নিজস্ব প্রতিবেদক •
উখিয়া রত্নাপালং ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের চৌকিদার নাজির হোছনের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক প্রয়োজনীয় সনদে স্বাক্ষর নিতে টাকা নেওয়া ও বিভিন্ন কেলেংকারির পাহাড় সমান অভিযোগ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা।
এ অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য দায়িত্ব প্রদান করেন উপজেলার ট্যাগ অফিসার আব্দুল করিমকে (একটি বাড়ি একটি খামার)।
তিনি জানান, মাঠ পর্যায়ে তদন্ত সাপেক্ষে সত্য-মিথ্যা নিখুঁতভাবে যাচাই বাচাই করে যেটি বেরিয়ে আসবে সেই তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে প্রতিবেদনটি প্রেরণ করা হবে।
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, রত্নাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের চৌকিদার নাজির হোছেন আইনি পোশাক পড়ে প্রতিনিয়ত বে-আইনিভাবে কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় সাধারণ মানুষের সাথে।
জন্মসনদ,মৃত্যুসনদ,ওয়ারিশ সনদসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপাতি স্থানীয় চৌকিদারের স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক হওয়ায় বাংলাদেশী নাগরিক সেবায় স্বাক্ষর নিতে গেলে টাকা ছাড়া কথাও বলতে রাজি হন এই চৌকিদার। একটা স্বাক্ষরে ৫০০ টাকার বেশি ভিজিট পেলে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য থাকেন তিনি। নির্বাচিত মেম্বার চেয়ারম্যানদের চেয়ে বেশি ক্ষমতাবান এই চৌকিদার। একজন বাংলাদেশী নাগরিক ইউনিয়ন পরিষদের সেবা পেতে মেম্বার চেয়ারম্যানদের স্বাক্ষর পেলেও চৌকিদারের স্বাক্ষর পেতে অনেক কষ্ট চলে যায় সাধারণ মানুষের।
তার এমন কর্মকান্ডে সাধারণ জনগন ক্ষুব্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ গনস্বাক্ষরে লিখিতভাবে জমা দেন।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, এই চৌকিদার পাড়াপ্রতিবেশি থেকে শুরু করে পুরা ৪নং ওয়ার্ডবাসীর সাথে জগড়া দন্দবিবাদ লেগেই থাকে। যেখনো চৌকিদারী সেবার জন্য গেলে আগে টাকা পরে কথা এমন ভাব নিয়ে সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি করতে থাকে।
সম্প্রতি ভোটার হালনাগাদের প্রয়োজনীয় কাগজপাতিতে একটা স্বাক্ষর ৫০০ টাকার উপরে বিক্রি করেছেন তিনি।
স্থানীয় ভুক্তভোগী মোঃ হোসেন জানান,আমার বাড়ি চৌকিদারের বাড়ির পাশে আমি এবং আমার বোন ওয়ারিশ সনদে স্বাক্ষর নিতে গেলে তাড়িয়ে দেন। পরে অন্যভাবে ৫০০ টাকা দিয়ে কোন প্রকারে আমার স্বাক্ষর নিয়েছি আমার বোনের স্বাক্ষর নিতে পারি নাই। আমরা তো আর রোহিঙ্গা নই। চৌকিদার আমার পরস্পর গোষ্ঠী আমি রোহিঙ্গা হলে চৌকিদার ও রোহিঙ্গা হবে। এই বিচার কাকে দিবো। এরকম চৌকিদার থেকে নিস্তার দিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
একই এলাকার শমশু মিয়া জানান, ছেলের জন্মনিবন্ধন করতে চৌকাদের স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক হওয়াই তার কাছে গেলে স্বাক্ষর দিতে অপারগ প্রকাশ করে আমাকে তাড়িয়ে দেন। পরে অনেক আকুতি মিনতি করার পর জিজ্ঞেস করলাম আমার ছেলে কি রোহিঙ্গা নাকি সে বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে নাই? নাকি সে বাংলাদেশের নাগরিক সেবা পাবে না এমন প্রশ্নের উত্তরে চৌকিদার বলেন ২০০০ হাজারের নিছে জন্মনিবন্ধন ফরমে স্বাক্ষর করে না চৌকিদার। এই বলে চলে যান তিনি। পরে এ বিষয়টা স্থানীয় মেম্বার এবং সাবেক চেয়ারম্যান খাইরুল আলম চৌধুরী ও বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল হুদাকে অবগত করি। উনারা সামাধান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন আমাকে।
এরকম অহরহ ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা এসব তথ্য তুলে ধরেন গনমাধ্যমকে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত চকিদার নাজির হোসেন বিষয়গুলো অস্বিকার করে বলেন, কেউ কেউ খুশি হয়ে টাকা দিলে সেটা আমার দুষ কি। জোর করে তো টাকা নি নাই।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য অলি আহমদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চৌকিদারের বিষয়টা অনেকেই বলাবলি করতেছে শুনলাম, তবে আমি নিজের চোখে দেখেনি। এসব বিষয়ে চেয়ারম্যান অবগত রয়েছেন। চেয়ারম্যান মহোদয় এখন গুরুতর অসুস্থ উনি সুস্থ হলে এসব বিষয়ে আমরা বসব এবং সুন্দর একটা সামাধাণ হবে বলে আমি মনে করি।
রত্নাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গুরুতর অসুস্থতায় চট্রগ্রাম আইসিউতে ভর্তি রয়েছেন যার কারণে তারঁ বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-