ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন পার্ক রেষ্টুরেন্টে শিক্ষার্থীদের আড্ডা

শাহীন মাহমুদ রাসেল :

রামু-কক্সবাজারের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে রেস্টুরেন্ট, রেষ্ট হাউস কিংবা ফাঁকা জায়গায় অশালীন ও বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে। স্কুল-কলেজের ক্লাশ চলাকালীন সময়ে এসব শিক্ষার্থীদের বেপরোয়া ভাবে চলাফেরা যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে। রেষ্ট হাউস ছাড়াও রামু চৌমুহনীর বনফুলের দু’তলায় জোড়ায় জোড়ায় স্কুল শিক্ষার্থীরা দৃষ্টিকটু ভাবে বসে সময় কাটাচ্ছে।

বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা নানা অজুহাত দেখিয়ে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন স্থান ঘুরে বেড়ায়। শুধু তাই নয়, প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থী স্কুল ও কলেজ পোশাক পড়ে একসাথে বসে মাদক (সিগারেট) সেবন করছে। তারা প্রত্যেকেই মাদক সেবন ও ধুমপানে আসক্ত হয়ে পড়েছে।

আর এই চিত্র খুব সহজে দেখা মিলে রামু চৌমুহনীর বনফুলের দু’তলায়, পিজা, সুইজ ঝাউতলা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, রেষ্ট হাউস এলাকাসহ বিভিন্ন বিনোদনের স্থানে। দেখার যেন কেউই নেই। মা-বাবা সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে নিশ্চিন্ত থাকে। ভাবেন সন্তান মানুষ হচ্ছে। কিন্তু মা-বাবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে তারা সময় কাটায় বিভিন্ন রেষ্টুরেন্ট কিংবা পার্কে। যেন সেই স্কুল-কলেজ ফাঁকির উৎকৃষ্ট স্থানে পরিণত হয়েছে।

ঘড়ির কাটায় সময়টা তখন সকাল ১১টা ১৫ মিনিট। স্কুল বা কলেজের ক্লাস চলাকালীন এই সময়টায় পিজা সুইজ ঝাউতলা, চৌমুহনীর বনফুলের দু’তলায় ও রেষ্ট হাউসে গিয়ে দেখা গেল কোথাও জোড়ায় জোড়ায় আবার কোথাও দল বেঁধে আড্ডা দিচ্ছে স্কুল-কলেজে পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা। গায়ে স্কুলের ইউনির্ফম আর সাথে বইয়ের ব্যাগ। কক্সবাজার শহর ও রামুর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বেপরোয়াভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

কয়েক জন স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, তারা পৌর প্রিপ্যার‌্যাটরি স্কুল, রামু গার্লস স্কুল, রামু কলেজ, খিজারী স্কুল, রহমানিয়া মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন সনামধন্য স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। বনফুলের দু’তলায় অড্ডারত এক শিক্ষার্থীর কাছে জানতে চাইলে সে বলে, এটা ভাল না, তবে ক্লাশের পড়া কমপ্লিট করতে পারিনি বিধায় বার্গার খেতে এসেছি। অন্য এক শিক্ষার্থী বলে, মা-বাবা জানলে কষ্ট পাবে, তবে দুতলায় নিরব-নির্জন পরিবেশে বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারতে ভাল লাগে। শিক্ষার্থীরা নিত্যদিন স্কুল-কলেজ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখছে না। ঝুঁকে পড়ছে নানান অসামাজিক ও অশ্লালীন কর্মকান্ডে।

এই বিষয়ে অভিভাবকরা বলেন, মা-বাবাদেরকে আরো সচেতন হতে হবে। শিক্ষক-অভিভাবকদের সমন্বয়ে ছেলে-মেয়েদেরকে সচেতন করতে হবে। এ বিষয়ে কথা হয় একাধিক শিক্ষকের সাথে, তরা জানান, স্কুল চলাকালে কোন ছাত্র বা ছাত্রী রেষ্টুরেন্ট কিংবা পার্কে কোথাও ঘোরাফেরা করা উচিত না।

এ বিষয়ে সচেতন মহল মনে করেন, স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের প্রতি খোঁজ-খবর নেয়া জরুরি। তাদের সন্তানরা ঠিকমতো স্কুল-কলেজে যাচ্ছে কিনা বা সবগুলো ক্লাশে অংশ নিচ্ছে কিনা, তা প্রতিদিন খোঁজ নেয়া খুবই জরুরি। এখনই এসব পথ থেকে ফিরিয়ে না আনা গেলে তাদের আর পড়াশুনায় মনোযোগী করা যাবে না।

প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রশাসনের তদারকিতে যে করেই হোক বিদ্যালয়ের ক্লাশ চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থী ছেলে মেয়েরা যেন রেষ্টুরেন্ট অথবা পার্কে গিয়ে বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করে লেখাপড়া ধ্বংস করে বাজে পথে না যেতে পারে সে বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া। তাছাড়া এ বিষয়ে শিক্ষকদের পাশাপাশি অবশ্যই অবিভাবকদের সচেতন হতে হবে।

এব্যাপারে সদর থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, বর্তমান স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রেষনা দেওয়া হচ্ছে ক্লাস ফাঁকি না দেওয়ার জন্য। আমি আমার অফিসারদের বলে দিবো কোন শিক্ষার্থী ক্লাস চলাকালীন সময় আড্ডা দিতে দেখলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।