বস্তাবন্দি স্বামীর লাশ দেখে বাকরুদ্ধ দুই রোহিঙ্গা নারী

কক্সবাজার প্রতিনিধি •

কক্সবাজার টেকনাফের হ্নীলা ইউপির জাদিমুড়া এলাকায় নাফ নদীর তীরে বস্তাবন্দি দুই রোহিঙ্গা শরণার্থীর মরদেহ ভেসে এসেছে। খবর পেয়ে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের একটি টিম লাশ দুটি উদ্ধার করে। লাশ দেখে বাকরুদ্ধ হয়েছেন তাদের স্ত্রী দুই রোহিঙ্গা নারী।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে নাফ নদীতে ভাসমান অবস্থায় ওই মরদেহ দুটি পাওয়া যায়।

লাশ দুটি ক্যাম্প-২৬ এর এইচ ব্লকের হারুন রশিদের ছেলে শফিউল্লাহ প্রকাশ শবুল্লাহ (৩৫) ও মোচনি নয়াপাড়া রেজিস্ট্রার ক্যাম্পের আই ব্লকের শেড নং ৫৩৮-এর মোহাম্মদ নবীর ছেলে মোহাম্মদ ছালাম (২৮) প্রকাশের (চাকমাইয়া) বলে নিশ্চিত করেন তাদের স্বজনরা।

নদীর পাশে খেলা করা স্থানীয় ছেলেরা লাশ দুটি দেখে তাদের খবর দিলে তারা এসে বস্তার মুখ খুলে তাদের শনাক্ত করেন।

মোচনি আই ব্লকের বাসিন্দা নিহত মোহাম্মদ ছালামের স্ত্রী হাসিনা যুগান্তরকে জানান, ৮ দিন পরে আমি স্বামীর মরদেহ পেয়েছি। আমার স্বামীকে গত ৪ জানুয়ারি নাফ নদীর লাল দ্বীপে নবী হোছন সন্ত্রাসী বাহিনী ধরে নিয়ে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিয়েছিল। খবর পেয়ে এরপর থেকেই আমি আমার স্বামীর লাশ অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে লাশ ফিরে পেতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছিলাম; কিন্তু আজ নাফ নদীর তীরে বস্তাবন্দি ভাসমান অবস্থায় লাশটি পেয়েছি।

অপরদিকে নিহত শফিউল্লাহর স্ত্রী নুর কলিমা যুগান্তরকে জানান, আমার স্বামীকে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করছি। আমি আশা করব রোহিঙ্গা হলেও আমি এ দেশে সত্য বিচারটা পাব।

২৬নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মো. আলম জানান, আমার ভাইদের যে নবী হোছন বাহিনী হত্যা করেছে তার পরের দিন ওই নবী হোছন বাহিনীর ৬ সদস্যকে নাফ নদীর খড়ের দ্বীপ হতে কোস্টগার্ড বাহিনী অভিযান চালিয়ে ১৪টি অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গুলিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে আটক করেছে। এরপর হতে আমরা তাদের লাশ খুঁজতে খুঁজতে আজ হ্নীলা জাদিমুড়া এলাকার নাফ নদীর তীর পেয়েছি।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি মো. আব্দুল হালিম যুগান্তরকে নাফ নদীর তীর ভেসে আসা বস্তাবন্দি লাশ দুটি চাকমাইয়া স্বজনদের বলে দাবি করছে। যাচাই-বাছাই করে আইনি কার্যক্রম শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার মর্গে প্রেরণ করা হবে।