উখিয়ায় শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাস!

হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া ◑

বাংলাদেশে উচ্চমাত্রার শব্দদূষণকে শব্দ সন্ত্রাস বলে। উখিয়ার সচেতন মহল বলছেন, উখিয়ায় শব্দ দূষণের মাত্রা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

শব্দদূষণ এখন এমন পর্রযায়ে পৌঁছেছে যে- একে জীবনবিনাশী শব্দ সন্ত্রাস নামে অভিহিত করা যায়। অপদস্ত হওয়ার ভয়ে বেশির ভাগ মানুষ কোথাও অভিযোগ না করে নির্রবিবাদে উচ্চশব্দের ভয়ঙ্কর যন্ত্রণা সহ্য করছেন। শব্দ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের আইনের প্রয়োগ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

মঙ্গলবার উখিয়া কেন্দ্রীয় ফেমাস সংসদকে উচ্চ শব্দ নিয়ে এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে উখিয়া সচেতন মহল এসব কথা বলেন।

এ সময় শব্দ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরী বলে মত দেন তারা। অন্যথায় উখিয়াকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে বলে মনে করেন তারা। উখিয়া-টেকনাফসহ পুরো কক্সবাজারে শব্দ দূষণ এখন মারাত্নক পর্রযায়ে পৌঁছেছে। তাই এটিকে এখন শব্দ সন্ত্রাস উল্লেখ করে শব্দ দূষণ প্রতিরোধ আইন বাস্তবায়নসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদী ও সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেন্দ্রীয় ফেমাস সংসদ ও সূর্রযোদয় সংঘ। সুন্দর জীবনে শব্দ দূষণ এখন জীবনবিনাশী শব্দ সন্ত্রাস। গভীর সংকটে আমাদের উখিয়ার পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য। সমাধানের উপায় কী? শীর্রষক এই আলোচনার আয়োজন করে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, কক্সবাজারসহ উখিয়ার বিভিন্ন স্থানে শব্দদূষণের মাত্রা ৮০ ডেসিবেল থেকে ১১০ ডেসিবেল। কোনো কোনো স্থানে তা আরও বেশি। এই মাত্রা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে যানবাহনের উচ্চ মাত্রার হর্রন, নির্রমাণজনিত শব্দ, ইটভাঙা মেশিনের শব্দ, ভটভটি, অতিউচ্চ মাত্রার মাইকিং ও গানবাজনার মাধ্্যমে শব্দ সন্ত্রাস করা হচ্ছে। তারা বলেন, শব্দ দূষণের কারণে মানুষের শ্রবণশক্তি, কমে যাচ্ছে। রাতের ঘুম হারাম হচ্ছে। হ্নদকম্পন ও নতুন হ্নদরোগী বাড়ছে, কাজের ইচ্ছাশক্তি হ্রাস এবং শিক্ষার্রথীদের লেখাপড়ার মারাত্নক ক্ষতি হচ্ছে। সুতরাং এই শব্দ সন্ত্রাস যে কোনো মূল্যে বন্ধ করতে হবে।

আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ফেমাস সংসদের উপদেষ্ঠা সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, শব্দদূষণ বন্ধে সরকারের কোনো আগ্রহ নেই। আইনকে তারা প্রয়োগ করতে চায় না। করে না কারণ, মানুষ এই আইন মানতে চায় না। এদিকে ডাক্তার মোহাম্মদ আয়াছ বলেন, গর্রভাবস্থা থেকেই উচ্চশব্দ শিশুর ক্ষতি করে। শিশুর নার্রভ সিস্টেমম বিকাশে বাধা পায়। তা ছাড়া উচ্চশব্দে শিশু বড় হতে থাকলে মানসিক বিকাশ তো ক্ষতিগ্রস্থ হয়ই। এ সময় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ আইনের পূর্রণ বাস্তবায়ন, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে মোবাইল টিম গঠন করে শব্দ সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া, গাড়িতে উচ্মাত্রার হর্রণ যাতে না থাকে তা নিশ্চিত করা,অপ্রয়োজনীয় হর্রণ ব্যবহার না করার বিষয়ে চালকদের প্রশিক্ষণ ও সচেতন করাসহ ১৩ দফা দাবি জানানো হয়।

আলোচনার শুরুতে লিখিত বক্তব্য রাখেন মোহাম্মদ নুরুল আলম , মোহাম্মদ ইসলাম, মুবিনুল হক, আমির হামজা, শহিদুল ইসলাম, মোহাম্দ ইউনুছ, সাব্বির আহাম্মদ প্রমুখ।