কক্সবাজারে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, স্বামীকে গণপিটুনি

চকরিয়া প্রতিনিধি •

কক্সবাজারের পেকুয়ায় স্বামীর এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে ছালেহা বেগম (৩৩) নামের এক নারী নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এর আগে গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার দিকে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মধ্যম বাইম্যাখালী এলাকায় ছালেহাকে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থল থেকে স্বামীকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন।

নিহত ছালেহা বেগম কুতুবদিয়ার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের পরান সিকদারপাড়ার মোহাম্মদ রশিদের মেয়ে। ছালেহা কুতুবদিয়া উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। তাঁর স্বামী মো. রজিউল্লাহ (৪৩) কুতুবদিয়া উপজেলার দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের শাহরুম সিকদারপাড়ার বাসিন্দা। রজিউল্লাহ পেকুয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (সম্প্রসারণ) হিসেবে কর্মরত। চাকরির কারণে তিনি পেকুয়ায় থাকতেন।

পুলিশ ও স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছালেহা বেগম তাঁর ছোট বোন তানজিনা আফরিনকে (২৫) নিয়ে চকরিয়া থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে মগনামা ঘাটে যাচ্ছিলেন। মগনামা ঘাট থেকে নৌপথে কুতুবদিয়া ফেরার কথা। অটোরিকশাটি গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার দিকে পেকুয়া সদরের বাইম্যাখালী এলাকায় পৌঁছালে অটোরিকশার গতি রোধ করেন রজিউল্লাহ। এ সময় অটোরিকশা থেকে ছালেহা বেগমকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেন তিনি। ছালেহার ছোট বোন তানজিনা বাধা দিলে তাঁকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে পথচারী ও স্থানীয় লোকজন রজিউল্লাহকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে বেঁধে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ রজিউল্লাহকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ছালেহা ও তানজিনাকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন চৌধুরী বলেন, ছালেহা বেগমের পেটের বাঁ পাশে গুরুতর ছুরির আঘাত ছিল। তানজিনার বাঁ হাতেও ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে রাত সোয়া একটায় ছালেহা বেগম মারা যান।

রজিউল্লাহ ও ছালেহা দম্পতির দুই ছেলে। বড় ছেলে চট্টগ্রাম মুসলিম হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণি ও ছোট ছেলে পেকুয়া জিএমসি ইনস্টিটিউশনে ষষ্ট শ্রেণিতে পড়ছে।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওমর হায়দার বলেন, স্ত্রীকে খুন ও তাঁর ছোট বোনকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় রজিউল্লাহকে আটক করা হয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।