কক্সবাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সিলিন্ডার গ্যাস!

সৈয়দুল কাদের •

 

সিলিন্ডার গ্যাসের দাম কমেছে নামেই, বাজার বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। নির্ধারিত দামের চেয়ে ১৫০-২০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। অনেক ক্রেতা সিলিন্ডার গ্যাসের দাম শুনে হতাশ হচ্ছেন। ফলে সরকার গ্যাসের দাম দু’দফা কমিয়ে মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও এর সুফল পাচ্ছে না ক্রেতারা।

পরপর দুই মাস গ্যাসের দাম কমানোর ঘোষণা এলেও বাজারে এর প্রভাব নেই। কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে গ্যাস। এছাড়া গ্রামের দোকানগুলোতে আরো বেশী দামে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, পরপর দুই মাস কমার পর সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী রান্নার গ্যাসের (এলপিজি) ১২ কেজির সিলিন্ডারের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হওয়ার কথা এক হাজার ২৩২ টাকা। ৪ জানুয়ারি থেকে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়েছে। যার বিন্দুমাত্র প্রভাব নেই কক্সবাজারের বিভিন্ন দোকানে।

কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রির দোকানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি সিলিন্ডার ১৪০০-১৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা সরকার নির্ধারিত দরে চেয়ে ২০০ টাকারও বেশী।

কক্সবাজার শহরের উত্তর টেকপাড়ার সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবসায়ি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, সরকার দর নির্ধারণ করলেও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এজেন্ট এখনো গ্যাসের দাম কমাননি। তাই এখনেও কমানোর সুযোগ নেই। সরকার কত টাকা নির্ধারণ করেছে তা আমাদের জানা আছে।

মহেশখালীর চালিয়াতলীতে গ্যাস বিক্রি হচ্ছে ১৪৫০-১৪৭৫ টাকা দরে। গ্যাস বিক্রেতা রেজাউল করিম জানিয়েছেন, সরকার নির্ধারিত দরে কোথাও গ্যাস পাবেন না। আমরা যেভাবে পাইকারী দরে এনেছি ঠিক সেভাবেই বিক্রি করছি। এ বিষয়ে বড় এজেন্টদের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে। সরকার নির্ধারিত দামে গ্যাস বিক্রি করলে আমাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।

এদিকে সরকার নির্ধারিত দরে গ্যাস না পাওয়ায় অনেক ক্রেতাই হতাশা প্রকাশ করেছেন। মহেশখালীর কালারমারছড়া বাজারের সেলিম উল্লাহ জানিয়েছেন, সরকার দাম কমালেও খুচরে বাজারে কেন কমছে না তা আমাদের জানা নেই। সরকারের দেওয়া সুফল মাঠ পর্যায়ে সাধারণ মানুষ পাচ্ছেন না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ খতিয়ে না দেখলে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

কক্সবাজার শহরের টেকপাড়ার বাসিন্দা রাসেল চৌধুরী জানিয়েছেন, গ্যাস কিনতে অবাক হয়েছি। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অন্তত ২০০ টাকা বেশী। যা আমাদের জন্য হতাশার বিষয়। এটি মেনে নেওয়া যায় না। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি না থাকলে সরকারের দেওয়া সুফল জনগণ ভোগ করতে পারবে না। সরকার দাম বাড়ালে তা দ্রুত কার্যকর হয় আর কমালে তা কার্যকর না হওয়া দুঃখজনক। এর আগেও টানা কয়েক মাস বাড়ানোর পর গত ২ ডিসেম্বর মাসে সিলিন্ডারের দাম ১০২ টাকা কমায় সরকার। তখনও দাম কমার সুফল আমরা পাইনি।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন সুত্রে জানা যায়, দাম কমানোর নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি প্রতিটি আউটলেটে নতুন মূল্যতালিকা টানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত দামের বেশি কোনো ব্যবসায়ী বিক্রি করছে এমন অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে এমন নিদের্শার কোন বাস্তবায়ন নেই।