উখিয়ায় বন বিভাগের অভ্যন্তরে উৎকোচ বাণিজ্যের ঘটনায় তোলপাড়!

ফারুক আহমদ, উখিয়া ◑
উখিয়ার ইনানী রেঞ্জে মামলা দিয়ে স্পেশাল টহল দলের ওসি কর্তৃক মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় বন বিভাগের অভ্যন্তরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের স্পেশাল টহল দলের ওসি তারেকুর রহমানের বিরুদ্ধে উৎকোচ বাণিজ্যসহ পাহাড় সমান অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এহেন গর্হিত কর্মকান্ডে  জনমনে চরম অসন্তোষ সহ মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার দক্ষিণ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, লিখিত ভাবে অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ঘটনায় প্রমাণ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি ভোক্তভোগীদেরকে অভিযোগ নিয়ে আসার পরামর্শ দেন। এ সংক্রান্ত সংবাদ অন লাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে বনবিভাগ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর সকালে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের স্পেশাল টহল দলের ওসি তরিকুর রহমানের নেতৃত্বে বনকর্মীরা টেকনাফের শাপলাপুর বাজার হতে একটি খালি  ডাম্পার (চট্টমেট্টো য় ৫১৩) জব্দ করে। ওই সময় উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের পাইন্যাশিয়া  জুম্মাপাড়া গ্রামের মনজুর আলমের ছেলে মোহাম্মদ রিফাতকে বিভাগীয় বন কার্যালয়ে নিয়ে আটক রাখে। পিতা মনজুর আলম অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলেকে বিনা অপরাধে মারধর আটক রেখে  মামলার হুমকি দিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। ডাম্পার গাড়ি ও ড্রাইভারকে ছেড়ে দেয়ার কথা বলে গাড়ির মালিকের নিকট হতে দু’দফায় এক লক্ষ আদায় করে।
পরিবারের পক্ষে অভিযোগ চাপ প্রয়োগ ও জিম্মি করে টাকা নেওয়ার পরও ভিন্ন একটি মামলায় ড্রাইভার রিফাতকে আসামি করা হয়েছে।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে ইনানী বিটের ফরেষ্টার ও মামলার বাদী ম্যাকলিট চাকমা বলেন, আটক বা ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানিনা। স্পেশাল টহল দলের ওসি তারেকুর রহমানের কথা মতে মামলাটি করা হয়েছে।
খোজ খবর নিয়ে জানা গেছে, সকাল ১০ টায় নিদানিয়া মেরিন ড্রাইভ সড়ক হতে একটি বালু ভর্তি ডাম্পার ( নম্বর চট্টমেট্টো য় ৩২৯) জব্দ ও মোহাম্মদ আলী নামক ড্রাইভারকে আটক করে স্পেশাল টহল দলের ওসি। অভিযোগেে প্রকাশ মোটা অংকের টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বন আইনে মামলা করেন  ইনানী বিট কর্মকর্তা। যার মামলা নং হচ্ছে পিওআর ০৫ /ইবি তারিখ ৩০/১১/২০১৯। আর ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে নিরপরাধ রিফাতকে।  তবে বালুগুলো বৈধ ছিল বলে জানা গেছে। ডাম্পারের মালিক মোহাম্মদ মঞ্জুর স্বীকার করে বলেন কক্সবাজার বিভাগীয় বন কার্যালয়ে গিয়ে টহল দলের ওসি’র দাবীকৃত উৎকোচের টাকা দেয়া হয়।
স্পেশাল টহল দলের ওসি তারেকুর রহমান কারো কাছ থেকে টাকা আদায়ের কথা অস্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে ভুল তথ্য দিয়েছে। তিনি কারো কাছ থেকে টাকা নেয়নি বলে জানান।
জালিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন ডাম্পার গাড়ি জব্দ ও ড্রাইভার হেলপারকে আটকের নামে জিম্মি করে নিরীহ লোকদের নিকট হতে এক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া খুবই দুঃক জনক।
তিনি এ ধরনের চরম গর্হিত ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেন।
এদিকে উখিয়া ও ইনানী রেঞ্জর আওতাধীন বিট ফরেষ্টার গন স্পেশাল টহল দলের ওসির অনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে বিব্রত। এহেন গর্হিত কর্মকান্ড নিয়ে বন বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।