রোহিঙ্গারা স্থায়ী বসবাসের রঙিন স্বপ্ন দেখছে

বিশেষ প্রতিবেদক :

বাংলাদেশ মিয়ানমার কুটনৈতিক পর্যায়ে একাধিক আনুষ্ঠানিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত বছরে ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন হয়নি। দু-দেশের সিমান্ত এলাকায় এ নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতির পরও কোন রোহিঙ্গা পরিবারকে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয় নি। যে কারনে রোহিঙ্গারা মনে করছে তাদেরকে স্বদেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে না। তাই রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে নেতৃত্বের আধিপাত্য বিস্তার নিয়ে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। তারা পুলিশ ও ক্যাম্প প্রশাসনের উপর হামলা করতেও দ্বিধাবোধ করছে না।

রোহিঙ্গাদের উচ্ছৃঙ্খল কর্মকান্ড, অনৈতিক জীবন যাপন প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ভাবেয়ে তুলেছে। স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা বলছেন রোহিঙ্গারা এখানে স্থায়ী বসবাসের রঙিন স্বপ্ন দেখছে।

১৯৯১ সালে আশ্রিত কুতুপালং রেজিঃ ক্যাম্পের আশ্রিত রোহিঙ্গা শরনার্থীদের চেয়ারম্যান রশিদ আহম্মদ তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন মিয়ানমার সরকারের লেলিয়ে দেয়া কিছু রোহিঙ্গা দালালচক্র নির্যাতিত রোহিঙ্গা হিসেবে বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। এসব রোহিঙ্গারা অভিনব কৌশলে বিভিন্ন ইস্যু সৃষ্টি করে রোহিঙ্গা নেতাদের ক্ষেপিয়ে তুলে যার ফলে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ক্যাম্পে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটছে।

তিনি বলেন তিনজন জার্মানী সাংবাদিককে অহেতুক মারধর করে রোহিঙ্গাদের চরিত্র সম্পর্কে সমগ্র বিশ্বকে মর্মাহত করেছে। ঐ রোহিঙ্গা নেতা বলেন এভাবে যদি হত্যাকান্ড, মারামারি ও নৈরাজ্যকর পরিবেশ চলতেই থাকে তাহলে মিয়ানমার সরকার বিশ্বকে বোঝাতে পারবে রোঙ্গিরা কতটুকু আত্বঘাতি।

তাদেরকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে আসা, না আসা নিয়ে তারা বিশ্বে জনমত সৃষ্টি করার অপচেষ্টা অবহ্যত রেখেছে। ঐ শরনার্থী চেয়ারম্যান জানান রোহিঙ্গাদের পরিবেশ অনুকুলে রাখতে হলে মিয়ানমারের লেলিয়ে দেয়া দালাল চক্রদের হাতে নাতে আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করতে হবে।

তাজনিমার খোলা ক্যাম্পের মাঝি মোহাম্মদ আলী জানান তিনি কিছু কিছু এনজিও সংস্থা রোহিঙ্গাদের বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে ক্যাম্পে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছে। যা নিয়ে সাধারন রোহিঙ্গাদের মাঝে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা। তিনি বলেন এসব সন্ত্রাসী রোহিঙ্গাদের কারনে সাধারন রোহিঙ্গাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন মারাত্বকভাবে ব্যহত হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার সকাল ১০ ঘটিকায় উখিয়া উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এনজিও সম্মন্বয় সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিকারুজ্জামান বলেন, ক্যাম্পে যে সমস্ত এনজিও সংস্থায় বিদেশী লোকজন কাজ করছে তাদের প্রতি নজর রাখতে হবে এবং তারা কি করছে, না করছে, কোন এনজিওতে কোন পদে চাকুরী করছে তার তথ্য উপাত্ত্ব উপস্থাপন করার নির্দেশ দেন। তিনি এও বলেন ক্যাম্পে একটি মহল অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য সবসময় তৈরি রয়েছে। তাদের দিকেও নজর রাখতে হবে দেখা মাত্র যাতে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা সম্ভব হয়।

বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নব নির্বাচিত উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইদানিং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘঠিত নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সম্পর্কে ব্যাখ্যা করে সাংবাদিকদের জানান রোহিঙ্গারা যে মনোভাব, দাপট ও উচ্ছৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। যারা তাদের আশ্রয় দিয়েছে তাদের উপর হামলা করে তারা মনে করছে এখানে তারা স্থায়ী বসবাসের রঙিন স্বপ্ন দেখছে। তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রী ও দেশ নেত্রী যাদের আশ্রয় দিয়েছেন তাদের স্ব-সম্মানে, স্বদেশে পৌছে দেওয়ার জন্য প্রত্যাবাসন বিলম্বিত করছে।