কক্সবাজার শিল্প ও বাণিজ্য মেলা শুরু বৃহস্পতিবার

শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার

কক্সবাজার শিল্প ও বাণিজ্য মেলা ১০ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে।প্রতিবারের মতো এবারও মেলা প্রাঙ্গণজুড়ে থাকবে বিভিন্ন বিনোদনের ব্যবস্থা। এবার মেলার প্রধান ফটক নির্মিত হয়েছে রাজকীয় ফটকের আদলে। কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাষ্ট্রি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়ন যৌথভাবে আয়োজন করেছে এ মেলা।

গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে মেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে এবার ১০ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে শিল্প ও বাণিজ্যমেলা। কক্সবাজার সাগরপাড়ে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাশে আয়োজিত এই মেলার উদ্বোধন করবেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। এতে প্রধান অথিতি থাকবেন- কক্সবাজার-রামু আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল।

বিশেষ অথিতি থাকবেন- কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তফা, পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেল সহ অন্যান্যরা। এতে সভাপতিত্ব করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাণিজ্য মেলা আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান মাসেদুল হক রাশেদ।

শিল্প ও বাণিজ্য মেলা আয়োজক কমিটির কো-চেয়ারম্যান সাহেদ আলী সাহেদ বলেন, মাসব্যাসী এ মেলা চলবে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের মেলাকে সফল করতে এরইমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মেলায় থাকবে ফায়ার ইউনিটি ও মেডিকেল টিম। ধূলো কমাতে পুরো মাঠে ইট বিছানো হয়েছে। মেলার পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শিল্প ও বাণিজ্য মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব বলেন, কক্সবাজার শিল্প ও বাণিজ্যমেলায় সার্বক্ষণিক নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পোশাকধারী পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। নিরাপত্তার স্বার্থে মেলাস্থলে সব ধরনের হকার ও ভিক্ষুক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফুডকোটে অনিয়ম রুখতে বাধ্যতামূলক রাখতে হবে মূল্যতালিকা। এছাড়া, ইভটিজিংরোধে মেলা প্রাঙ্গণে পুলিশের বিশেষ টিম দায়িত্ব পালন করবে।

নিরাপত্তা বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. খায়রুজ্জামান বলেন, ইতোমধ্যে বাণিজ্য মেলাকে ঘিরে নিচ্ছিন্দ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে অনিয়ম রুখতে মেলায় ফুডকোর্টে মূল্যতালিকা প্রদর্শন করা না হলে মেলা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় সেই স্টল বন্ধ করে দেবে পুলিশ। পুরো মেলা প্রাঙ্গন থাকবে সিসি ক্যামরার আওতায়। এছাড়া মেলায় ইভটিজিং সহ যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে থাকবে পুলিশের বিশেষ টিম। মেলার ভেতর সুবিধাজনক স্থানে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। মেলার ভেতর থাকবে প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা। মেলার বাইরে মোটরসাইকেল ও যানবাহন রাখার পাকিং এর ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান তিনি।

মেলা আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, এবারের মেলায় স্টল থাকছে ৬০/৭০টি। প্যাভিলিয়ন রয়েছে জ্যাকেট ও ব্লাজারের ২টি, খাবারের প্যাভিলিয়ন রয়েছে ২টি, আর এসবের কাজ অনেকাংশে এগিয়ে গেছে।

সমাপ্ত হয়েছে ১০০টি সাধারণ স্টল ও ২টি ফুড স্টলের কাজ। মেলায় অংশ নেয়া প্যাভিলিয়ন ও সাধারণ স্টলে রেডিমেড গার্মেন্টস, হোমটেক্স, ফেব্রিকস পণ্য, হস্তশিল্পজাত, পাটজাত, গৃহস্থালি ও উপহারসামগ্রী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, তৈজসপত্র, সিরামিক, প্লাস্টিক, পলিমার পণ্য, কসমেটিকস হারবাল ও প্রসাধনী সামগ্রী, খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, ইমিটেশন ও জুয়েলারি ও ফার্নিচার এসব স্টল থাকবে।

এছাড়া শিশুদেও বিনোদনের জন্য মেট্রো রেল, নৌকা দোলনা সহ বিভিন্ন ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দেশি প্রতিষ্ঠানের স্টল ও প্যাভিলিয়ন মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৫০ প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে বাণিজ্য মেলায়। নাগরদোলা, স্পীড বোট, রেল, পানিতে বল ভাসানো, দোলনা, নৌকা বাইচ ও যাদু প্রর্দশনী।

এছাড়া বাণিজ্যমেলায় দেশী ছাড়াও বেশি বেশি বিদেশি ক্রেতা ও পর্যটক অংশ নেবেন এটাই প্রত্যাশা আয়োজকদের। এরজন্য যা কিছু করণীয় বাণিজ্য মেলা আয়োজক কমিটি সব করছে।