৃণমূল নেতৃকর্মীদের মাঝে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে অনেকের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে অদৃশ্য কোন্দল। যে কোন সময় এ কোন্দল প্রকাশ্যে আসতে পারে বলে মনে করছেন একাধিক যুবলীগ নেতা। তারা বলছেন, গত ২ বছর ধরে কোন কর্মীসভা, বর্ধিত সভা, জরুরী সভার আয়োজন করেনি বর্তমান কমিটি। এমনকি ৭ম জাতীয় কংগ্রেসকে সফল করতে বা কংগ্রেসে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি মূলক কোন আলোচনা করেনি তারা, জাতীয় দিবস পালনের ক্ষেত্রেও বরাবরই তাদের দায়সারা মনোভাব পরিলক্ষিত হয়েছে।

উখিয়া উপজেলা যুবলীগের আওতাধীন পাঁচটি ইউনিয়নের ৩টিতে (হলদিয়াপালং, জালিয়া পালং, পালংখালী) মেয়াদোত্তীর্ণ অহবায়ক কমিটি ও ২টিতে (রত্নাপালং ও রাজাপালং) মেয়াদোত্তীর্ণ পূর্ণাঙ্গ কমিটি রয়েছে। তাছাড়া বেশির ভাগ ইউনিয়নই ওয়ার্ড কমিটি শুন্য। যার কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রম অনেক নেই বললেই চলে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবলীগ নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২৫ মে ২০১৪ সালে আমাদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। গত ২৫ নভেম্বর সাড়ে ৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। এরপরও সম্মেলন করার কোন ইচ্ছাই বর্তমান নেতাদের নেই। যুবলীগকে তাদের পৈত্রিক সম্পদের মতন আগলে রেখেছে। বিভিন্ন কারণে নেতাকর্মীরা মুখ খোলতে পারছে না। তবে বেশির ভাগ নেতাকর্মী এ কমিটির পরিবর্তন চায়।

উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসাইন আবু বলেন, সারাদেশ ব্যাপী শুদ্ধি অভিযান চলছে। বর্তমান সরকার তৃতীয় বারের মতন ক্ষমতায় থাকায় অনেকেই সাংগঠনিক কার্যক্রমকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। নেতাকর্মীদের মধ্যে সমন্বয়ের খুবই অভাব। তাছাড়া ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক লেনদেন বিষয়েও তৃর্ণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তুষ রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।

উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি এডভোকেট এটিএম রশিদ বলেন, প্রায় ২ বছর ধরে চোখে পড়ার মতন কোন কার্যক্রম উখিয়া উপজেলা যুবলীগ করতে পারিনি। সাংগঠনিক গঠনতন্ত্র মতে ২/৩ মাসের ব্যবধানে বর্ধিত সভা করার কথা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে কোন সভা হয়নি। জাতীয় কংগ্রেসে অংশগ্রহণের জন্য কোন প্রকার আলোচনা পর্যন্ত করা হয়নি। তাদের পছন্দের কয়েজন কর্মী নিয়ে শীর্ষনেতারা জাতীয় কংগ্রেসে অংশগ্রহণ করেছেন। সাংগঠনিক অচলাবস্থার ব্যাপারে জেলা যুবলীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের সু-নজর আশা করেছেন এই যুবলীগ নেতা।

সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে উখিয়া উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন বলেন, সাংগঠনিক গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সব কার্যক্রম পরিচালনা করছি। সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার সকল তথ্য প্রমাণ আমাদের কাছে আছে।

জাতীয় কংগ্রেসে অংশগ্রহণের ব্যাপারে তিনি জানান, ১১ নভেম্বর যুবলীগের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সভাপতি মুজিবুল হক আজাদ সকল নেতাকর্মীকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, যারা জাতীয় কংগ্রেসে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক তারা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করে অথবা জেলা যুবলীগ কর্তৃক গঠিত উপ-কমিটির সাথে যোগাযোগ করে জাতীয় কংগ্রেসে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।