রোহিঙ্গার বোঝা বাংলাদেশের জন্য একটা বিশাল চাপ : কক্সবাজারে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

শহিদুল ইসলাম, উখিয়া :

কক্সবাজারের উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলেছেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো ও তাঁর সাথে আসা জাপানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে শরনার্থী ক্যাম্প পরিদর্শনকালে শরনার্থীদের সাথে দোভাষীর মাধ্যমে তাঁরা কথা বলেন এবং ক্যাম্পর দায়িত্বে নিয়োজিত স্থানীয় প্রশাসনের সাথে মতবিনিময় করেন।

এসময় জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের সম্মানের সাথে দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্বদেশে প্রত্যাবাসনের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, রোহিঙ্গা শরনার্থীর বোঝা বাংলাদেশের জন্য একটা বিশাল চাপ। এ চাপ সামলাতে বাংলাদেশের প্রতি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব প্রদর্শনের আহবান জানান।

পরিদর্শনকালে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো’র সাথে ছিলেন ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল ও শরনার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম এনডিসি (অতিরিক্ত সচিব), ইউএনএইচসিআর-এর কক্সবাজার এর প্রধান মিঃ মারিন, উর্ধ্বতন কর্মকতা ইফতেখার উদ্দিন বায়েজীদ, বাংলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের শরনার্থী বিষয়ক ডেস্কের পরিচালক ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম সহ উর্ধ্বতন কর্মকতারা সাথে ছিলেন।

এর আগে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারা কোনো সেদেশের উর্ধ্বতন এক প্রতিনিধিদল সহ মঙ্গলবার ৩০ জুলাই সকাল সাড়ে ৯ টায় জাপানে একটি বিশেষ ফ্লাইটে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছালে আরআরআর সি আবুল কালাম, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন তাদেরকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।

জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারা কোনো ও উর্ধ্বতন প্রতিনিধিদল জাপানের বিশেষ ফ্লাইটে মঙ্গলবার ৩০ জুলাই কক্সবাজার ত্যাগ করবেন বলে একই সুত্র -নিশ্চিত করেছেন।

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোঃ আবুল কালাম জানান, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো সকালে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প-৪, ৪ এক্সটেনশন, ক্যাম্প- ৫ ও ১২ নং ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।

এ সময় জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে মিয়ানমারের নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা নরনারী তাদের নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরেন। কুতুপালং আনরেজিঃ ক্যাম্পের সভাপতি নুর মোহাম্মদ বলেন, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে রোহিঙ্গারা জানান, ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্টের পর থেকে বাংলাদেশে ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা উখিয়া-টেকনাফের ৩০টি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।

মিয়ানমারের সেনা, বিজিপি, উগ্রপন্থী রাখাইন যুবকরা রোহিঙ্গা নরনারীর উপর চরম অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন, ধর্ষন, খুন, শিশুদেরকে অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ, যুবকদের গুম এবং বাড়ি ঘরে আগুন নিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। এসব বর্ণনা শুনে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবেক আফ্লুত হয়ে পড়েন।