আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস উপলক্ষে পালস এর আয়োজনে র‍্যালী ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা

নিজস্ব প্রতিবেদক •


আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে অস্ট্রেলিয়ান এইড-এর অর্থায়নে, ব্রাক কারিগরি এর সহযোগিতায় ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পালস (প্রোগ্রাম ফর হেল্পলেস এন্ড লেগড সোসাইটিস) কর্তৃক “রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা প্রকল্প” এর উদ্যোগে থাইংখালী উচ্চ বিদ্যালয় ও থাইংখালী দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে র‍্যালী ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়।

বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল “বর্ণবাদ-শান্তি ও সম্প্রীতির অন্তরায়”।

থাইংখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক কমরুদ্দিন মুকুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বির্তক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উখিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাঈদ মুহাম্মদ আনোয়ার।

অনুষ্ঠানে মডারেটরের দায়িত্বে ছিলেন থাইংখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক সাইদুর রহমান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন এনজিও পালস-এর রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার মোঃ খাইরুল আলম।

বক্তব্য রাখেন এনজিও পালস-এর রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা প্রকল্পের ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর মোঃ শফিকুল ইসলাম খান, এনজিও পালস-এর রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা প্রকল্পের ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর ফারজানা আক্তার বিজলী, থাইংখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু বক্কর, থাইংখালী উচ্চ বিদ্যালযের শিক্ষক রোকসানা বেগম,থাইংখালী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক ওয়াইদুল্লাহ, উখিয়া প্রেস ক্লাবের সদস্য আবদুল্লাহ আল আজিজ।

তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ‘বর্ণবাদ-শান্তি ও সম্প্রীতির অন্তরায়’ নিয়ে প্রতিযোগীরা বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। দুটি দলের মধ্যে বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিষয়ের বিপক্ষে অবস্থানকারী দলকে বিচারকগণ বিজয়ী ঘোষণা করে।

বিজয়ী দলে বক্তা হিসেবে ছিলেন থাইংখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী (দলনেতা) আয়েশা সিদ্দিকা হ্যাপি, আবদুল্লাহ আল ফাহিম ও মোঃ রায়হান উদ্দিন।

রানার্স আপ দলে বক্তা হিসেবে ছিলেন, থাইংখালী দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র (দলনেতা) এরশাদ উল্লাহ,ছাত্রী উম্মে সালমা, আসরাব বিন মালেক।

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় থাইংখালী উচ্চ বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসার তিনজন শিক্ষক বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন।

উখিয়া প্রেসক্লাব সভাপতি সাঈদ মুহাম্মদ আনোয়ার প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে বলেন, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্বের প্রত্যেক মানুষকে অসহিংসতা অনুশীলনের মাধ্যমে শান্তির আদর্শগুলো শক্তিশালী করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে।আমাদের ক্ষুদ্র ও পিছিয়ে পড়া জাতিগোষ্ঠীর প্রতি অবজ্ঞা বা ঘৃণামিশ্রিত বক্তব্য দেওয়া এবং সহিংসতা বন্ধ করার পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের একত্রে জাতিবৈষম্য আচরণ প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে এবং জাতিবৈষম্য বিরোধী প্রচারণা অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের মধ্যে বিদ্যমান সম্প্রীতির বন্ধনকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।

প্রধান অতিথি আরও বলেন, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে মানবজাতির সামগ্রিক উন্নয়ন ও কল্যাণ অর্জন কখনোই সম্ভব হবে না। বিশ্বকে একটি পরিবার মনে করে সবাইকে কাজ করতে হবে। ধনী-দরিদ্র, উন্নত-অনুন্নত দেশের ভেদাভেদ ভুলে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিশ্বকে সাজাতে হবে। তাই জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে পৃথিবীর সব দেশের মানুষ পরস্পরকে শ্রদ্ধা করতে হবে। সময় খুব দ্রুত চলে যাচ্ছে। তাই কারো দিকে তাকিয়ে না থেকে আসুন আমরা আমাদের প্রয়াস অব্যাহত রাখি, আমাদের কণ্ঠকে সোচ্চার করি। একদিন অবশ্যই সবার এই সম্মিলিত প্রচেষ্টা সাফল্য বয়ে আনবে, একটি শান্তির পৃথিবী প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ।

এছাড়াও তিনি উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জ্ঞানমূলক তথ্য প্রদান করেন এবং শিক্ষার্থীরা যাতে এই চর্চা অব্যাহত রাখে সে বিষয়ে উৎসাহ দেন।

প্রতিযোগিতা শেষে উভয় দলের মাঝে ক্রেষ্টসহ বিভিন্ন পুরস্কার বিতরণ করেন বির্তক প্রতিযোগীতার প্রধান অতিথি সাংবাদিক সাঈদ মুহাম্মদ আনোয়ার। এছাড়া বিজয়ী দলের আয়েশা সিদ্দিকা হ্যাপিকে শ্রেষ্ঠ বক্তার পুরস্কার প্রদান করা হয়।

পরিশেষে অনুষ্টানের সভাপতি কমরুদ্দিন মুকুল তার বক্তব্যে এই অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ও তাঁর বিদ্যালয়কে ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করার জন্য পালস কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ও ভবিষ্যতে এরকম শিক্ষণীয় অনুষ্ঠান আয়োজন করার আহবান জানান।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন থাইংখালী উচ্চ বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

এদিকে, এনজিও পালস-এর উদ্যোগে সোনার পাড়া আহমদিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও সোনার পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী নিয়ে বির্তক প্রতিযোগিতা ও র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়। এতে সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যায়ল দল জয়লাভ করেন। এছাড়াও কানজর পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়েও পালসের উদ্যোগ বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।