ঈদগাঁওতে অরক্ষিত গ্যাস সিলিন্ডার!

সেলিম উদ্দীন,ঈদগাঁও

কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও বাজারে লাইসেন্স বিহীন অরক্ষিতভাবে অবাধে চলছে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি। মান নির্ণয় ছাড়াই এসব সিলিন্ডার গ্রামীন জনপদের মানুষ ব্যবহার করছে। কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই বৃহত্তর ঈদগাঁও’র বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে এসব গ্যাস সিলিন্ডার।

এসব গ্যাস সিলিন্ডার থেকে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

এদিকে গত শুক্রবার ইসলামাবাদ বাঁশঘাটায় বাড়া বাসায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর বিভিন্ন স্থানে সিলিন্ডার বিক্রি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এক তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে, সিলিন্ডারের মাধ্যম গ্রাম অঞ্চল খাতে গ্যাস ব্যবহারের জন্য বিস্ফোরক অধিদফতরের কয়েকটি নীতিমালা রয়েছে। মহা বিস্ফোরক অধিদফতর কর্তৃক এসব নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য মনিটরিং সেলও রয়েছে। দেশের বেশকটি কোম্পানী গ্রাম অঞ্চল খাতে ব্যবহারের জন্য গ্যাস সিলিন্ডার তৈরি এবং বাজারজাত করছে। আর নীতিমালা ভঙ্গ করে এসব সিলিন্ডার এখন যত্রতত্র বিক্রি করা হচ্ছে। বিস্ফোরক অধিদফতর গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির জন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে বিক্রয় ও বিপণন লাইসেন্স প্রদান করলেও সাব-ডিলারের নামে এসব প্রতিষ্ঠান ঈদগাঁও বাজারে মুদি মালের মতো গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছে।

বিধি মোতবেক ১০টির বেশি সিলিন্ডার মজুদ রেখে বিক্রির ক্ষেত্রে বিস্ফোরক অধিদফতরের সনদ নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্ফোরক আইন ১৮৮৪ এর অধীনে গ্যাস সিলিন্ডার বিধিমালা ২০০৪-এর ৬৯ ধারা অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া অনাধিক ১০টি গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডারে মজুদ করা যাবে।

বিধির ৭০ ধারানুযায়ী এসব সিলিন্ডার মজুদ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং আগুন নিয়ন্ত্রক সরঞ্জাম মজুদ রাখতে হবে। সিলিন্ডার গ্যাস স্থাপনা প্রাঙ্গনে দিয়াশলাই বা আগুন লাগতে পারে এমন কোনো বস্তু বা সরঞ্জাম রাখা যাবে না। মজুদ করা স্থানের কাছাকাছি আলো বাতাসের উৎস থাকা যাবে না। এসব আইনের তোয়াক্কা না করে পান- চা-দোকান থেকে আরম্ভ করে বিভিন্ন স্টোরেও পাওয়া যায় এ সিলিন্ডার গ্যাসের বোতল।

বর্তমান সময়ে ঈদগাঁওতে অধিকাংশ পরিবারের একমাত্র ভরসা সিলিন্ডার গ্যাস। উপজেলার সর্বত্র বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যাচ্ছে অরক্ষিত অবস্থায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরকারী নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার দেদারছে বিক্রি করা হচ্ছে। দোকানের সামনে এমন কি ফুটপাথেও সিলিন্ডার ফেলে রেখে এ ব্যবসা নির্বিঘ্নে পরিচালনা করছেন ব্যবসায়ীরা। মুদির দোকান, হার্ডওয়ারের দোকান, ফ্ল্যাক্সি লোডের দোকানে মেশিনারি দোকানে, সারের ডিলার এবং চা-দোকানেও পাওয়া যাচ্ছে এ সিলিন্ডার গ্যাস।

অরক্ষিত অবস্থায় যত্রতত্র সিলিন্ডার ফেলে রেখে বিক্রির ফলে যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এসব দোকানে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র থাকলেও তা অকেজো ও মেয়াদোত্তীর্ণ। বর্তমানে সদরের ঈদগাঁওতে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারকারী প্রায় ৩০ হাজারেরও উপরে। ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নিজেদের মনগড়া ভাবে যেখানে সেখানে সিলিন্ডারের বোতল ফেলে রেখে ব্যবসা করছে। বেশিরভাগ দোকানি ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসা করে আসছেন।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম মাহফুজুর রহমান বলেন, যেসব দোকানে সনদ ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস বিক্রি হচ্ছে শীঘ্রই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ঐসব দোকানের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।